BJP In West Bengal: কোন কেন্দ্রে কে? প্রার্থী বাছাই নিয়ে দ্বন্দ্ব অব্যাহত বিজেপিতে
এই সময় | ২২ মার্চ ২০২৪
এই সময়: বাংলায় ৪২টির মধ্যে ২৩টি আসনের প্রার্থী তালিকা এখনও ঘোষণা করতে পারেনি বিজেপি। আগামী শনিবার দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকে বসছেন বঙ্গ-বিজেপির দুই শীর্ষ নেতা সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে দলের অন্দরে প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্বের নিষ্পত্তি হয়ে গেলে রবিবারই বাংলার বাকি সব আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দেবে বিজেপি।মেদিনীপুর, রায়গঞ্জ, বীরভূম, কৃষ্ণনগর, আসানসোল মূলত এই পাঁচটি আসনে প্রার্থী নির্বাচন নিয়েই বিজেপিতে বেশ কিছুদিন ধরে জটিলতা চলছে। এর মধ্যে মেদিনীপুর কেন্দ্রটি নিয়ে দড়ি টানাটানি চলছে সব থেকে বেশি। সূত্রের খবর, এ বার আর ওই কেন্দ্র থেকে দিলীপ ঘোষকে টিকিট দিতে চাইছে না বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তাঁকে বিকল্প হিসেবে বেশ কয়েটি আসনে লড়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও দিলীপ অনড় মেদিনীপুরেই। কিন্তু ওই কেন্দ্রে দিলীপের বদলে প্রাক্তন পুলিশ অফিসার ভারতী ঘোষকেই পছন্দ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের। এ বিষয়ে বিজেপির অন্দরে চাপা উত্তেজনা রয়েছে।
দলের একাংশের দাবি, শেষমেষ ভারতীকেই মেদিনীপুর থেকে বিজেপির টিকিট দিলে দিলীপকে সরে যেতে হবে বর্ধমান-দুর্গাপুরে। সেক্ষেত্রে ওই কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়াকে আসানসোল কেন্দ্র থেকে টিকিট দিতে পারে বিজেপি। কারণ, ওখানে ভোজপুরী শিল্পী পবন সিং-কে বিজেপি টিকিট দিলেও তিনি ওই কেন্দ্র থেকে ভোটে না-লড়ার কথা ঘোষণা করে দিয়েছেন। ফলে আলুওয়ালিয়াকে ‘পুর্নবাসন’ দেওয়ার পাশাপাশি আসানসোলের ‘প্রার্থী সমস্যা’ থেকে রেহাই পাবেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
দিলীপের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, গত ১৪ মার্চের পরে দিলীপকে তাঁর নিজের কেন্দ্রে দেখা যায়নি। গত তিনমাস মেদিনীপুরে ঘাঁটি গেড়ে থাকলেও লোকসভা ভোটের মুখে আচমকা তাঁর সেখান থেকে সরে আসা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে সমস্যা রয়েছে রায়গঞ্জেও। মেদিনীপুরের মতো এই কেন্দ্রেও সিটিং এমপি বদলের পক্ষপাতী গেরুয়া শিবির। সেক্ষেত্রে রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরিকে কোন কেন্দ্রে পাঠানো হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সূত্রের খবর, দিলীপের মতো তিনিও নিজের কেন্দ্র ছাড়তে রাজি নন। বিজেপির একাংশের দাবি, এখনও নিশ্চিত নয় যে রায়গঞ্জ থেকে কাকে টিকিট দেওয়া হবে। তবে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব যে সিটিং এমপিদের বদল করার পক্ষপাতী নন, সেটা তাঁরা আগেই জানিয়েছিলেন দিল্লিকে।
এর পাশাপাশি কৃষ্ণনগর কেন্দ্রটি এ বারের লোকসভা ভোটে যথেষ্ট সম্ভাবনাময় বলে মনে করছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু সেখানে কাকে টিকিট দেওয়া হবে, সেটাই এখনও ঠিক করতে পারছে না বিজেপি। বুধবারই বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির সদস্য অমৃতা রায়। দলের একাংশের দাবি, তাঁকেই কৃষ্ণনগর থেকে টিকিট দেওয়ার কথা ভাবছে বিজেপি। কিন্তু রাজস্থান অথবা উত্তরপ্রদেশের মতো বাংলায় ‘রাজা-রানি’ সেন্টিমেন্ট কাজ করে না বলেই পদ্ম-শিবিরের অনেকের অভিমত।
সেক্ষেত্রে অমৃতাকে টিকিট দিয়ে কোনও লাভ হবে কি না, তা নিয়ে বিজেপির অন্দরেই প্রশ্ন আছে। গোড়াতে ঠিক ছিল বীরভূমে দলের কোনও সাংগঠনিক নেতাকে টিকিট দেওয়া হবে। কিন্তু আচমকাই বিজেপির অন্দরে জোর জল্পনা ওই কেন্দ্রে কোনও সদ্য প্রাক্তন পুলিশ কর্তা পদ্ম-চিহ্নে ভোটে লড়বেন। শ্রীরামপুর ও আরামবাগ কেন্দ্রে কারা বিজেপির টিকিটে লড়বেন তা নিয়েও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা রয়েছে।
সূত্রের খবর, শ্রীরামপুরে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে দুই আইনজীবী কবীর শঙ্কর বসু এবং কৌস্তভ বাগচির নাম নিয়ে চর্চা চলছে। আরামবাগে চর্চায় রয়েছে অর্চনা মজুমদার ও স্থানীয় বিজেপি নেতা মধুসূদন বাগের নাম। প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে গেরুয়া শিবিরের অন্দরের এই জটিলতা সম্পর্কে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘কোনও জটিলতা নেই। শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের বৈঠক আছে। তারপরেই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দেওয়া হবে।’