এই সময়: আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে কেউ যাতে ভোট কিনতে না পারে, সে জন্য ডিজিটাল পেমেন্ট ওয়ালেটের উপরেও নজর রাখবে কমিশন। কারও ওয়ালেট থেকে একাধিক ব্যক্তির কাছে একই পরিমাণ টাকা গেলে সেটাকে সন্দেহজনক লেনদেন হিসেবে ধরে তা সঙ্গে সঙ্গে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে।এমনকী, ডিজিটাল ওয়ালেট থেকে কী ধরনের আর্থিক লেনদেন হচ্ছে, ব্যাঙ্কগুলির থেকে তার দৈনিক রিপোর্ট সংগ্রহ করবে কমিশন। কোনও রাজনৈতিক দল অথবা প্রার্থী যদি এই ধরনের অবৈধ আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই মর্মে সমস্ত জেলাশাসকদের কাছে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।
ভোটে কালো টাকার ব্যবহার রুখতে এবার প্রথম থেকেই আদাজল খেয়ে নেমেছে নির্বাচন কমিশন। ইসির এক শীর্ষ কর্তা জানাচ্ছেন, ভোটের আগে বেআইনি টাকা উদ্ধার করতে ইডি, ইনকাম ট্যাক্স, জিএসটি’র মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে তৎপরতা বাড়াতে বলা হয়েছে। তার সঙ্গে অনলাইন ফিনান্সিয়াল ট্রানজাকশনের উপরও নজর রাখা হচ্ছে।
তাঁর কথায়, ‘নগদ টাকার লেনেদের পাশাপাশি এখন অনেকে অনলাইন পেমেন্ট করেন। এক সঙ্গে অনেক লোককে টাকা দেওয়ার জন্য এটা সবথেকে নিরাপদ মাধ্যম। অনলাইনে টাকা পেমেন্ট করলে ধরা খুব মুশকিল। সেজন্য আমরা ডিজিটাল পেমেন্টের উপর নজরদারি বাড়াচ্ছি।’
কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্যের সমস্ত ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে প্রতিদিন যতগুলো বাল্ক ট্রানজেকশন (একসঙ্গে অনেক লোককে পেমেন্ট) অথবা বড় অঙ্কের কোনও আর্থিক লেনদেন হলে সেই তথ্য কমিশনের সঙ্গে শেয়ার করতে হবে। ডিএম’দেরও সেটা জানাতে হবে। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের ইকনমিক সার্ভিসেস বিভাগের মাধ্যমে ব্যাঙ্কগুলির কাছে এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।
স্টেট লেভেল ব্যাঙ্কার্স কমিটিকেও এ বিষয়ে অবহিত করতে বলা হয়েছে। ব্যাঙ্কের সন্দেহজনক লেনদেন বিশ্লেষণ করতে প্রতিটি জেলায় হিসাবরক্ষক নিয়োগ করার কথাও ভাবছে কমিশন। ভোটারদের মন পেতে নগদ টাকা বিলি করার পাশাপাশি অনেক জায়গায় শাড়ি, কম্বল, ছাতা, ব্যাগ সহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী বিলি করা হয়। নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, ভোটারদের খুশি করার জন্য কেউ উপহার দিলে সেটাকে ঘুষ হিসাবে গণ্য করা হয়।
এই প্রবণতা রুখতে এবার বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে কমিশন। ভোটের আগে কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে কোথাও উপহার বিলি করা হলে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম থেকেও যে কোনও জিনিস কিনতে পাওয়া যায়। ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম থেকে কোনও জিনিস বুক করলে যে কোনও ঠিকানায় সেটা পাঠিয়ে দেওয়া যায়।
নজরদারি এড়াতে রাজনৈতিক দলগুলি ভোটারদের উপহার বিলি করার জন্য ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মকেও কাজে লাগাতে পারে বলে আশঙ্কা কমিশনের। সেজন্য বিভিন্ন ই-কমার্স কোম্পানি এবং ডেলিভারি পরিষেবার উপর নজর রাখা হবে।