বিবেকের দংশন! তৃণমূলে যোগদান করতে এসেও জোড়াফুলের পতাকা হাতে তুলে নিতে পারলেন না নির্দল কাউন্সিলর। তিনি জানান, আগে জনতার রায় তিনি জানতে চান। আর এরপরেই তিনি পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।বর্তমানে রাজনৈতিক দল বদল 'আম বাত' হয়ে গিয়েছে। গত বিধানসভা নির্বাচন, লোকসভা নির্বাচনে এই ধরনের ঘটনা নেহাত বিরল নয়। ফুল বদল করেছেন অনেকেই। কিন্তু, এবার এক অন্য রাজনীতির সাক্ষী থাকল দমদম। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী সৌগত রায়ের নির্বাচনী প্রচারের লক্ষ্যে কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল দক্ষিণ দমদম টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে।
আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটা মিটিং ডাকব। সেখানে সকলের মতামত নেবদেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়
সেখানেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের কথা ছিল ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর দেবাশিস বন্দ্য়োপাধ্যায়। উল্লেখযোগ্যভাবে অতীতে তাঁকে সাসপেন্ড করেছিল দল। এরপর তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবে পুরসভার নির্বাচনে লড়াই করেছিলেন। শুধু লড়াই করেছিলেন তাই নয়, ৯৬ শতাংশ ভোট পেয়ে তিনি ভোটে লড়েছিলেন।
এদিনের যোগদান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং সৌগত রায়ও। অনুষ্ঠান মঞ্চে সকলের সামনে যোগদান করতে করার জন্য তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়। তিনি জানান, রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস যে তাঁর মূল্যায়ণ করে ফের দলে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এতেই তিনি অত্যন্ত খুশি। তবে যেহেতু নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়ে ওয়ার্ডের মানুষের ৯৬ শতাংশ ভোট তিনি পেয়েছিলেন, তাই তাঁদের সঙ্গে কথা না বলে, তাঁদের মতামত না নিয়ে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের যোগদান করতে পারবেন না।
নির্দল কাউন্সিলরের এই সিদ্ধান্তে হাততালি দেন উপস্থিত তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের একাংশ। এদিন মঞ্চের মধ্যেই কান্নায় ভেঙে পড়েন দেবাশিস। তাঁকে আলিঙ্গন করেন সৌগত রায়।
এই নির্দল কাউন্সিলর জানান, 'আমাকে ৯৬ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছেন। তাঁদের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে যদি আমি যোগদান করি তাহলে তাঁদের মধ্যে ১০ শতাংশ মানুষ মনে করতে পারেন তাঁদের মতামতের কি কোনও গুরুত্ব নেই? তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটা মিটিং ডাকব। সেখানে সকলের মতামত নেব। যোগদান করতে হবে এমন কোনও বিষয় নেই। তবে দল যে মূল্যায়ণ করেছে এবং আমার উপর ওঠা অভিযোগ যে মিথ্যা তা প্রমাণিত হয়েছে আমি তাতেই খুশি।'
দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য রাখার কিছুক্ষণ পর ব্রাত্য বসু বলেন, 'ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ মেনে চলে। ও যা বলেছে মেনে নিলাম।’