• গার্ডেনরিচ কাণ্ডের জের, বেআইনি নির্মাণ রুখতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ হাওড়া পুরসভার
    এই সময় | ২১ মার্চ ২০২৪
  • গার্ডেনরিচ কাণ্ডের পর বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা। অন্যদিকে, নদীর ওপারে হাওড়া শহরের বুকে বেআইনি নির্মাণের সংখ্যা কম নয়। হাওড়া পুরসভা এলাকায় কতগুলি বেআইনি বাড়ি আছে সে ব্যাপারে পুরোপুরি তথ্য পুরসভায় নেই। সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা স্বীকার করেন হাওড়া পুরসভার প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী। তবে তিনি জানিয়েছেন, বেআইনি নির্মাণ চিহ্নিত করতে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে।গার্ডেনরিচে নির্মীয়মান পাঁচতলা বাড়ি ভেঙে ১০ জনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় দেরিতে হলেও নড়েচড়ে বসল হাওড়া পুরসভা। বুধবার হাওড়া পুরসভায় ইঞ্জিনিয়ার এবং উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন সুজয় চক্রবর্তী। সেখানে বেআইনি বাড়ি এবং অবৈধ নির্মাণ নিয়ে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

    এদিন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘বেআইনি বাড়ি অথবা আইন ভেঙে বেআইনি নির্মাণ চিহ্নিত করতে অ্যাসেসমেন্ট বিভাগের কর্মীদের নিয়ে পুরসভার পক্ষ থেকে একটি টিম তৈরি করা হচ্ছে। তারা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে নজরদারি চালাবে।’ তাঁর কথায়, যদি বেআইনি কাজ নজরে আসে তবে পুরসভার পক্ষ থেকে ‘stop work’ নোটিসের পাশাপাশি বোর্ড টাঙ্গানোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে পুলিশের কাছেও পুরসভার পক্ষ থেকে কাজ বন্ধের চিঠি পাঠানো হবে। যদি তাতেও কোন কাজ না হয় সে ক্ষেত্রে প্রমোটারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    'এগুলো সবই বেআইনি' গার্ডেনরিচে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

    এছাড়াও হাওড়া পুরসভার ডেপুটি কমিশনার, কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিকদের সঙ্গে হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিকদের নিয়ে একটি whatsapp গ্রুপ খোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে পুরসভার কমিশনার শীঘ্রই হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনারকে এ ব্যাপারে চিঠি লিখবেন। যাতে বেআইনি নির্মাণের ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যায়।

    এদিন তিনি আরও জানান, পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে ২ সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে যাতে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা হয়। উল্লেখ্য, মাস কয়েক আগে হাওড়া পুরসভার পক্ষ থেকে নির্মীয়মান বাড়ির ক্ষেত্রে পুরো প্ল্যান বাড়ির সামনে বোর্ড টাঙ্গানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ প্রোমোটাররা কয়েকদিন টাঙানোর পর সেই বোর্ড সরিয়ে দেন। সুজয়বাবু বলেন এবার থেকে পুরসভার নজরদারি দল নির্মীয়মান বাড়িগুলোকে নিয়মিত নজরদারি চালাবে।

    বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে অনুমতি পেতে আগে পুরসভার সঙ্গে বরো অফিসগুলির তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে ঢিলেমি ছিল। সেটা আর বরদাস্ত করা হবে না। এবার থেকে বড়ো অফিস থেকে বাড়ি নির্মাণ সংক্রান্ত তথ্য পুরসভার প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। ঠিক একইভাবে প্রধান কার্যালয় থেকেও বড়ো অফিসগুলোতে নির্দেশ পাঠানো হবে। এদিন তিনি দাবি করেন, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত হাওড়া শহরে ২৫ টি বেআইনি বাড়ি ভাঙা হয়েছে। যদিও আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে পুরসভার পক্ষ থেকে আগে এফআইআর করার কথা বলা হলেও তিনি বলেন এখনো পর্যন্ত একজনের বিরুদ্ধেও এফআইআর করা হয়নি।
  • Link to this news (এই সময়)