• অভিষেক ...
    আজকাল | ২০ মার্চ ২০২৪
  • পল্লবী ঘোষ, বসিরহাট: বিজেপি বাংলার মা, বোনেদের সুরক্ষা নিয়ে সোচ্চার হলেও, নারীবিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারে না। বাংলায় তৃণমূলের কোনও নেতা ক্ষমতার অপব্যবহার করলে, নারীদের অসম্মান করলে, মমতা ব্যানার্জির সরকার তাঁদের দল থেকে ধাড় ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বসিরহাটে পৌঁছে এভাবেই বিরোধীদের কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি। ঘড়ির কাঁটায় তখন ২ টো ৩৫ মিনিট। তুমুল ঝড়বৃষ্টি। দুর্যোগ উপেক্ষা করে বসিরহাটের জনসভায় পৌঁছন অভিষেক। সন্দেশখালিকাণ্ডের পর প্রথমবার তিনি বসিরহাটে পা রাখলেন। বক্তব্যের মাঝে অভিষেক বললেন, "বসিরহাট নিয়ে, সন্দেশখালি নিয়ে অনেক রাজনীতি হয়েছে। তৃণমূলের কোনও নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে, দল কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে, পুলিশ প্রশাসন পদক্ষেপ করেছে। মনে রাখবেন, শেখ শাহজাহানকে মমতার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ইডি, সিবিআই করেনি। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে দল থেকে বহিষ্কার করে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। নারী সুরক্ষা, নারী সম্মান নিয়ে যাঁরা এত কথা বলছেন, তাঁরা কুস্তিগীরদের প্রতিবাদের তোয়াক্কা না করে ব্রিজভূষণকে বড় পদ দিয়েছে। উন্নাওয়ের ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়নি। সন্দেশখালিতে মা, বোনেদের অভিযোগ পাওয়া সত্ত্বেও উত্তম, শিবুদের সিবিআই হেফাজতে নেয়নি। পুলিশ তাদের হেফাজতে রেখেছে। বিজেপি নারী সুরক্ষার কথা ভাবে না। শাহজাহান গ্রেপ্তার হওয়ার পর রাজনৈতিক দলের নেতারা আর সন্দেশখালি যাচ্ছেন না।" সন্দেশখালির প্রসঙ্গের পরেই সিএএ ইস্যু ঘিরে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেন অভিষেক। তাঁর কথায়, "অমিত শাহ বলেছিলেন প্রথমে সিএএ, তারপর এনআরসি। মমতা ব্যানার্জি যতদিন বেঁচে আছেন বাংলায় এনআরসি করতে দেবেন না। আমরা একতার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি।" বুধবার বসিরহাট কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলামের সমর্থনে জনসভায় এসে কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে আবারও সরব হন অভিষেক। তাঁর বক্তব্য, "নরেন্দ্র মোদি বাংলা এসে বলেছেন, ৪৫ হাজার কোটি টাকা বাংলাকে দেওয়া হয়েছে। বাংলায় ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার রিপোর্ট কার্ড দেখতে চেয়েছি। ৬ দিন হয়ে গেল। ১৫০ ঘণ্টা পরেও বিজেপির কোনও নেতা রিপোর্ট কার্ড দেখাতে পারলেন না। কেন্দ্রের সরকার ১০ পয়সা সাহায্য করেছে দেখাতে পারলে অভিষেক ব্যানার্জি রাজনীতির ময়দানে আর পা রাখবে না।" ভোটের আবহে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, বিজেপি জিতলে বাংলার নারীরা লক্ষ্মীর ভান্ডারে ৩ হাজার টাকা পাবেন। সেই প্রতিশ্রুতি ঘিরে অভিষেকের চ্যালেঞ্জ, "১৭ রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আছে। একটা রাজ্যেও যদি মেয়েদের ৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়, সেটা দেখাতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।" শেষলগ্নে অভিষেক বলেন, "ডায়মন্ড হারবার আর বসিরহাটে একইদিনে ভোট। এবার দুই কেন্দ্রের প্রার্থীই চার লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জিতবেন। মানুষের সমর্থন যাদের আছে, তাদের কেউ পরাজিত করতে পারে না।" অভিষেকের জনগর্জন সভায় যথার্থই বসিরহাটের আপামর মানুষের "গর্জন" শোনা গেল। অভিষেকের সুরেই সভায় উপস্থিত সকলে বলে ওঠেন, "বাংলায় জমিদারদের, অত্যাচারীদের স্বৈরাচারীদের, শ্রমিক, কৃষকদের বিরোধীদের, বাংলা বিরোধীদের এবার বিসর্জন।"
  • Link to this news (আজকাল)