নিমেষে সব সমস্যার সমাধান! কে না চান! আর মানুষের বিপদের সময়, তাঁদের দুর্বল মুহূর্তে সমস্যার সমাধানের টোপ দিয়ে লক্ষাধিক টাকার প্রতারণা ভণ্ড জ্যোতিষীর! অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতার করেছে নিউ ব্যারাকপুর থানার পুলিশ। ধৃতের নাম বিশ্বজিৎ রায় ওরফে ইন্দ্রনীল শাস্ত্রী।জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির বাড়ি মুর্শিদাবাদের নওদা। যদিও পরবর্তীতে সে নিউ ব্যারাকপুর পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সতীন সেন নগরে বসবাস শুরু করে। একটি আবাসনে থাকত সে। এলাকায় নিজেকে জ্যোতিষ বলে পরিচয় দিত। আশেপাশের এলাকায় বিভিন্ন মানুষের থেকে মিথ্যে কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
জানা যায়, মুসকিল আসান করার প্রতিশ্রুতি শোনা গিয়েছিল তার কণ্ঠে। আর সেই জন্য সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে নিত মোটা টাকা। এদিকে টাকা দিয়ে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস পাওয়া গেলেও অধিকাংশ মানুষের দাবি কোনও ফল পাননি তাঁরা। টাকা দিয়েও লাভের লাভ না হওয়ায় এলাকাবাসী বুঝতে পারেন তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন। এরপর সোমবার রাতে একদল অভিযোগকারী তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। অনেকেই ক্ষোভে ফুঁসতে থাকেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, ‘বাড়ির সমস্য়া সমাধান করে দেবে বলে ও টাকা নিয়েছিল। যেন তেন প্রকারে সেই টাকা জোগাড় করে ওর হাতে তুলে দিয়েছিলাম। ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারিনি ও এই ধরনের প্রতারক হবে।’
এক মহিলা বলেন, ‘আমার স্বামীর ব্যবসা খুব খারাপ চলছিল। মেয়ের বিয়ে নিয়েও চিন্তায় ছিলাম। ইন্দ্রনীল শাস্ত্রীকে পুরো বিষয়টি বলায় তিনি সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিলেন। মোটা টাকার বিনিময়ে তিনি বলেছিলেন সমস্যার সমাধান করে দেবেন। কিন্তু, তা আদতে হয়নি।’
স্বামী স্ত্রী দাম্পত্য জীবনে ঝামেলা মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য পাথর বাবদ ৩০ হাজার, আবার কারও সুস্থতার জন্য পেটিএম-মারফত আড়াই লাখ নেওয়া, কাজের জায়গায় ম্যানেজারকে বশীকরণের নামে পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়েছিল সে। কিন্তু, কোনও কাজই হয়নি বলে দাবি টাকা দেওয়া ব্যক্তিদের। সোমবার রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। জানা গিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সবমিলিয়ে প্রতারণার অঙ্কটা প্রায় ৪ লাখের কাছাকাছি বলে অভিযোগ উঠছে।