‘মোদী কা পরিবারে’র পাল্টা হাতিয়ার ক্রিমিন্যাল রেকর্ড
এই সময় | ২০ মার্চ ২০২৪
এই সময়, কলকাতা ও নয়াদিল্লি: বাংলার বিজেপি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগের তথ্য তুলে ধরে গেরুয়া শিবিরের ‘মোদী কা পরিবার’ প্রচারের পাল্টা ক্যাম্পেন শুরু করল তৃণমূল। বিজেপি প্রার্থীর ছবির সঙ্গে তথ্য-পরিংখ্যান দিয়ে গ্রাফিক্স তৈরি করে এই প্রচার শুরু করেছে জোড়াফুল। প্রথম দফায় সুকান্ত মজুমদার, নিশীথ প্রমাণিক, শান্তনু ঠাকুর, লকেট চট্টোপাধ্যায়, মনোজ টিগ্গা, হিরণ-সহ বিজেপির ১০ জন প্রার্থীকে নিশানা করেছে তৃণমূল। এক্স হ্যান্ডেলে মঙ্গলবার বিজেপির এই প্রার্থীদের ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগের তথ্য দিয়ে তৃণমূলের প্রশ্ন, ‘কওন হ্যায় মোদী কা পরিবার? ক্রিমিন্যালস, ক্রিমিন্যালস।’এদিন তৃণমূলের তরফ থেকে সামাজিক মাধ্যমে যে পোস্টার শেয়ার করা হয়েছে, সেখানে দাবি, ‘বিজেপির ৫০ শতাংশ প্রার্থী অপরাধী। ঘোষিত ২২ জন প্রার্থীর মধ্যে ১০ জনের ক্রিমিন্যাল রেকর্ড রয়েছে।’ কিছুদিন আগেই সমগ্র দেশবাসী তাঁর পরিবার বলে দাবি করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর এই মন্তব্যের পরেই বিজেপি ‘মোদী কা পরিবার’ প্রচার শুরু করে।
বিজেপির প্রথম সারির নেতারা এক্স হ্যান্ডেলে নিজেদের নামের পরেই ‘মোদী কা পরিবার’ এই শব্দবন্ধ যুক্ত করেছেন। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল বাংলার বিজেপির প্রার্থীদের অপরাধের রেকর্ড রয়েছে বলে অভিযোগ করায় রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকরা কোন দলের? শাহজাহানরা কোন দলের? রাজ্যের মানুষ তৃণমূলের অপরাধের রেকর্ড জানে। তাই এই সব প্রচারে কোনও লাভ হবে না।’
তৃণমূলের এই প্রচারে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ৫৯টি ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। তালিকায় শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীর বিরুদ্ধে সর্বনিম্ন একটি ফৌজদারি অপরাধের রেকর্ড রয়েছে বলে তৃণমূলের দাবি। হিরণের বিরুদ্ধেও চারটি অভিযোগ রয়েছে বলে তৃণমূল দাবি করায় ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী বলেন, ‘হিরণ ক্রিমিন্যাল, এটা রাজ্যের কেউ বিশ্বাস করবে? আমার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছিল। কিন্তু হাইকোর্ট তা খারিজ করে দিয়েছে। তৃণমূল সঠিক তথ্যও দিতে পারে না।’ বিধানসভায় বিজেপির সচেতক মনোজ টিগ্গা।
পেশায় শিক্ষক মনোজ আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন। মনোজের বিরুদ্ধে ১৮টি অভিযোগ রয়েছে বলে তৃণমূলের দাবি। মনোজের পাল্টা যুক্তি, ‘বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। এগুলো সেই মিথ্যা মামলার নির্দশন। আমি যদি ক্রিমিন্যাল হতাম, তা হলে তো জেলে থাকতাম। আমি যদি ক্রিমিন্যাল হই, রাজ্যের পুলিশ গ্রেপ্তার করুক।’
শুধু ‘মোদী কা পরিবার’ নয়, নরেন্দ্র মোদীর ‘গ্যারান্টি’ প্রচার নিয়েও এ দিন দিল্লিতে তোপ দেগেছেন রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং তৃণমূলে টিকিটে রাজ্যসভা নির্বাচনে জয়ী সাগরিকা ঘোষ। বাবুল প্রশ্ন করেন, ‘কীসের মোদী গ্যারান্টি? যেখানে কন্যাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের ৮৩ লাখ মহিলা উপকৃত হচ্ছেন, সেখানে মোদীর বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও প্রকল্পের ৭৮ শতাংশ বরাদ্দ অর্থ খরচ করা হয়েছে শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য। মোদী কি এই নিরাশারই গ্যারান্টি দিয়েছিলেন?’
তাঁর সংযোজন, ‘গত ১০ বছরে মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্তদের জীবনধারণে কী পরিবর্তন হয়েছে? মুদ্রাস্ফীতি, স্মার্ট সিটির কথা এখন আর বলা হয় না। দেশে ১০ জন স্নাতকের মধ্যে বর্তমানে ৬ জন বেকার।’ দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে বাবুল এবং সাগরিকা প্রধানমন্ত্রী মোদীর দত্তক নেওয়া গ্রামের বর্তমান পরিস্থিতির ভিডিয়ো তুলে ধরেন। যে ভিডিয়োতে গ্রামবাসীরা দুর্দশায় রয়েছেন বলে দেখানো হয়েছে। বাবুল ও সাগরিকার দাবি, ভিডিয়োতে যে পরিস্থিতি দেখানো হয়েছে, দেশ জুড়ে মোদীর গ্যারান্টির বাস্তব চিত্র এটাই।