গোবিন্দ রায়: এসএসসি (SSC) নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শুনানি শেষ হল কলকাতা হাইকোর্টে। যদিও এই মামলার রায়দান স্থগিত রাখল বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) নির্দেশে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চে প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে মামলা চলার পর অবশেষে বুধবার শেষ হল নিয়োগ মামলার শুনানি। রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দেওয়া নিয়োগ মামলায় আদালত কী রায় দেয় সেদিকেই নজর ?প্রতারিত? চাকরি প্রার্থীদের।
এসএসসি-র গ্ৰুপ সি, গ্ৰুপ ডি, নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ মামলা বহু নিয়োগ বেআইনি বলে অভিযোগ ওঠে। মামলাকারীদের তরফে যে পরিসংখ্যান পেশ করা হয় তাতে দেখা যায় শূন্যপদের চেয়ে বেশি নিয়োগ হয়েছে। বুধবার আদালতে শুনানি চলাকালীন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও ফিরদৌস শামিম বলেন, ?এটি সুপরিকল্পিত অপরাধ। শূন্যপদের চেয়েও বেশি সংখ্যক ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হয়েছে। এই বেআইনি নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। প্রশাসনিক স্তরে যুক্ত আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা উচিত। ওই সব দুর্নীতির টাকা ফেরানোর ব্যবস্থা করা উচিত।? এই ঘটনায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপের দাবি জানান বিকাশ ভট্টাচার্য। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি দেবাংশু বসাক বলেন, ?এই নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে ভাল কিছু খুঁজে পাওয়া কঠিন। অতিরিক্ত নিয়োগ সরাসরি বাতিল হওয়া উচিত।?
স্কুল নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় গত ২ বছর ধরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। বিপুল টাকা উদ্ধারের পাশাপাশি এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন একের পর এক মন্ত্রী ও শাসকদলের বিধায়ক। অভিযোগ উঠেছিল, যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের বঞ্চিত করে, টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে অযোগ্যদের। কলকাতা হাইকোর্টের পাশাপাশি এই মামলার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। তদন্তে দেরীর অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে গত বছর নভেম্বরে SSC-র নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় নতুন ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করে শীর্ষ আদালত। মামলা পাঠানো হয়, কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে। পাশাপাশি তদন্ত শেষ করতে ডেডলাইন বেঁধে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বলা হয়, ২ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে তদন্ত প্রক্রিয়া। এবং ৬ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে বিচার প্রক্রিয়া। শীর্ষ আদালতের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই বুধবার শেষ হল নিয়োগ মামলার শুনানি। আদালত কী রায় দেয় আপাতত সেদিকেই নজর গোটা রাজ্যের।