DY Chandrachud : মেজাজ হারালেন চন্দ্রচূড়, সিনিয়র লইয়ারদের তুমুল ধমক
এই সময় | ১৯ মার্চ ২০২৪
নয়াদিল্লি: মাঝেমধ্যেই তাঁকে এজলাসে মেজাজ হারাতে দেখা যায়। তবে সোমবার তিনি আগের সব নজিরকেই ছাপিয়ে গেলেন। নির্বাচনী বন্ড মামলার শুনানিতে বারাবার বাধা সৃষ্টি করে নিজেদের কথা বলতে থাকায় প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় তীব্র ভর্ৎসনা করেন তিন জন সিনিয়র আইনজীবীকে। তাঁরা হলেন ম্যাথিউজ নেদুমপারা, আধিশ আগরওয়াল ও মুকুল রোহাতগি। প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল রোহাতগিতে একেবারে স্পষ্টভাষায় ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়ে দেন যে সিনিয়র আইনজীবী বলে তাঁকে বাড়তি কোনও সুবিধা দেওয়া হবে না। বাকিদের ক্ষেত্রে যে নিয়ম আছে, রোহতগিকেও সেই নিয়ম মেনে চলতে হবে।সোমবার বন্ড মামলার শুনানি শুরু হতেই নেদুমপারা প্রধান বিচারপতির বেঞ্চকে বলতে থাকেন, নির্বাচনী বন্ড পুরোপুরি নীতিগত বিষয়, সেখানে কোর্টের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। তাঁকে একাধিকবার চুপ করতে বলেন সিজেআই। কিন্তু ‘আমি এই দেশের নাগরিক’ মন্তব্য করে তিনি তাঁর ‘যুক্তি’ পেশ করতে থাকেন এবং তা যথেষ্ট উচ্চস্বরে। তারপরই কড়া ভাষায় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এক সেকেন্ড। আমার উপর চেঁচাবেন না।’ তা শুনে নেদুমপারা বলেন, ‘না, না, আমি খুবই সফ্ট স্পোকেন!’ তাতে মোটেই সন্তুষ্ট হননি সিজেআই।
বলেন, ‘এটা হাইড পার্ক কর্নার মিটিংয়ের জায়গা নয়। আপনি আদালতে আছেন। আপনি আবেদন জানাতে চাইলে সেই কাজটা করুন। প্রধান বিচারপতি হিসেবে আমার যেটা সিদ্ধান্ত, সেটা আপনাকে জানিয়ে দিয়েছি। আমরা আপনার কথা শুনব না। আপনি যদি আবেদন করতে চান, তা হলে ইমেলের মাধ্যমে করুন। এটাই আদালতের নিয়ম।’ সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আদিশ আগরওয়ালও এ দিন প্রধান বিচারপতির ধমক খেয়েছেন। তাঁর ক্ষেত্রে কী হয়েছিল?
শুনানির সময়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য তাঁকেও ভর্ৎসনা করেছে শীর্ষ আদালত। সিজেআই বলেন, ‘মিস্টার আগরওয়াল, আপনি একজন সিনিয়র আইনজীবীর পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিও। আপনি ইতিমধ্যে আপনার বক্তব্য আমাকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন। এগুলো সব প্রচার-নির্ভর এবং আমরা সেটা হতে দেব না। সেটা মাথায় রাখবেন। অন্যথায় আমায় আরও কিছু বলতে হবে, যা অস্বস্তিকর হতে পারে।’ তিনি বন্ড আইন পুনর্বিবেচনার জন্য চিঠি লিখেছেন সিজেআই-কে। তবে বারের এগজিকিইটিভ কমিটি এর থেকে নিজেকে দূরে রেখেছে।
নির্বাচনী বন্ড মামলায় অ্যাসোচেম এবং ফিকির আইনজীবী রোহাতগি যে আবেদন করেছিলেন, তা শুনতে চায়নি সুপ্রিম কোর্ট। তিনি দাবি করেন যে বন্ডের নম্বর প্রকাশ করার সময়সীমা কিছুটা পিছিয়ে দেওয়া হোক বা প্রকাশ করতে বারণ করা হোক, যাতে দুই বণিক সংস্থা নিজেদের পক্ষ তুলে ধরতে পারে। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘পুরো দুনিয়া জানত যে এই বিষয়টার শুনানি হচ্ছে। রায়দানের পরে আপনি আসছেন। এ ভাবে হয় না। আমি যদি সিনিয়র আইনজীবী মিস্টার রোহতগির জন্য নিয়ম শিথিল করি, তা হলে প্রধান বিচারপতি হিসেবে জুনিয়র আইনজীবীদের কাছে আমি মুখ দেখাতে পারব না। সকালেই যাঁদের মৌখিক সওয়ালের আর্জি খারিজ করে দিয়েছি। সকলের ক্ষেত্রে সমান ব্যবহার করতে হবে।’