• 'আমাদের প্রচারের পর্যন্ত টাকা নেই, অপরাধমূলক অ্যাকশন,' PM মোদীকে নিশানা সনিয়া-রাহুলদের
    আজ তক | ২১ মার্চ ২০২৪
  • দলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সরাসরি নিশানা করলেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী ও নেতা রাহুল গান্ধী সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সনিয়া বললেন, 'কংগ্রেসকে অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী।' রাহুলের দাবি, দেশের ২০ শতাংশ মানুষ কংগ্রেসকে ভোট দেন। তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকারে আক্রমণ করা হয়েছে। তাঁর কথায়, 'প্রধানমন্ত্রীর অপরাধমূলক অ্যাকশন'।     

    লোকসভা নির্বাচনের আগে আজ অর্থাত্‍ বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে  দলের সিনিয়র নেতা সনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধীর উপস্থিতিতে, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে নির্বাচনী বন্ড নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেন।

    মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, 'গণতন্ত্রের জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন জরুরি। এটা হওয়া উচিত নয়, ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের সম্পদের উপর একচেটিয়া অধিকার থাকবে, এটা উচিত নয়, তাদের মিডিয়ার উপর একচেটিয়া আধিপত্য থাকবে, এমনটা হওয়া উচিত নয়, ক্ষমতাসীন দলের আইটির মতো সাংবিধানিক ও বিচার বিভাগীয় সংস্থাগুলির উপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ থাকবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের পর নির্বাচনী বন্ড নিয়ে যেসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে তা উদ্বেগজনক ও লজ্জাজনক। এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। গত ৭০ বছরে আমাদের দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন ও সুস্থ গণতন্ত্রের যে ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছে তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।'

    রাহুল গান্ধী সরাসরি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেন, 'আপনারা ভাবুন, যদি আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, এটিএম কার্ড, সব কিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে একটি পরিবারের কী হবে। একদম শেষ হয়ে যাবে।  অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু হয়ে যাবে। ঠিক এটাই কংগ্রেসের সঙ্গে হয়েছে। এটা করা হল নির্বাচন প্রচারের ঠিক দু মাস আগে। আমাদের গোটা অর্থনৈতিক ভিতটাই ভেঙে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনও এমনকী কিছু বলছে না, আমরা কোনও প্রচার করতে পারছি না। এটা অপরাধমূলক অ্যাকশন কংগ্রেসের উপরে। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ক্রিমিনাল অ্যাকশন। এরকম একটি অ্যাকশনে কোনও আদালত, কোনও নির্বাচন কমিশন, মিডিয়া, কেউ কিছু বলছে না। এটা আপনাদের কর্তব্য। আপনাদের লুঠ করা হচ্ছে। আপনাদের গণতান্ত্রিক অধিকার লুঠ করা হচ্ছে। এক মাস আগে কংগ্রেস দলের সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়ে গেছে। ২০ শতাংশ মানুষ কংগ্রেসকে ভোট দেয়। আজ আমরা রেলের টিকিট পর্যন্ত কাটতে পারছি না। কোনও নেতাকে সফর করার খরচ পর্যন্ত দিতে পারছি না। এটি ক্রিমিনাল অ্যাকশন কংগ্রেস দল ও গণতন্ত্রের উপর।' 

    ক্ষমতাসীন দল ভয়ঙ্কর খেলা খেলছে

    খাড়গে বলেন, নির্বাচনী অনুদান বন্ড যেটিকে সুপ্রিম কোর্ট বেআইনি ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে। এর আওতায় বর্তমান ক্ষমতাসীন দল তাদের অ্যাকাউন্টে হাজার হাজার কোটি টাকার বেশি জমা করেছে, অন্যদিকে প্রধান বিরোধীদলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফ্রিজ করা হয়েছে যাতে আমরা সমভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারি। টাকা এটা ক্ষমতাসীন দলের একটি বিপজ্জনক খেলা, এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে কারণ গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে সমতা থাকতে হবে। শাসক দল একটি বিপজ্জনক খেলা খেলছে। এ থেকে স্পষ্ট যে, কোনও রাজনৈতিক দলকে অসহায় করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করাকে সুষ্ঠু নির্বাচন বলা যাবে না। সাধারণ নাগরিকরা দেখতে পাচ্ছেন যে বিজেপি নির্বাচনী অনুদান বন্ড থেকে ৫৬ শতাংশ টাকা পেয়েছে যেখানে কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ১১ শতাংশ।

    কংগ্রেসকে পঙ্গু করার চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী: সনিয়া গান্ধী

    কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, আমরা গণতন্ত্র বাঁচানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। নির্বাচনী বন্ড থেকে বিজেপি অনেক লাভবান হয়েছে। কংগ্রেসকে পঙ্গু করার চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী। এটা খুবই গুরুতর বিষয়, গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ।

    ‘নির্বাচন করার মতো টাকা নেই’

    কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেনের কথায়, যে কংগ্রেস তার দলীয় তহবিল ব্যবহার করতে সক্ষম নয়। আমরা প্রচারের জন্য টাকা খরচ করতে পারছি না। এ কেমন গণতন্ত্র? তারা আমাদের বিরুদ্ধে ৩০ থেকে ৩৫টি পুরনো মামলা খুলে টাকা ব্যবহার করতে দিচ্ছে না। আমাদের কাছে প্রার্থীদের দেওয়ার মতো টাকা নেই। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আমাদের টাকা নেই। কংগ্রেস পার্টিকে আয়কর বিভাগ জারি করা নতুন নোটিশটি ১৯৯৪-১৯৯৫ এর সঙ্গে সম্পর্কিত। ১৪ মার্চ এই নোটিশ দেওয়া হয়। বিষয়টি ৩০ বছরের পুরনো হওয়ায় কেন এই নোটিশ জারি করা হল। প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে কর থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে যখন কংগ্রেসে আয়করের নিয়ম প্রযোজ্য নয়, তাহলে কেন আমাদের টার্গেট করা হচ্ছে? আমাদের শতভাগের বেশি জরিমানা করা হয়েছে। আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা আমাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১১৫ কোটি টাকা জোর করে ব্যাঙ্কগুলিতে স্থানান্তর করেছে। আমাদের ১১০ কোটি টাকার বেশি জরিমানা করা হয়েছে।
  • Link to this news (আজ তক)