• Krishnanagar Incident : শাশুড়ির হাঁটুর ব্যথা সারাতে ‘গুণধর’ বউমার অদ্ভুত দাওয়াই
    এই সময় | ২১ মার্চ ২০২৪
  • এই সময়, কৃষ্ণনগর: বয়স আশি ছুঁইছুঁই। বাতের ব্যথায় মাঝে মাঝে বেঁকে যায় পা। অশীতিপর শাশুড়ির সেই বেঁকে যাওয়া পা সোজা করতে ‘গুণধর’ বউমার অদ্ভুত দাওয়াই। দু’হাত মাথার উপরে জড়ো করে বেঁধে মেঝেতে শুইয়ে তাঁর শরীরের নীচের অংশে ভারী পাথর ও ইট চাপা দিয়ে রেখেছিলেন বউমা। প্রতিবেশী এক যুবক বৃদ্ধার যন্ত্রণাকাতর সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে সেই ছবি দেখে আঁতকে ওঠে নবদ্বীপের অনেকেই। বৃদ্ধাকে চিনতে পেরে প্রতিবেশী ও অন্যপাড়ার মহিলারা রাতেই ছুটে গিয়েছিলেন ওই বাড়িতে।ভিডিয়ো ছবি দেখিয়ে মহিলারা বউমার কাছে কৈফিয়ত চাইতেই তাঁর জবাব ছিল, ‘শাশুড়ির শরীরের নীচের দিকের অংশ বেঁকে যাচ্ছে। চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি এমন কাজ করেছেন।’ কোন চিকিৎসকের বিধান? জেরা করতেই বউমা অবশ্য স্বীকার করেন, তিনি ভুল করে ফেলেছেন। নবদ্বীপ পুরসভার পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, ‘খুবই অমানবিক ব্যাপার। সত্যিই এরকম অত্যাচার করে থাকলে উপযুক্ত সাজা হওয়া উচিত।’

    নদিয়ার নবদ্বীপ শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রতাপনগর শিমুলতলার বাসিন্দা ওই বৃদ্ধার উপরে কেন এমন অমানবিক অত্যাচার জানতে, মঙ্গলবার রাতে উদ্বিগ্ন হয়ে ছুটে গিয়েছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলার ঝন্টুলাল দাস। তিনি বলেন, ‘ওই বৃদ্ধার ছেলে কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। বৃদ্ধার নাতিও কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। বাড়িতে বৃদ্ধা আর তাঁর বউমা থাকেন। এর আগে প্রতিবেশীদের কাছে একাধিক বার শুনেছিলাম, বৃদ্ধার উপরে নানাভাবে অত্যাচার করেন বউমা। কিন্তু আমাদের কারও মৌখিক পরামর্শে কোনও কাজ হয়নি।’

    তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে পাড়ার মহিলারা এতটাই রেগে গিয়েছিলেন যে, আমি ঘটনাস্থলে না থাকলে ওই বৃদ্ধার পুত্রবধূকে শারীরিক ভাবে হেনস্থা করতেন তাঁরা। অভিযুক্ত পুত্রবধূ ঝর্ণা দাস আমার কাছে প্রথমে দাবি করেন, চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি শাশুড়ির শরীরের নিম্নাংশ সোজা করতে ইট পাথর চাপা দিয়ে শুইয়ে রেখেছিলেন। কোন শাস্তি- টাস্তি নয়। তাঁর ভালোর জন্যই এ কাজ করেছিলেন। আমি বৃদ্ধাকে কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই তাঁর পুত্রবধূ শাশুড়ির দিকে তেড়ে গিয়ে বলেন, ‘আমি কি তোমাকে জোর করে শুইয়ে রেখেছিলাম?’ আমার মনে হয়, বউমার চোখ রাঙানি দেখে ভয় পেয়ে বৃদ্ধা শাশুড়ি বলতে বাধ্য হন, ‘আমার বউমা ভালো’।

    মহিলা সংগঠনের ওয়ার্ড সভানেত্রী শ্রাবন্তী দত্ত বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে আমিও ওই বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলাম। কেন এভাবে বৃদ্ধাকে চরম কষ্ট দেওয়া হচ্ছে তা জানতে চেয়েছিলাম। প্রথমে অন্য কথা বললেও শেষে আমতা আমতা করে মহিলা স্বীকার করেন, তিনি ভুল করেছেন। আমার মনে হয়, এরকম ভুলের ক্ষমা হওয়ার জায়গা নেই। আইনি শাস্তি না হলে ফের বৃদ্ধার উপরে তিনি এরকম অত্যাচার করতে পারেন। অভিযুক্ত বধূর শাস্তি দাবি করছি।’ আজ বৃহস্পতিবার থানায় অভিযোগ জানানো হবে বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
  • Link to this news (এই সময়)