জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ভোটের দিন ঘোষিত হয়ে গিয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে যাচ্ছেন নেতারা। এদিকে এরই মধ্যে ভোট বয়কটের সুর তুলে চা-বাগানের সামনে ধর্নায় বসলেন বাগানশ্রমিকেরা। ঘটনাস্থল মালবাজারের সাইলি টি এস্টেট।
মাল ব্লকের সাইলি চা-বাগানের শ্রমিক-সহ সমস্ত শ্রমিক নেতার দাবি, চা-বাগান না খুললে কেউ ভোট দেবে না। টাকার অভাবে খাওয়া-দাওয়া ঠিকঠাক হচ্ছে না শ্রমিকদের। ঠিকঠাক চিকিৎসা করাতে না পারায় দুই শ্রমিকের মৃত্যুও ঘটেছে বলে দাবি করছেন চা-বাগানের শ্রমিক নেতা-সহ শ্রমিকেরা। তাই চা-বাগান খোলার দাবিতে বুধবার থেকে চা-বাগানের গেটের সামনে ধর্নায় বসেছেন বাগানশ্রমিকেরা। গত ৫ ফেব্রুয়ারি শ্রমিক-মালিক অসন্তোষের কারণে বন্ধ হয় সাইলি চা-বাগান। প্রায় ১৫০০ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েন। মারা গিয়েছেন অরুণ হরহরিয়া (৫২) এবং সাবিনা মুণ্ডা (৫০)। প্রসঙ্গত, চা-বাগানের শ্রমিক এবং শ্রমিক নেতারা সাংবাদিকদের সামনে দাবি করেন, বাগানকর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি না মিটিয়ে 'সাসপেনশন অফ ওয়ার্কে'র নোটিশ দিয়ে বাগান ছেড়ে চলে যান। আর এতেই চরম সমস্যায় পড়েন শ্রমিক কর্মচারীরা। শ্রমিকদের পিএফ গ্র্যাচুইটির অধিকাংশই এখনো বকেয়া রয়েছে। ইতিমধ্যেই পেটের তাগিদে জীবিকার সন্ধানে বাগান ছেড়ে অন্য রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন বাগানের বহু শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। যাঁরা বাগানে রয়েছেন, তাঁদের ঠিকঠাক খাওয়া দাওয়াও হচ্ছে না। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা হচ্ছে না। তাই তাঁরা ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছেন। মাল ব্লকেই আদিবাসী উন্নয়নমন্ত্রী বুলুচিক বড়াইকয়ের বাড়ি। কিন্তু তিনি একবারের জন্যও শ্রমিকদের দেখতে আসেননি বলে দাবি করছেন চা-শ্রমিক এবং শ্রমিক নেতারা। সাইলি চা-বাগানের প্ল্যান্টার্স ওয়ার্কাস ইউনিয়নের নেতা ইবারতুষ এক্কা, তৃণমূল চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সেক্রেটারি আনন্দ মাহালি, বিজেপি ট্রেড ইউনিয়ন অ্যাডভাইজার জোহার সাউ বলেন, 'এত দিন হয়ে গেল, কিন্তু বাগান খোলার ব্যাপারে কোনও মন্ত্রী বা কোনও সরকারই কোনও সদিচ্ছা দেখাচ্ছে না। ইতিমধ্যে অর্থের অভাবে চিকিৎসা ঠিকঠাক করতে না পারায় সাত দিনে দুইজন মারা গিয়েছেন। এভাবে চলতে থাকলে আরও মারা যাবেন। তাই বাধ্য হয়ে আজ থেকে আমরা বাগানের গেটের সামনে ধর্নায় বসেছি। বাগান না খুললে আমরা ভোট বয়কটও করব।' বাগানের তৃণমূল চা-শ্রমিক নেতা অনুপ প্রধান বলেন, 'দুবার মালবাজারের বৈঠক হলেও মালিকপক্ষের কেউ আসেনি। ফলে এখনও চা-বাগান খোলেনি। আমরা খুব সমস্যায় আছি। আমরা চাই, সরকার দ্রুত বাগান খোলার ব্যবস্থা করুক।'এ ব্যাপারে আদিবাসী উন্নয়নমন্ত্রী বুলুচিক বড়াইক বলেন, 'চা-বাগানটি যাতে খুব তাড়াতাড়ি খোলে তার ব্যবস্থা হচ্ছে। ওই বাগানে দু'জনের মৃত্যুর খবর আমার জানা নেই। বাগানে সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।'