এক মুঠো ভাতের খোঁজে?গার্ডেনরিচের ?অভিশপ্ত? বহুতলে কাজে এসে প্রাণ গেল হুগলির আবদুল্লার
প্রতিদিন | ২০ মার্চ ২০২৪
সুমন করাতি, হুগলি: রাজমিস্ত্রির কাজে টাকা বেশি। সেই আশায় গার্ডেনরিচে কাজে গিয়েছিলেন হুগলির শেখ আবদুল্লা। ফেরা হল না বাড়ি। গার্ডেনরিচে (Garden Reach) কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে মৃত্যু যুবকের। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
হুগলির (Hooghly) খানাকুলের পাতুল গ্রামের বাসিন্দা শেখ আবদুল্লা। বয়স ১৮ বছর। অভাব নিত্যসঙ্গী। পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ছোট থেকেই কাজ করেন আবদুল্লা। দীর্ঘদিন ধরে সোনা-রুপোর কাজ করতেন তিনি। কিন্তু বর্তমানে সোনা-রুপোর কাজে বিশেষ লাভ হয় না। তাই বাধ্য হয়েই কাজ ছেড়ে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। এর পর জানতে পারেন রাজমিস্ত্রির কাজে লাভ বেশি। গার্ডেনরিচের ওই নির্মীয়মাণ বহুতলে রাজমিস্ত্রির কাজও পেয়ে যান। সপ্তাহ তিনেক আগে এক আত্মীয়র সঙ্গে কলকাতায় আসেন আবদুল্লা। ভাবতেও পারেননি কী বিপদ তাঁর অপেক্ষায়।
দিনভর কাজের পর রাতে গার্ডেনরিচের ওই অভিশপ্ত বহুতলেই ঘুমোতেন আবদুল্লা। অন্যান্যদিনের মতোই রবিবার রাতেও ওই বহুতলে ঘুমিয়েছিলেন তিনি। তার আগে পরিবারের লোকের সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছিলেন যুবক। কিছুক্ষণ পর ঘুমের মধ্যেই সব শেষ। আচমকা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে বহুতল। কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে গিয়েছেন আবদুল্লা। বেশ কয়েকঘণ্টা পর সোমবার সকালে ফোন যায় খানাকুলে। আবদুল্লার পরিবারের সদস্যরা তখন ছেলের মৃত্যু সংবাদ পান। কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। একদিনে সন্তান হারানো যন্ত্রণা, অন্যদিকে কীভাবে সংসার চলবে সেই চিন্তা। কুলকিনারা পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা।
প্রসঙ্গত, পেটের টানে বরাবরই বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকরা কলকাতা আসেন। আইন অনুযায়ী একাধিক নিয়ম মেনে শ্রমিকদের কাজে নেওয়ার কথা প্রোমোটারদের। শ্রমিকদের জন্য বিমা করার দায়িত্বও থাকে তাঁদের। কিন্তু এহেন অবৈধ নির্মাণের ক্ষেত্রে মৌখিক চুক্তিতেই কাজ করেন অধিকাংশ শ্রমিক। ফলে দুর্ঘটনা ঘটলে এই শ্রমিকরা কোনওরকম আর্থিক সাহায্যও পান না। তা সত্ত্বেও স্রেফ দুমুঠো ভাতের জন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শ্রমিকরা কাজে আসেন মৌখিক চুক্তি।