বিধান সরকার: ভোটের আগে বন্ধ হয়ে গেল ভদ্রেশ্বর জুটমিল। কাজ হারালেন তিন হাজার শ্রমিক। গত কয়েকদিন ধরেই শ্রমিক অসন্তোষের জেরে কাজ বন্ধ ছিল ভদ্রেশ্বর শ্যামনগর জুটমিলে। চুক্তি না মেনে কাজের বোঝা চাপানো, বিভাগ বদলে অন্য জায়গায় কাজ করতে বাধ্য করার প্রতিবাদ করায় ১৫ জন শ্রমিককে বহিষ্কার করা হয়। তাঁদের কাজে ফেরানো ও কাজের বোঝা কমানোর দাবিতে সোমবার সকাল থেকে কাজ বন্ধ করে মিলের গেটে পরিবার নিয়ে ধর্নায় বসেন শ্রমিকদের একাংশ। ধর্মঘটী শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে ও তাঁদের দাবি নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেন ভদ্রেশ্বর জুটমিলের চেয়ারম্যান প্রলয় চক্রবর্তী। কিন্তু শ্রমিকরা কাজে যোগ দেননি। এরপরই সোমবার রাতে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস টাঙিয়ে দেয় মিল কর্তৃপক্ষ। সামনে দোল, হোলি, ঈদ, পয়লা বৈশাখের মত উৎসব রয়েছে। তারপর লোকসভা ভোটও রয়েছে। এই সময় মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন শ্রমিকরা। কর্মহীন ৩ হাজার শ্রমিক। মিল গেটে এখনও ধরনা চালিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিকরা।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার একপ্রস্থ ত্রিপাক্ষিক আলোচনার পর মিলে কাজে শুরু হয়েছিল। কিন্তু ২ দিন যেতে না যেতেই সোমবার থেকে আবার মিলে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেন। মিলের গেটে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ধরনায় বসে পড়েন। খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় জুটমিলের সামনে পৌঁছন। সেখানে শ্রমিক পরিবাররা তাঁদের কষ্টের কথা বলতে থাকেন। এক প্রৌঢ়া কান্নায় ভেঙে পড়েন। লকেট তাঁকে বুকে টেনে সান্ত্বনা দেন।যদিও ওই প্রৌঢ়াকে বুকে জড়িয়ে সান্ত্বনা দিয়েও লকেটকে শুনতে হয়, করোনার সময় কোথায় ছিলেন? পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক মহিলা লকেটকে প্রশ্ন করেন, করোনার সময় কোথায় ছিলেন? আমরা যখন না খেয়ে মরছিলাম, আসেননি তো! যদিও লকেট তাঁকে বলেন যে তিনি এসেছিলেন। কাল লকেট আরও বলেন যে, শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। শ্রমিকরা রাস্তায় বসে রয়েছে। না জানিয়ে চুক্তি করা হয়েছে। সেটা বরখাস্ত করাব। যদিও তারপর রাতেই মিলের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ।