এই সময়: আধার কার্ড নিষ্ক্রিয়করণ নিয়ে এবার কেন্দ্রের কাছে জবাব তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। একটি জনস্বার্থ মামলায় বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামার মাধ্যমে কেন্দ্র জানাবে, বাংলার বেশ কিছু বাসিন্দার আধার কার্ড কেন বাতিল করা হয়েছে। কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল যদিও যুক্তি দিয়েছিলেন এই মামলার কোনও ভিত্তি নেই। কিন্তু বেঞ্চ জানতে চেয়েছে, কেন এবং কী করে এই ঘটনা ঘটল।সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে অনেকগুলি পরিবারের কাছে আধার কার্ড ডিঅ্যাক্টিভেশনের মেসেজ আসাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক শুরু হয়। তারপরে দেখা যায়, রাজ্যের আরও বিভিন্ন জেলায় আধার নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। যদিও এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল নেতৃত্ব প্রতিবাদে সরব হন। ফের আধার সক্রিয় করার কথা জানান আধার কর্তৃপক্ষ। কলকাতা হাইকোর্টে করা আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রায় এক হাজারের উপর আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে। কেন এভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জনস্বার্থ মামলাটি করেছে ‘জয়েন্ট ফোরাম এগেন্সট এনআরসি অ্যান্ড এএনআর’। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি ছিল।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, কেন্দ্র থেকে আধার কার্ড নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। মামলাকারীর আর্জি, যাদের কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়েছে তাদের অবিলম্বে বিষয়টি খোলসা করে জানানো হোক। মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকেও যে এনিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তা-ও উল্লেখ করা হয় মামলায়।
শুনানিতে কেন্দ্র এদিন দাবি করে, এই মামলার কোনও গুরুত্ব নেই। কেন্দ্রের আইনজীবী জানান, যাঁরা বিদেশের নাগরিক, তাঁদের ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য। কারও আধার কার্ড আসলে বাতিল করা হয়নি। কোনও ‘এরর’-এর জন্য এটা ঘটেছে। এই যুক্তি শোনার পরেই কেন্দ্রকে হলফনামা দিতে বলে ডিভিশন বেঞ্চ। কী কারণে এমনটা হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। আগামী ২৪ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিতে হবে কেন্দ্রকে।
ভোটের আগে আধার কার্ড ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই তিনি ঘোষণা করেন, যাঁদের আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হচ্ছে, তাঁরা যাতে সরকারি সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত না-হন, সেজন্য রাজ্য একটি পোর্টাল চালু করছে। যাঁদের আধার নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে এই পোর্টালে গিয়ে তাঁরা অভিযোগ জানাতে পারবেন। তখন বিজেপির পক্ষে থেকে দাবি করা হয়, প্রযুক্তিগত কোনও সমস্যা হয়ে থাকতে পারে। সেই কারণেই এমনটা ঘটেছে। এতে চিন্তার কোনও কারণ নেই।