• Arvind Kejriwal Arrested: 'জবাব দেবে ইন্ডিয়া!' কেজরির গ্রেফতারি নিয়ে হুঁশিয়ারি রাহুলের, কী বলছেন বিরোধী নেতারা?
    এই সময় | ২২ মার্চ ২০২৪
  • ভোটের মুখে টালমাটাল রাজধানীর রাজনীতি। গ্রেফতার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আবগারি দুর্নীতি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। আবগারি দুর্নীতির মামলায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে তাঁর বাড়িতে পৌঁছন ইডি আধিকারিকরা। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে তাঁকে গ্রেফতার করাহয়। কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির উপর ফুঁসে উঠেছে দল। তীব্র বিরোধীতা করে আপের বক্তব্য, প্রয়োজনে প্রয়োজনে জেলে বসেই সরকার চালাবেন কেজরিওয়াল। কিন্তু কোনও ভাবেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন না। পাশাপাশি এও জানিয়েছেন কেজরিওয়ালকে ইডির গ্রেফতারি তুলে নিতে এই অবস্থায় রাতেই জরুরি ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে আম আদমি পার্টি।দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় আটবার ইডির সমন এড়িয়েছেন কেজরিওয়াল। বৃহস্পতিবার ইডি ফের কেজরিওয়ালকে তলব করেছিল। তাতেও সাড়া দেননি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। বরং ইডির ডাকে সাড়া না দিয়ে দিল্লির হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মুখ্যমন্ত্রী। তবে আদালত তা খারিজ করে দেয়। এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কেজরির বাড়িতে হানা দেন ইডি আধিকারিকদের দল। প্রায় দুই ঘণ্টা চলে জিজ্ঞাসাবাদ। এরপর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

    দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ইডি হানার পরই তাঁর বাসভাবনের সামনে ভিড় জমান আপ কর্মী-সমর্থকদের। বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কেজরিওয়ালের বাসভবনের সামনে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এর পরেই কেজরিকে গ্রেফতার করা হয় ও সেখান থেকে তাঁকে ইডির সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়।

    কেজরির গ্রেফতারির পিছনে বিজেপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষামন্ত্রী অতিশি মারলেনা। তাঁর বক্তব্য, 'গত দুই বছর ধরে আবগারি দুর্নীতি মামলায় তদন্ত করছেন অন্তত ৫০০ আধিকারিক। তারপরও এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হল না এক টাকাও। কোন যুক্তিতে কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করা হল? আমরা প্রথম থেকেই বলে এসেছি প্রয়োজনে জেলে বসেই সরকার চালাবেন মুখ্যমন্ত্রী। এমন কোনও আইন ভারতে নেই যাতে বাধা দেওয়া যাবে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী দোষী সাব্যস্ত হননি।'

    দেখুন অতিশির টুইট

    কেজরির গ্রেফতারির পর মুখ খুলেছেন দেশের তাবড় নেতারা। বিজেপি ইডির পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে। অন্যদিকে সমালোচনায় সরব বিরোধীরা। কেজরিওয়ালকে ইডির গ্রেফতারি প্রসঙ্গে বিজেপির শেহজাদ পুনাওয়ালা বলেন, ' কেজরিওয়ালের পদক্ষেপগুলি ইঙ্গিত করছে যে তিনিই আসলে দুর্নীতির কিংপিং।' আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরির নবমবার ইডির হাজিরা এড়ানো প্রসঙ্গে কটাক্ষ করেন পুনেওয়ালা।

    অন্যদিকে বাংলার বিজেপি প্রেসিডেন্ট সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'কিছু দিন আগেই আবগারি দুর্নীতি মামলায় বিআরএস নেতা কে কবিতাকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। তখনই ইঙ্গিত মিলেছিল এই মামলায় এবার হয়তো কোনও মাথাকে গ্রেফতার করা হতে পারে। এ খুব স্বাভাবিক ব্যাপার যে দুর্নীতি মামলায় সব শেষে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করা হবে। কারণ এর আগে দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে জেলবন্দি তিনি। কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি সময়ের অপেক্ষা ছিল। সময় হয়েছে, তাই গ্রেফতার হয়েছেন।'

    দেখুন সুকান্ত মজুমদারের টুইট

    কেজরির গ্রেফতারিতে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, 'নির্বাচনে ফায়দা লুঠতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে এভাবে নিশানা করা সম্পূর্ণ ভুল ও অসাংবিধানিক। রাজনীতির স্তরকে এভাবে নামিয়ে দেওয়া প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর সরকারের জন্যই শোভা পায় না। নির্বাচনী লড়াইয়ে আপনার সমালোচকদের সাথে লড়াই করুন, তাদের সাহসিকতার সাথে মোকাবেলা করুন এবং অবশ্যই তাদের নীতি এবং কাজের ধরনকে আক্রমণ করুন - এটিই গণতন্ত্র। কিন্তু এভাবে দেশের সব প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতাকে নিজের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণে ব্যবহার করা এবং চাপ সৃষ্টি করে দুর্বল করা গণতন্ত্রের প্রতিটি নীতির পরিপন্থী।'

    দেখুন প্রিয়াঙ্কার টুইট

    এরই পাশাপাশি কংগ্রেসের অ্য়াকাউন্ট ফ্রিজ করা প্রসঙ্গে বিজেপিকে নিশানা করেন প্রিয়াঙ্কা। বলেন, 'দেশের বৃহত্তম বিরোধী দল কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে, সমস্ত রাজনৈতিক দল এবং তাদের নেতারা দিনরাত ইডি, সিবিআই, আইটি-র চাপে রয়েছে, একজন মুখ্যমন্ত্রীকে জেলবন্দি করে রাখা হয়েছে, এখন অন্য মুখ্যমন্ত্রীও। জেলবন্দি করার প্রস্তুতি চলছে। এমন লজ্জাজনক দৃশ্য স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম দেখা যাচ্ছে।'

    অরবিন্দের গ্রেফতারির নিন্দা রাহুল গান্ধীরও। অরবিন্দের গ্রেফতারির জবাবে রাহুল বিজেপি-সহ প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, 'একজন ভীত স্বৈরশাসক এক মৃত গণতন্ত্র তৈরি করতে চায়। মিডিয়া-সহ সব প্রতিষ্ঠান দখল, দল ভাঙা, কোম্পানি থেকে চাঁদাবাজি, প্রধান বিরোধী দলের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজের মতো 'শয়তানি শক্তি' প্রয়োগ করেই খান্ত হয়নি। এবার নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীদের গ্রেফতার করা সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইন্ডিয়া জোট-এর উপযুক্ত জবাব দেবে।
  • Link to this news (এই সময়)