• Garden Reach Building Collapse: পাঁচ সেকেন্ডেই মাটিতে মিশল পাঁচ-তলা বাড়ি!
    এই সময় | ১৯ মার্চ ২০২৪
  • এই সময়: পাঁচতলা উঁচু নির্মীয়মাণ বাড়িটা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল চোখের সামনে। অত উঁচু বাড়িটার মাটিতে মিশে যেতে পাঁচ সেকেন্ডও লাগেনি। রাত বারোটা তখন। তার ১৪ ঘণ্টা পরে সোমবার দুপুর দুটো নাগাদ স্থানীয় বাসিন্দা শেখ রাজা যখন বিবরণ দিচ্ছিলেন, তখনও তাঁর চোখেমুখে আতঙ্ক। তিনি জানান, ঘটনার মিনিট বিশেক আগেই ওই বিল্ডিংয়ের প্রোমোটার লেবারদের খাওয়ার জন্যে বিরিয়ানির প্যাকেট দিয়ে গিয়েছিলেন।গার্ডেনরিচের অ্যাসবেস্টর মোড় দিয়ে পাহাড়পুর রোড ধরে কয়েক পা এগোলেই ব্যানার্জি পাড়া। এখান দিয়েই হরিবাবুপল্লি লেন নামে লম্বা একটি গলি গিয়ে মিশেছে ইরফানিয়া মসজিদের ইদগাহে। মহল্লার নাম আজহুড় মোল্লাবাগান। শেখ রাজা বলেন, ‘রমজান মাস চলছে। ইদগাহে সারা রাতই লোকের আসা-যাওয়া চলে। বন্ধুদের সঙ্গে ঈদগাহর সামনে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলাম। আচমকাই বিকট আওয়াজ শুনি। তাকিয়ে দেখি পাঁচতলা বাড়িটা গুঁড়োগুঁড়ো হয়ে পড়ল টালির ঘরটার উপর।’

    আওয়াজ শুনেই বেরিয়ে আসেন মহল্লার অন্য বাসিন্দারা। তাঁরাই পুলিশে খবর দেন। উদ্ধার-কাজে হাত লাগান। তার পরে দমকল, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, পুলিশ আসে। রাজা জানান, গলির রাস্তা এতটাই সরু যে ধ্বংসস্তূপ সরাতে পে-লোডার বা লরি ঢোকার সুযোগ ছিল না। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে চাপা পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে সময় লাগে অনেকটাই।

    স্থানীয়রা জানান, নির্মীয়মাণ বাড়িটার পাঁচতলা পর্যন্ত ঢালাই এবং সিঁড়ি গাঁথা হয়ে গিয়েছিল। তিনতলার অর্ধেক অংশে ইট গাঁথার কাজ হয় শনিবার। একতলা ও দোতলায় ইট গাঁথা আগেই শেষ হয়েছিল। মাস দেড়েক ধরে নির্মাণকাজ চলছিল।

    বাড়ির বারান্দায় দাঁড়ালেই নির্মীয়মাণ পাঁচতলা বাড়িটা দেখতে পেতেন সনাতন বিশ্বাস। রবিবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ রাতের খাওয়া সেরে বারান্দায় পায়চারি করছিলেন তিনি। সনাতনের কথায়, ‘পৌনে বারোটা নগাদ ঘরের লাইট নিভিয়ে ঘুমোতে যাই। বারোটা নাগাদ বিকট আওয়াজ শুনি। ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি, লম্বা বাড়িটা নেই। বারান্দা থেকে আকাশ দেখা যাচ্ছে। দৌড়ে যাই ঘটনাস্থলে।’

    একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, এ তল্লাটে বাড়ি তৈরি করার ক্ষেত্রে বেআইনিটাই আইন। তাঁদের অভিযোগ, এখানে একটা পাঁচতলা বাড়ি তৈরি হতে সময় লাগে মাত্রই তিন থেকে পাঁচ মাস। এই বেআইনি নির্মাণের প্রতিবাদ করেন কিনা জানতে চাইলে, হাতজোড় করে বাসিন্দাদের একটাই বক্তব্য, ‘মাফ করবেন। এ সব এখানে উচ্চারণ করাও পাপ।’
  • Link to this news (এই সময়)