• Central Government : ফ্যাক্ট অর ফেক? নজর রাখবে কেন্দ্র
    এই সময় | ২১ মার্চ ২০২৪
  • নয়াদিল্লি: সরকারের কাজকর্ম নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ফেক’ এবং ‘মিসলিডিং’ খবর ছড়ানোয় রাশ টানতে ফ্যাক্ট চেক ইউনিট (এফসিইউ) গড়ল কেন্দ্রীয় সরকার। সংশোধিত ইনফর্মেশন টেকনোলজি (আইটি) রুলের আওতায় কাজ করবে এই ইউনিট। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের প্রেস ইনফর্মেশন ব্যুরো (পিআইবি)-র ফ্যাক্ট চেক ইউনিটটিই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নজরদারি চালাবে বলে বুধবার নোটিফিকেশন জারি করেছে মিনিস্ট্রি অফ ইলেকট্রনিক অ্যান্ড ইনফর্মেশন টেকনোলজি।এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান কুণাল কামরা এবং এডিটর্স গিল্ড। আজ, বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতে সেই মামলার শুনানি রয়েছে। কেন্দ্রের নোটিফিকেশনের পরে ফোনে ‘এই সময়’-কে কুণাল জানান, আপাতত সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারের দিকে তাকিয়ে তিনি। তার আগে এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। এডিটর্স গিল্ডের প্রেসিডেন্ট অনন্ত নাথ বলেন, ‘এই উদ্যোগ সংবিধানের একেবারে ভিতে আঘাত করবে। যে সরকারই হোক, তারা যেটা বলতে বা বোঝাতে চাইবে, তার বাইরে কোনও বার্তা দেওয়া হলেই সেটার বিরোধিতা করা হতে পারে। আমরা এই পদক্ষেপের চূড়ান্ত বিরোধী। শীর্ষ আদালতের দিকেই নজর রাখছি।’

    এই ইউনিট চালু করা নিয়ে টানাপড়েন চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। ‘ফেক’ এবং ‘মিসলিডিং’ খবরে লাগাম পরাতে ইউনিট তৈরি করা হলেও আদতে তা বাক্‌স্বাধীনতা খর্বের চেষ্টা বলেই মনে করেন অনেকে। নতুন আইটি আইনের লিগ্যালিটি নিয়ে কোর্টের রায় বেরোনোর আগে এফসিইউ-তে স্থগিতাদেশ চেয়ে বম্বে হাইকোর্টে অন্তর্বর্তীকালীন আর্জিও জানিয়েছিলেন কুণাল। কিন্তু দিন কয়েক আগে সেই আর্জি খারিজ করে দেয় আদালত। কোর্টের বক্তব্য ছিল—আইটি রুলে এফসিইউ তৈরি করা হলে বিশাল কোনও ক্ষতি হবে না।

    তবে তার আগে, বম্বে হাইকোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ এ সম্পর্কে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি। গত ৩১ জানুয়ারি সেই বেঞ্চ ‘স্‌প্লিট ভার্ডিক্ট’ দেওয়ায় এ নিয়ে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছতে বিচারপতি এ এস চন্দরকারকে যুক্ত করা হয়। পরে ২:১ অনুপাতে তিন বিচারপতির মতামতের ভিত্তিতে খারিজ হয় স্থগিতাদেশের আর্জি। চন্দরকারের সঙ্গে সহমত ছিলেন বিচারপতি নীলা গোখলে এবং স্থগিতাদেশের পক্ষে ছিলেন জাস্টিস গৌতম প্যাটেল।

    গত বছর ৬ এপ্রিল আইটি অ্যাক্টে কিছু পরিবর্তন আনে কেন্দ্র। সেখানেই সরকারের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও বিষয়ে ভুল বা মিসলিডিং বার্তা রুখতে ফ্যাক্ট চেক ইউনিট তৈরির প্রসঙ্গ রয়েছে। এমন কোনও কনটেন্ট কোনও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা গেলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে জানানো হবে। সংস্থার তরফে হয় সেই পোস্ট সরিয়ে দিতে হবে বা তা নিয়ে ডিসক্লেমার দিতে হবে। কিন্তু কোনও সংস্থা যদি পোস্ট না সরিয়ে ডিসক্লেমার দেয়, তা হলে এ দেশে আইনি রক্ষাকবচ খোয়াতে হবে তাদের।

    গত বছর আইটি অ্যাক্টে পরিবর্তনের পরেই তা নিয়ে সরব হন নানা ক্ষেত্রের মানুষ। ফেক এবং মিসলিডিং তথ্য রোখার নামে আদতে নাগরিকের কণ্ঠরোধের চেষ্টাই হবে বলে অভিযোগ ওঠে। সে ক্ষেত্রে যে কোনও প্যারোডি, স্যাটায়ার বা রসিকতাকেও ‘ফেক’, ‘মিসলিডিং’ ক্লজ়ের আওতায় আনা হতে পারে বলে তখনই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অনেকে। এডিটর্স গিল্ডও মতপ্রকাশ ও বাক্‌স্বাধীনতার অধিকার খর্ব হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।

    কুণাল এবং গিল্ড, দু’তরফেই সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করা হয়। তাঁদের বক্তব্য, এই ফ্যাক্ট চেক ইউনিট সক্রিয় হওয়ার অর্থ তারা যে তথ্যকেই ‘ফেক’ বা ‘মিসলিডিং’ বলে চিহ্নিত করে দেবে, সেগুলিকেই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে আইনি জটিলতার ভয়ে।
  • Link to this news (এই সময়)