• বায়ুদূষণে অস্তিত্ব সঙ্কটে ২৫ শতাংশর বেশি মানুষ, আশঙ্কা ডব্লিউএমও-র রিপোর্টে
    এই সময় | ২২ মার্চ ২০২৪
  • এই সময়: গড় তাপমাত্রায় প্রতি বছরই ভাঙছে আগের বছরের রেকর্ড। অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ণের সামনে নিয়মিত বলি হচ্ছে হাজার হাজার গাছ। ফলে বায়ুদূষণে লাগাম টানার কোনও উপায়ই কাজ করছে না। এমন পরিস্থিতিতে ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজ়েশনের (ডব্লিউএমও) প্রকাশ করা রিপোর্ট উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।সংস্থার সাম্প্রতিক একটি রিপোর্টে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ মিলিয়ে ২০৪ কোটি ৩০ লক্ষর বেশি মানুষের ভবিষ্যৎ আক্ষরিক অর্থেই অন্ধকারে। ইউনাইটেড নেশনসের হিসেব অনুযায়ী পৃথিবীর মোট জনসংখ্যায় ২৫ শতাংশের বেশি এই তিন দেশের বাসিন্দা। সুতরাং, পরিস্থিতির পরিবর্তন না হলে আগামী দিনে বড় ধাক্কা খেতে চলেছে মানবসভ্যতা।

    বড় বিপর্যয়ের সামনে দুনিয়া। বাতাসে গ্রিন হাউজ় গ্যাসের পরিমাণ কমানোর সব রকমের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ভূপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা প্রতি বছরই নতুন রেকর্ডের নজির গড়ছে। শুধু মাটি নয়, একই বিপদ সমুদ্রেও। মহাসাগরগুলোর উপরিতলের তাপমাত্রা ঊর্ধ্বমুখী। জলের অম্লতার পরিমাণ বাড়ছে।

    তার পরিণতিতে বিপদ বাড়ছে প্রবালের নানা ধরনের প্রজাতির এবং সমুদ্রের জল বসবাসকারী বহু প্রাণী ও উদ্ভিদের। সমুদ্রের গভীরে মাটিতে জন্মানো নানা রকমের আগাছা বাড়ছে ভয়াবহ হারে। দেশের বৃহত্তম পর্বতমালাগুলো যে নিরাপদে রয়েছে তা-ও নয়। হিমালয় থেকে তৈরি হওয়া একের পর এক হিমবাহ আকারে ছোট হয়ে যাচ্ছে।

    দক্ষিণ এশিয়া একদিকে পৃথিবীর বৃহত্তম পর্বতমালা হিমালয় এবং অন্য দিকে ভারত মহাসাগর দিয়ে ঘেরা। ফলে প্রকৃতি যদি প্রতিশোধ নিতে শুরু করে, তা হলে সাঁড়াশি আক্রমণ আটকাতে পারবে না এই অঞ্চল। ডব্লিউএমও জানিয়েছে মানুষের ইতিহাসে ২০২৩ ছিল উষ্ণতম বছর। শিল্প বিপ্লবের সময়ে অর্থাৎ ১৭৫০ সাল নাগাদ ভূপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা যত ছিল, ২০২৩-এ এসে গড় তাপমাত্রা তার চেয়ে ১.৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, পর্যন্ত বেড়েছে।

    ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা এই হারে বাড়তে থাকলে আর কোনও ভাবেই আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়া যাবে না। আগামী দিনের বিপদ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে পরিবেশ সংক্রান্ত খবর করেন এমন সাংবাদিকদের সংগঠন, সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্টস ফোরাম (এসএসিসিজেএফ)।

    সংগঠনের ১৮ সদস্যর এগজ়িকিউটিভ কমিটি ইতিমধ্যেই ডব্লিউএমও-র রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এসএসিসিজেএফ-এর প্রেসিডেন্ট সাংবাদিক আশিস গুপ্ত এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘দূষণ নিয়ন্ত্রণের পুরোটাই নির্ভর করছে জনসচেতনতার উপর। সাধারণ মানুষ এই বিপদ সম্পর্কে যত দ্রুত বুঝতে পেরে নিজেরাই পরিবেশ দূষণ থামাবেন, ততই মঙ্গল।’
  • Link to this news (এই সময়)