সোশ্যাল সাইটে অ্যাকাউন্ট রাখা যাবে না। তা থাকলে ক্যারেক্টর সার্টিফিকেট পেতেও সমস্যা হবে। ফতোয়া বারাসতের নামী স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার। স্কুলের গ্রুপে মেসেজে ‘হুমকি’র সুর! অ্যাকাউন্ট থাকলে স্কুলের মেয়েদের স্কুলে রাখা যাবে না। এই গ্রুপের স্ক্রিন শট ফেসবুকে, হোয়াটস অ্যাপে রীতিমতো ভাইরাল। যা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। আবার অনেকেই এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন। বারাসত কালীকৃষ্ণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মৌসুমী সেনগুপ্তর এই মেসেজ বার্তা নিয়ে মঙ্গলবার দিনভর চর্চা চলেছে।
ঘটনাটি ঠিক কী?
স্কুলের একটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে শিক্ষিকা মেসেজ করেন, ‘এতদ্বারা জানানো হচ্ছে যে, Instagram, Facebook, Twitter এই সমস্ত জায়গায় যদি কোনও মেয়েকে দেখা যায়, তাদেরকে স্কুলে রাখা হবে না। তারা বাড়ি বসে শুধু ওই করুক, পড়াশোনা করার দরকার নেই। Twitter-কে এখন বোধহয় এক্স হ্যান্ডেল বলে। যাইহোক, কোনও সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ থাকবে না। কোনও মেয়ে না। মা, বাবারা নিজেদের ফোন আপনার মেয়ের ভালোর জন্য মেয়েকে দেবেন না। যাদের অ্যাকাউন্ট আছে ডিলিট করো। নইলে ক্যারেক্টর সার্টিফিকেট পেতে সমস্যা হতে পারে। মেয়েরা দেখাল, তোমাদের অনেকের অ্যাকাউন্ট আছে। ডিলিট করো। ডিলিট করেছ, স্ক্রিন শট পাঠাও।’ভালো চেয়েই করেছি।প্রধান শিক্ষিকা
পড়াশোনা থেকে শৃঙ্খলারক্ষার দিক থেকে এই স্কুল কিন্তু জেলায় বেশ নাম করা। এই মেসেজ বার্তা নিয়ে অনেকেই বলছেন, 'ছাত্রীদের ভালোর জন্য প্রধান শিক্ষিকা যা লেখার লিখেছেন। এই নিয়ে বিতর্কের কিছু থাকতে পারে না।' যদিও প্রাক্তনী থেকে অভিভাবকদের একটা অংশ বলছেন, '২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে এরকম ফতোয়া জারির কোনও অর্থ হয় না। এতে আদতে ক্ষতিই হতে পারে।'
কলকাতা হাইকোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা এই সময় ডিজিটাল-কে বলেন, ' আমার মনে হয়, মেসেজের অনেকটাই ঠিক আছে। কিন্তু শেষে একটা থ্রেট রয়েছে। প্রত্যেক মানুষের অধিকার আছে, বেআইনি নয়, এমন যেকোনও কার্যকলাপে যুক্ত থাকার। ক্যারেকটার সার্টিফিকেট দেওয়ায় বাধা হবে, এই বক্তব্য মৌলিক অধিকার খর্ব করার সামিল। প্রধান শিক্ষিকা বাকি প্রচেষ্টা হয়ত ভালো, সেটা আলোচনা সাপেক্ষ। কিন্তু থ্রেটের মাধ্যমে আইন লঙ্ঘন ইতিমধ্যেই তিনি করে ফেলেছেন।' উত্তর ২৪ পরগনা জেলার শিশু সুরক্ষা আধিকারিক হাবিব আজমকে- এ প্রসঙ্গে ফোন করা হলে এই সময় ডিজিটাল-কে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ আসলেই তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। শিশু সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে যা করার আমরা করব। সেটাই আমাদের প্রধান কাজ।’
কী বলছেন প্রধান শিক্ষিকা?তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কোনও শিক্ষক কি খারাপ চেয়ে কিছু করে? কেন করেছি, তা আমি আপনাকে (প্রতিবেদক) বলব না। তবে প্রয়োজনীয় সকলকে জানিয়েই স্কুলের মেয়েদের ভালো চেয়ে এই কাজ করা হয়েছে।'