বিধান সরকার: ভোট বড় বালাই। কষ্টের কথা বলতে বলতে হাউ হাউ করে কাঁদতে থাকা জুটমিল শ্রমিক পরিবারের মহিলাকে বুকে জরিয়ে সান্ত্বনা দিয়েও লকেটকে শুনতে হল করোনার সময় কোথায় ছিলেন? ভদ্রেশ্বরের শ্যামনগর জুটমিলে অচলাবস্থা চলছে গত কয়েকদিন ধরে। চুক্তি না মেনে শ্রমিকদের উপর কাজের বোঝা চাপানো, এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে বদলি করার মত অভিযোগ তুলে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেয়।
গত শনিবার একপ্রস্থ ত্রিপাক্ষিক আলোচনার পর মিলে কাজে হয়। দু'দিন পর আজ আবার মিলে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে মিল গেটে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসে পরে। শুরু হয় ধরনা। খবর পেয়ে এদিন দুপুরে হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় জুটমিলের সামনে পৌঁছন। সেখানে শ্রমিক পরিবারেরা তাদের কষ্টের কথা বলতে থাকেন। এক প্রৌঢ়া কান্নায় ভেঙে পরেন। লকেট তাকে বুকে টেনে সান্ত্বনা দেন।পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক মহিলা লকেটকে প্রশ্ন করেন করোনার সময় কোথায় ছিলেন? আমরা যখন না খেয়ে মরছিলাম আসেননি তো! লকেট তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে তিনি এসেছিলেন। তর্ক শুরু হতেই ভারত মাতা কি জয় ধ্বনি তোলে বিজেপিকর্মীরা। লকেট বলেন, শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। শ্রমিকরা রাস্তায় বসে রয়েছে। না জানিয়ে চুক্তি করা হয়েছে। সেই বরখাস্ত করাব।ধর্নারত শ্রমিক পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন সিটু হুগলি জেলা নেতৃত্ব। সিটু সম্পাদক তীর্থঙ্কর রায় বলেন ,শ্রমিকদের শোষণ করা হচ্ছে। দেওয়ালে পিঠ না ঠেকলে কেউ রাস্তায় বসে না। এখানকার জুটমিল মালিকরা শ্রমিকদের উপর যেভাবে জুলুমবাজি করছে তার বিরুদ্ধে সকাল থেকে রাস্তায় বসেছে, এই লড়াইকে সিটু সমর্থন করে। মিল কর্তৃপক্ষ ম্যান-মেশিন রেসিও মেনে কাজ করছে না। শ্রমিকদের বদলি করা বা বসিয়ে দেওয়া বেআইনি।শ্রমিকরা বলেন, করোনার সময় বা মিলে সমস্যা হলে কোনো নেতাকে দেখা যায়নি। এখন ভোট এসেছে তাই সবাই আসছে। শ্রমিকদের সমস্যা মিটছে না। ভদ্রেশ্বর পুরসভার চেয়ারম্যান প্রলয় চক্রবর্তী বলেন, শ্রমিকদের বলা হয়েছিল সোমবার পর্যন্ত মিলটা যেমন চলছে চলুক মঙ্গলবার আলোচনা করা হবে। আমরা সবাই চাইছি মিলটা চলুক। ম্যানেজমেন্টকে জানিয়েছিলাম মিলটা চলুক। কাউকে মিলের বাইরে রাখা যাবে না বলেছিলাম। মিলটা চলুক শ্রমিকদের দাবি নিয়ে আলোচনা হোক।