• ভাঙড়ে ভোটে নেই আরাবুল ইসলাম, 'দাদা'র মুক্তি প্রার্থনায় মানত-গড়াগড়ি আদালত চত্বরেও!
    ২৪ ঘন্টা | ২০ মার্চ ২০২৪
  • প্রসেনজিৎ সরদার: জেলে ভাঙড়ের 'তাজা নেতা' আরাবুল ইসলাম। আর তাঁর মুক্তির দাবিতে আদালত চত্বরে গড়াগড়ি থেকে স‍্যোশাল মিডিয়াতে প্রতিবাদে সরব তৃণমূল কর্মীরা। লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হয়ে গিয়েছে। শাসক থেকে বিরোধী প্রায় সব পক্ষের প্রার্থীরা জোরদার প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের অত‍্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা ভাঙড়। আর সেই ভাঙড়ের 'ভোট মেশিনারি' বলে পরিচিত আরাবুল ইসলাম। কিন্তু তিনি-ই এবার ভোটের ময়দানে নেই। বর্তমানে তিনি বারুইপুর জেলে কারাবন্দি। তাঁর মুক্তির দাবিতে কোর্ট চত্বরে ধুলোয় গড়াগড়ি খেয়ে বিক্ষোভ দেখানো থেকে স‍্যোশাল মিডিয়াতে আরাবুলের মুক্তির দাবিতে সরব হয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা।গত বিধানসভা নির্বাচনে এই ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হয় আইএসএফ। ফলে একদা তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত ভাঙড় এখন পুনরুদ্ধার করতে মরিয়া তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে আইএসএফ কর্মী খুনের ঘটনায় ৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হন ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলাম। এখনও জামিন পাননি। বরং একের পর এক মামলায় তাঁকে কখনও পুলিস হেফাজত তো আবার কখনও জেল হেফাজতে রাখা হচ্ছে। ফলে ভোট ময়দানে নেই ভাঙড়ের 'তাজা নেতা' আরাবুল ইসলাম। আর এতেই কার্যত মুষড়ে পড়েছেন তাঁর অনুগামী থেকে সাধারণ কর্মী সমর্থকেরা।

    আরাবুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে ইতিমধ্যে ফেসবুক তথা স‍্যোশাল মিডিয়াতে সরব হয়েছেন বহু তৃণমূল কর্মী তথা আরাবুল অনুগামীরা। কেউ ফেসবুকে পোস্ট করে লিখছেন, "আরাবুল ইসলাম নির্দোষ। তাঁকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক।" আবার কেউ ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করছেন, "আরাবুল ইসলামকে মিথ্যা কেসে জেলে ভরা হয়েছে। তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক।" আরাবুল অনুগামী এক তৃণমূল নেতা বলেন, "দাদাকে প্রথমে আইএসএফ কর্মী খুনের ঘটনায় উত্তর কাশীপুর থানা গ্রেফতার করে। তারপর জিরেনগাছার ঝামেলায় পোলেরহাট থানা দাদাকে পুলিস হেফাজতে নেয়।  এখন শুনছি ভাঙড় থানার একটি পুরানো মামলায় দাদাকে জড়ানো হয়েছে।" নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও এক আরাবুল অনুগামী তৃণমূল কর্মী বলেন, "এই সব হচ্ছে চক্রান্ত। আরাবুল দাকে রাজনৈতিক ময়দান থেকে সরিয়ে দিতে চক্রান্ত চলছে।"স‍্যোশাল মিডিয়াতে প্রতিবাদের পাশাপাশি বারুইপুর আদলত চত্বরেও আরাবুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে ভাঙড়ের বামনঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য দীলিপ পাত্র ধুলোয় গড়াগড়ি খেয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁর দাবি, "দাদাকে মিথ্যা কেসে ফাঁসানো হয়েছে। দাদার মুক্তির জন্য ঠাকুরের কাছে মানত করেছি। কোর্ট চত্বরে ধুলোয় গড়াগড়ি খেয়েছি।" যদিও এই বিষয়ে ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লা বলেন, "এটা বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।" স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, ভাঙড় ২ ব্লকের ১০টি অঞ্চলের বিস্তৃর্ণ এলাকায় আরাবুল ইসলামের প্রভাব যথেষ্ট। তাঁর এক ডাকে কয়েক হাজার তৃণমূল কর্মী মিটিং-মিছিলে উপস্থিত হয়ে যেতেন।কিন্তু এই ভোটের ময়দানে নেই আরাবুল ইসলাম। সুতরাং কর্মী সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস-উৎসাহ উদ্দীপনাও সেই আগের মতো আর নেই বলে মনে করছেন নেতৃত্বরা। আরাবুলের অনুপস্থিতি যে একটা ফ‍্যাক্টর তা মানছেন ভাঙড়ের স্থানীয় নেতৃত্ব।এদিকে ভাঙড়ের অবজারভার ও ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা জানান, "আরাবুল ইসলামের অনুগামী ফেসবুকে পোস্ট করতে পারে বা আদালত চত্বরে গড়াগড়ি খেতে পারে। কিন্তু আইন আইনের মতন করেই চলবে। দোষী হলে সাজা পেতে হবে।"
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)