• গার্ডেনরিচে বহুতল বিপর্যয়ে কলকাতা পুরসভার ৩ ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ
    প্রতিদিন | ১৯ মার্চ ২০২৪
  • অভিরূপ দাস: খোদ পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বিধানসভা কেন্দ্রেই মৃত্যুফাঁদ। কলকাতা পুরসভার ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে গার্ডেনরিচের ফতেপুর ব্যানার্জী লেনের বহুতল বিপর্যয়ে মৃত্যুমিছিল। কলকাতা পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারদের উদাসীনতায় তৈরি হয়েছিল বিপজ্জনক বহুতল, দাবি মেয়র ফিরহাদ হাকিমের। সে কারণেই এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ করা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে হবে তাঁদের। সূত্রের খবর, উত্তর সন্তোষজনক না হলে, তাঁদের বিরুদ্ধে নেওয়া হতে পারে কড়া পদক্ষেপ।  

    বহুতল বিপর্যয়ের ঘটনায় তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির দাবি, দুর্ঘটনার পরই যেন ঘুম ভাঙল কলকাতা পুরসভার। ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের ১৫ নম্বর বোরোয় বেআইনি বাড়ির সংখ্যা কত, তা জানাল পুর কর্তৃপক্ষ। কলকাতা পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, এই বোরোয় কমপক্ষে ২০০টি বেআইনি বাড়ি রয়েছে। শেষ তিন বছরে ১৫২টি ভাঙা হয়। পুরসভা সূত্রে খবর, দেড় কাঠারও কম জমির উপর বহুতলটি তৈরি হচ্ছিল। শোনা যাচ্ছে, ৫০০ স্ক্যোয়ার ফুটের ১৬টি নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাট ইতিমধ্যে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। ফ্ল্যাটগুলি মালিকদের হস্তান্তর করার জন্য তাড়াহুড়ো করছিলেন প্রোমোটর।

    খরচ বাঁচাতে ব্যবহার করা হচ্ছিল নিম্নমানের সামগ্রী। ১৬ এমএমের পরিবর্তে ১০ এমএমের রড দিয়ে ঢালাই করা হয়। বহুতলের মাথায় ৫ হাজার ইট বোঝাই করে রাখা ছিল। যার ভার বইতে না পেরেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বহুতলটি। ৩-৪ ফুট রাস্তায় বহুতল তৈরির কীভাবে অনুমতি পেলেন প্রোমোটর, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সূত্রের খবর, দুতলার অনুমতি ছিল। তা সত্ত্বেও ছ?তলা বহুতল গড়ে উঠেছিল। তবে সেক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের মুখে কলকাতা পুরসভার ভূমিকা।

    অবৈধ বহুতল নির্মাণ নিয়ে এর আগে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তা সত্ত্বেও তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রে বহুতল বিপর্যয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে কলকাতা পুরসভা। এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবাদিত্য পাল, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার দেবব্রত ঘোষ এবং সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার শুভম ভট্টাচার্যকে শোকজ করা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দিতে হবে জবাব। উত্তর সন্তোষজনক না হলে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও খবর। কলকাতা পুরসভার নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী, এবার থেকে সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়াররা অফিসে আসার পরই ফ্ল্যাট পরিদর্শনে বেরবেন। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে বেআইনি বাড়ির দিকে খেয়াল রাখবেন। কোনও অনিয়ম হলে প্রাথমিক অবস্থাতেই ভেঙে দেওয়া হবে অবৈধ নির্মাণ। 
  • Link to this news (প্রতিদিন)