Restaurant In Kolkata : হোয়াট ইজ স্পেশ্য়াল? জেন জ়ি-দের আকর্ষণে নয়া ভাবনা শহরের রেস্তরাঁ-ক্যাফেগুলোর
এই সময় | ২৩ মার্চ ২০২৪
শুধু ভালো খাবার আর পরিবেশ এখন যথেষ্ট নয়। জেন জ়ি-দের আকর্ষণ করতে অন্যরকম কিছু করার কথা ভাবছে রেস্তরাঁ আর ক্যাফেগুলো। লিখছেন দেবলীনা ঘোষদক্ষিণ কলকাতার লেকের কাছে সদ্য খুলেছে ‘সয় ইয়াম’ রেস্তরাঁ। এখানে পাওয়া যাচ্ছে লাইভ কোরিয়ান গ্রিল। তবে রেস্তরাঁ এখানেই কিন্তু থেমে যায়নি। এটাকে একটা এক্সপেরিয়েন্স সেন্টারের মতো করে তৈরি করা হয়েছে। জাপানিজ় ইজ়াকায়া এক্সপেরিয়েন্স দেবে এই রেস্তরাঁ। রেস্তরাঁর অন্যতম কর্ণধার ঋভু ওয়াংড়ি গ্রাফিটি আর্টিস্ট।
পার্ক হোটেলের পাশে যে বিরাট গ্রাফিটি রয়েছে, সেটা তাঁরই করা। তাই এই রেস্তরাঁয় পাওয়া যাবে বিভিন্ন গ্রাফিটি সাপ্লাই। ঋভু আর প্রভাকর ইয়নজ়োন-এর অন্য রেস্তরাটিও বেশ নামকরা, ‘মোমো আই অ্যাম’। তাই যখন এই রেস্তঁরাটি খোলার কথা ভাবেন তাঁরা, অন্যরকম কিছু করবেন তা ভাবাই ছিল। শুধু কোরিয়ান বার-বি-কিউ নয়, এই রেস্তরাঁর ইন হাউজ বেকারিও আছে। আছে কোয়ার্কি টি-শার্ট স্টোর।
কিছুদিনের মধ্যে এই রেস্তরাঁ এতটাই জনপ্রিয় হয়েছে, শহরের এক খাদ্যরসিক নামী পরিচালক নাকি প্রায়ই পৌঁছে যাচ্ছেন এখানে। না হলে বাড়িতে অর্ডার করছেন এখানকার খাবার, খবর এমনই। দক্ষিণের পাশাপাশি সল্ট লেকের ক্যাফে ‘ক্যালকাটা ৬৪’ এবার ড্রোনে করে কফি সার্ভ করতে চলেছে। তবে এই প্রক্রিয়া শুরু হতে এখনও বেশ কয়েকদিন দেরি আছে বলে জানা গেল রেস্তরাঁর তরফ থেকে।
কারণ ড্রোন চালাতে গেলে সেফটি দেখে নিতে হবে, তেমনই অনুমতিও নিতে হবে। তবে এই প্রক্রিয়া যে শুরু হবে সে বিষয়ে নিশ্চিত করলেন রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষ। এটা হলে যে স্টোরি, ভ্লগ করতে মানুষ পৌঁছে যাবেন, তা বোঝা যাচ্ছে এখন থেকেই। ‘হ্যাশট্যাগ’, ‘দ্য রুটস’ সহ বেশ কয়েকটি রেস্তরাঁর ইউএসপি হলো শহরের স্কাইলাইন দারুণ দেখা যায় এখান থেকে।
কিছুদিন আগে ‘সোল স্টোরি’ কোরিয়ান রেস্তরাঁয় আয়োজন করা হয়েছিল ইন্দো-দুবাই ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের। এই ফেস্টিভ্যালে বেশ কিছু জনপ্রিয় কোরিয়ান ছবিও দেখানো হয়। কোরিয়ান ফিল্ম এনথুজ়িয়াস্টদের কথা মাথায় রেখেই এই আয়োজন বলে জানান উদ্যোক্তা সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, ‘অনেক সময়ে রেস্তরাঁয় খাওয়া আর সিনেমা হলে গিয়ে মুভি দেখা, দু’টো সম্ভব হয় না। খরচের সমস্যা থাকে, যাতায়াতের সমস্যাও থাকে। কিন্তু এখানে এলে খাওয়ার পাশাপাশি ছবি দেখার সুযোগ থাকবে। কিছুটা সময় আনন্দে কাটবে। ওল্ড এজ হোম, অরফ্যানএজের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটানোও আমাদের উদ্দেশ্য ছিল। এই আয়োজনে তাঁদেরও সামিল করা হয়েছিল।’
একটু অন্যরকম কিছু করার চেষ্টা এত কেন জনপ্রিয় হচ্ছে? এই প্রশ্নের জবাবে শহরের এক ফুড বিশেষজ্ঞ জানালেন, ‘এখন মানুষ অনেক বেশি ট্রাভেল করেন। তাই তাঁরা কোথায় কী হচ্ছে তা জানেন। সেখানে শুধু ভালো খাবার দিয়ে রেস্তরাঁ ব্যবসা টিকিয়ে রাখা বেশ মুশকিল। তবে এটাও ঠিক, যতই চমক থাকুক না কেন, খাবার ভালো না হলে কিন্তু রেস্তরাঁ চলবে না। কারণ ভালো খাবারের কোনও সাবস্টিটিউট নেই।’
কলকাতার পুরোনো রেস্তরাঁ আমিনিয়া। এরা এখনও বিশ্বাস করে ভালো খাবারের কোনও জুড়ি নেই। তাই খাবারের মেনু নিয়েই এক্সপেরিমেন্ট করতে চায় তারা। শীতের মেনুতে তারা নিয়ে এসেছিল সুস্বাদু গাজরের হালুয়া। নল্লি নিহারি-তাফতান, স্পেশ্যাল পুডিং, গোস্ট সাগওয়ালা, চিকেন কান্দা মশলা, মাটন লাখনউয়ি বিরিয়ানি সহ নানা পদ ছিল এই তালিকায়।
সেই সব খাবার যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। জেন জ়ি-রা কোনটাকে এগিয়ে রাখছেন তা হলে? ২২ বছরের প্রজ্ঞা রায় বলছেন, ‘অবশ্যই যেখানে অন্যরকম কিছু আছে। কারণ সেখানকার ছবি আর নতুনত্বটা তুলে ধরতে পারলে এতে সোশ্যাল মিডিয়ায় রিচ বাড়ে। ভালো খাবারের গুরুত্ব অস্বীকার করছি না। কিন্তু সেই খাবার ডেলিভারি অ্যাপ থেকে আনিয়ে খাব। রেস্তরাঁয় যাব না।’