আমেঠির প্রার্থী তো জ্যোতিষী ঠিক করে দিলেন! তারপর...
এই সময় | ২২ মার্চ ২০২৪
আমেঠি মানেই শিরোনামে। বিশেষত ভোটের আবহে তো বটেই! আরও একটা লোকসভা ভোট শিয়রে। বিজেপি ভরসা রেখেছে স্মৃতির (ইরানি) উপরেই। কিন্তু কংগ্রেসের ক্যান্ডিডেট কে? সপ্তাহখানেক আগে রব উঠছিল, হয় রাহুল না হয় প্রিয়াঙ্কাকে চাই। কংগ্রেস শিবিরের একাংশের পাশাপাশি জোট শরিকরাও বলতে শুরু করেছিল— প্রার্থীর নামে গান্ধী থাকতেই হবে।তারপর হঠাৎ অন্য গল্প। এবার ভোটাররা বলতে শুরু করলেন, রোড না-হলে ভোট দেব না। এর মধ্যে এ দিকে খবর, প্রিয়াঙ্কা-রাহুল তো নয়ই, আমেঠিতে সম্ভবত অ-গান্ধী কেউ দাড়াচ্ছেন। তবে সপ্তাহে-সপ্তাহে চমকে দেওয়া এই আমেঠি নিজেই কিন্তু ভয়ঙ্কর চমকে গিয়েছিল সে বার। রাজনীতিতে না হয় সব চলে।
তা বলে জ্যোতিষীর কথা প্রার্থী দেবে কেউ? তা-ও কি না রাজীব গান্ধীর বিপরীতে? আসুন, স্মৃতির (ইরানি নয়) শরণ নেওয়া যাক। সময়টা আটের দশকের একেবারে গোড়া। সাতাত্তরে পড়ে যাওয়া কংগ্রেস সরকার মোরারজি দেশাই ও চরণ সিং চৌধরি পর্ব পার করে ১৯৮০-র মধ্যবর্তী নির্বাচন জিতে ক্ষমতায় ফিরেছে। আমেঠি থেকে লোকসভায় গিয়েছেন ইন্দিরাজির ছোট ছেলে সঞ্জয় গান্ধী।
গান্ধীদের বাড়িতে ৬ মাসও টিকল না সুখ। ওই বছরই ২৩ জুন এক বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান সঞ্জয়। যার অর্থ ফের শূন্য আমেঠি। তড়িঘড়ি ডাকা হলো উপনির্বাচন। মোক্ষম চাল চাললেন ইন্দিরা— সঞ্জয়ের ফেলে যাওয়া কুর্সি দখলের দৌড়ে নামিয়ে দিলেন বড় ছেলে রাজীবকে।
এ বার? রাজীবকে জেতাতে মরিয়া কংগ্রেসের প্রচারের বহর দেখে হকচকিয়ে গেল আমেঠি। ইন্দিরার পাশাপাশি কংগ্রেসের তাবড় সব নেতারা কার্যত ডেলি প্যাসেঞ্জারি শুরু করে দিলেন আমেঠিতে। কিন্তু চমকের তখনও বাকি ছিল। রাজীবের বিপরীতে দাঁড়ালেন জনতা দলের লড়াকু নেতা শরদ যাদব।
পরে এই শরদ একটি ইন্টারভিউয়ে বলেছিলেন, ‘কিছুটা হলেও তো রাজনীতি বুঝি! তাই সে বার আমেঠি কেন্দ্র থেকে কিছুতেই দাঁড়াতে চাইনি। কিন্তু ইন্দিরাজির সরকার ফেলতে মরিয়া চরণসাহেব গোঁ ধরে বসে থাকলেন. তিনি আর জনসঙ্ঘের নেতা নানাজি দেশমুখ প্রায় আমাকে বগলদাবা করে এক জ্যোতিষীর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন।চরণসাহেব অসম্ভব বিশ্বাস করতেন জ্যোতিষশাস্ত্রে। তাই জ্যোতিষী গ্রিন সিগন্যাল দিতেই আমার আর মুখ খোলার জায়গা রইল না। নেমে পড়লাম ভোটে।’
চমকে গিয়েছিল আমেঠি। রেজাল্টে অবশ্য তেমন চমক ছিল না। রাজীবই এলেন সঞ্জয়ের কুর্সিতে। শরদ হারলেন। পরে চরণসাহেবের প্রিয় সেই জ্যোতিষী কী হাল হয়েছিল, তা অবশ্য জানা নেই।