এই সময়: এসএসসি’র মাধ্যমে স্কুলে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্ট ফেরত পাঠিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। গত ৫ ডিসেম্বর থেকে প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে হাইকোর্টের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে নিয়মিত মামলাটির শুনানি চলেছে। বুধবার তা শেষ হলো। এ দিন শুনানির শেষ পর্বে বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এই নিয়োগ-প্রক্রিয়া থেকে ভালো কিছু খুঁজে পাওয়া কঠিন। আদালতের অভিমত, অতিরিক্ত নিয়োগ সরাসরি বাতিল হওয়া উচিত। তবে রায় স্থগিত রেখেছে আদালত।এ দিন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের তরফে বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, ঘোষিত শূন্যপদের থেকেও বেশি সংখ্যক ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হয়েছে। এই অবৈধ নিয়োগ-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। প্রশাসনিক স্তরে যে আধিকারিকরা যুক্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হোক। দুর্নীতির টাকা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হোক। বিকাশরঞ্জনের দাবি, এটা সুপরিকল্পিত অপরাধ। এই মামলার প্রেক্ষিতে আদালত যদি দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ না করে তা হলে এই অপরাধ-প্রবণতা কমবে না। অপরাধীরা এই ধরনের অপরাধ করতেই থাকবে।
সওয়ালে মামলাকারী বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবীরা অতিরিক্ত নিয়োগের পরিসংখ্যান পেশ করেছেন আদালতে। তাঁদের দাবি, ২০১৬ সালে নবম-দশমে শিক্ষক হিসেবে এসএসসি’র তরফে ১১,৪২৫ জনের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছিল। অথচ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ মোট ১২,৯৬৪টি নিয়োগপত্র দেয় (অতিরিক্ত ১৫৩৯ জন)। একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষক নিয়োগে সুপারিশ ছিল ৫,৫৫৭ জনের ক্ষেত্রে। নিয়োগপত্র দেওয়া হয় ৫,৭৫৬ জনকে (অতিরিক্ত ১৯৯ জন)। গ্রুপ-ডি কর্মী হিসেবে ৩,৮৮১ জনের নিয়োগের সুপারিশ করেছিল এসএসসি। পর্ষদ ৪৫৫০ জনকে নিয়োগপত্র দেয় (অতিরিক্ত ৬৬৯ জন)। ২,০৬৭ জনকে গ্রুপ-সি কর্মী হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করেছিল এসএসসি। নিয়োগপত্র পান ২,৪৮৩ জন (বাড়তি ৪১৬ জন)।
অন্য দিকে, বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকদের আইনজীবী প্রমিত রায় এসএসসি এবং সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। তাঁর বক্তব্য, ‘এই দুর্নীতির ঘটনায় ওই দুই সংস্থার অবস্থান ভরসা করা যায় না। আদালত নিজের স্বতন্ত্র সিদ্ধান্তে বিশ্বাস রাখুক।’