হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল গার্ডেনরিচের বহুতল। এরপর থেকেই বেআইনি বহুতল নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। বেআইনি নির্মাণ রুখতে কড়া হয় কলকাতা হাইকোর্টও। বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেন, ‘বেআইনি নির্মাণের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের একটা ভাল শিক্ষা দিতে হবে, যাতে আগামীতে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ হয়।’ এদিন বুধবারও অমৃতা সিনহা বলেন, 'আদালত চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারে না। বিচার না দিলে অন্যায় করা হবে। সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের উপর ডিভিশন বেঞ্চের কোন স্থগিতাদেশ নেই।'শুধু তাই নয়, ১ লাখ টাকা জরিমানা দিতে না চাওয়া অভিযুক্তের জরিমানা বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা করল আদালত। উল্লেখ্য, গার্ডেনরিচকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত দশ জনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। এরপরেই মঙ্গলবার এই নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট।
বিচারপতি অমৃতা সিনহা একটি মামলার প্রেক্ষিতে বলেছিলেন, 'বাড়ি ভাঙার নির্দেশ সম্পর্কিত কোনও মামলা শুনব না। যে আদালতই নির্দেশ দিক, তাই থাকবে। আগে মানুষের জীবন সুরক্ষিত হোক, আদালত এই ধরনের মামলায় কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। বাড়ি ভাঙার নির্দেশের বিরুদ্ধে কোনও মামলার অনুমতি নয়, স্পষ্ট জানিয়েছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, তাঁর এজলাসে মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত বিষয়ে তিনটি মামলার আবেদন জানানো হয়েছিল আইনজীবীদের তরফে। কিন্তু, কোনও মামলাই তিনি গ্রহণ করেননি। রবিবার রাতে কলকাতার গার্ডেনরিচ এলাকার একটি বহুতল আবাসন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। আর এতে মৃত্যু হয়েছে দশ জনের। বেআইনিভাবে এই বিল্ডিংটি তৈরি করা হয়েছিল বলে পুরসভা সূত্রে খবর। ইতিমধ্যেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে ওই প্রোমোটার।
বেআইনি বিল্ডিংয়ের বাড়বাড়ন্ত প্রসঙ্গে প্রশ্ন নিয়ে বাম জমানাকে দুষেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। যদিও কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের কণ্ঠে শোনা গিয়েছে অন্য কথা। তিনি বলেন, 'যিনি চেয়ারে, নিয়ন্ত্রণের দায় তাঁর। আমার ওয়ার্ড হলে দায় এড়িয়ে যেতে পারতাম না। পুরসভার প্রতিনিধি বলছেন, তিনি জানতেন না। আমার ওয়ার্ড হলে ব্যাখ্যা দিতে হত আমাকেও।'
এদিকে গার্ডেনরিচের ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে পুলিশও। এই নিয়ে মঙ্গলবার লালবাজারে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উচ্চ পদস্থ পুলিশ কর্তারা। সূত্রের খবর, বেআইনি নির্মাণ ঠেকানোর জন্য একটি সেন্ট্রাল রিপোজিটরি ডেটা অ্যাপ তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে লালবাজারের তরফে। সেই অ্যাপেই পুরসভার তরফে বেআইনি নির্মাণ সম্পর্কিত তথ্য উল্লেখ থাকবে এবং তার প্রেক্ষিতে পুলিশি পদক্ষেপের তথ্য থাকবে।