এই সময়, কৃষ্ণনগর: তিনি ভগ্নস্বাস্থ্য বা দুর্বল হৃদয়ের মানুষ নন। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। প্রাক্তন সেনা জওয়ানের। মঙ্গলবার সকালে মৌমাছির কামড়ে মৃত্যু হলো তাঁর। নদিয়ার করিমপুর থানার জয়নাবাদ গ্রামের জঙ্গলে চলে যাওয়া গোরু আনতে গিয়ে গুরুদাস টিকাদার (৫৫)-এর মুখে ও মাথায় ছেঁকে ধরেছিল এক ঝাঁক মৌমাছি। সঙ্গে থাকা গামছা দিয়ে মৌমাছি তাড়িয়েও শেষরক্ষা হয়নি।তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে আনা হলেও মৃত্যু হয় তাঁর। গুরুদাসের ছেলে সৌরভ বলেন, ‘বাবা বছর দশেক আগে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিলেও নিয়মিত শরীরচর্চা করতেন। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন। সামান্য মৌমাছির কামড়ে বাবার মৃত্যু হলো এটা ভাবতেই পারছি না আমরা।’
তিনি বলেন, ‘সকাল সাতটা নাগাদ বাড়ির গোয়াল থেকে একটা গোরু বাড়ির পিছনের জঙ্গলে চলে গিয়েছিল। বাবা গোরুটাকে ধরতে পিছন পিছন ছুটছিলেন। জঙ্গলের মধ্যে একটি গাছে মৌমাছির বড় চাক ছিল। গোরুটি ছুটতে ছুটতে ওই গাছে ধাক্কা মারলে মৌমাছির দল উড়ে এসে প্রথমে গোরুকে ছেঁকে ধরে। বাবা গোরুটিকে বাঁচাতে যান। সেই সময়ে মুখে ও মাথায় শ’দুয়েক মৌমাছি হুল ফুটিয়ে দেয়। বাবার চিৎকারে ছুটে এসে গামছা দিয়ে একটা একটা করে মৌমাছি বের করি। তারপর তেহট্টের হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু ততক্ষণে বাবার মৃত্যু হয়েছে। মৌমাছিগুলো সাইজে একটু বড়। শরীরে কালো রঙটা বেশি। অল্প হলুদ।’
বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ শান্তনু ঝা বলেন, ‘বিবরণ শুনে মনে হচ্ছে ওখানে ‘এপিস ডরসাটা’ মৌমাছির চাক ছিল। শত্রুর আক্রমণ বুঝতে পারলে ওরা দলবেঁধে দ্রুত আক্রমণ করে। একটি মৌমছির হুলের বিষ সামান্য হলেও অনেক মৌমাছি একসঙ্গে কামড়েছে বলে বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘মৌমাছির চাকের কাছে গেলে অবশ্যই সারা শরীর ঢেকে যাওয়া উচিত।’