Sikkim Tour : গরমের ছুটিতে সিকিম ট্যুর? মার্চ-এপ্রিলে ছাঙ্গু-নাথু লার প্ল্যানের দফারফা! টিকিট বুকিংয়ের আগে জানুন কারণ
এই সময় | ১৯ মার্চ ২০২৪
মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ। সামনেই গরমের ছুটি। এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে টুক করে দিঘা-পুরী-দার্জিলিং কিংবা সিকিমে বেরিয়ে আসার প্ল্যানিং শুরু হয়ে যায় ঘরে ঘরে। আগে থেকে ট্রেন কিংবা বিমানের টিকিট কাটার হিড়িক পড়ে যায়। নিমেষের মধ্যে বুকিং হয়ে যায় হোটেলগুলি। তবে এবার ভ্রমণপিপাসুদের কপাল খারাপ। সিকিম বেড়ানোর প্ল্যান করে থাকলে প্রথমেই ধাক্কা খেতে হবে।অফিসে ইয়ার এন্ডিংয়ের চাপ সামলে, ছেলেমেয়ের পরীক্ষা উতরে যেতেই টুক করে সিকিম ঘুরে আসার পরিকল্পনা ছকে ফেলেছিলেন? বরফে ঢাকা ছাঙ্গু লেকে চুটিয়ে আনন্দ উপভোগ করার স্বপ্ন এবার অধরাই রয়ে যাবে পর্যটকদের। আপনার সমস্ত পরিকল্পায় জল ঢেলে দিয়েছে লোকসভা নির্বাচন। আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে ৪ জুন পর্যন্ত সাত দফায় ভোট হবে দেশে। ফলে চাইলেও ভোটের মুখে সিকিম যেতে পারবেন না পর্যটকরা।
কেন সিকিম যাওয়ার প্ল্যান ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা?উল্লেখ্য, সিকিমে একটিই লোকসভা আসন। সেখানে ভোট রয়েছে প্রথম দফা অর্থাৎ ১৯ এপ্রিল। তার দু'তিনদিন আগে থেকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার জন্য কিছুটা ব্যাহত হয় পর্যটন। আবার লোকসভার পাশাপাশি ৩২টি বিধানসভার ভোটগ্রহণও হবে সেদিনই। অগত্যা ঝামেলা এড়াতে বেড়ানোর পরিকল্পনা বাতিলই করছেন অধিকাংশ। আর এতে মনমরা কেবল ভ্রমণপিপাসুরা নয়, আর্থিক ধাক্কার মুখে পড়বেন পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরাও।
বাঙালি তার প্রিয় দিপুদা অর্থাৎ দিঘা, পুরী, দার্জিলিংয়ের পাশাপাশি এখন সিকিমের নানা অফবিট ডেস্টিনেশনেও পাড়ি জমাচ্ছেন। গুরুদংমার, নর্থ সিকিম, নাথু লা, ছাঙ্গু লেক সারাবছরই ভ্রমণপিপাসুদের ফেভারিট ট্যুরিজম স্পটের তালিকায় প্রথম দিকেই থাকে। আর গরমের ছুটি মানেই একবার টুক করে সিকিম ঘুরে আসা মাস্ট। কিন্তু, প্রথম দফার ভোটের আগে দেশজুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রচার পর্ব। লোকসভা এবং বিধানসভা ভোট একসঙ্গে হওয়ায় সিকিমে প্রচারে ঝড় উঠতে শুরু করেছে এখনই। আগামী কয়েকদিনে রাজনৈতিক পারদ আরও বাড়বে এই রাজ্যে। ভোটের কাজের জন্য গাড়ির সংখ্যা কমতে শুরু করবে ভোট আসার এক সপ্তাহ আগে থেকেই। গাড়ি ম্যানেজ করতেও পারলেও গন্ডগোলে ফেঁসে যাওয়া আশঙ্কায় পর্যটকরা আর সেভাবে সিকিমমুখো হতে চাইবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে। ফলে সে পর্যটন ব্যবসা যে মার খেতে চলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
কী বলছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা?হসপিট্যালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের (পশ্চিমবঙ্গ) সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্ন্যাল বলেন, 'একটা দিক থেকে বাঁচোয়া ১৯ এপ্রিলই সিকিমের ভোটপর্ব মিটে যাচ্ছে। এটা একটা প্লাস পয়েন্ট। তবে বাকি সমস্ত জায়গাতেই ভোট রয়েছে। গোটা মে মাস জুড়ে এবং জুন মাস পর্যন্ত ভোট চলবে। ফলে বাইরে থেকে সিকিমে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভোটের জন্য পর্যটকদের হার কমবে। যদিও খুব একটা প্রভাব পড়বে না বলেই আমার মত। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাব যাতে, পর্যটকদের যাতায়াতের জন্য পর্যাপ্ত গাড়ি রেখে তবে ভোটের কাজে ব্যবহার করা হয়। কারণ ভোট যেমন দেশে গুরুত্বপূর্ণ তেমন পর্যটন ব্যবসা থেকেও মানুষের রুজিরুটি চলে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে যদি নির্বাচন কমিশন একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করে তাহলে দু'দিনটিই ব্যালান্সড হবে।'
ক্ষোভের সুরে পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করার সময়ে সব দিক মাথায় রেখে এগোলে সবারই মঙ্গল হত। প্রথম দফাতেই সিকিমে ভোট সম্পন্ন হয়ে গেলেও উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম, দেশের সর্বত্রই ভোটের উত্তাপ জারি থাকবে। ফলে জুনের ১০ তারিখের আগে পর্যটন ব্যবসার হাল ফিরবে না বলেই মনে করছেন হোটেল ও গাড়ি ব্যবসায়ীরা। এরপরেই দেশে বর্ষাকাল শুরু হয়ে যাবে। ফলে সে সময় পাহাড়ে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। নতুন করে পর্যটকদের ঢল নামার সম্ভাবনা কম।