বাংলায় রাজস্থান' গ্রীষ্মের শুরুতেই উত্তরের গ্রামে গ্রামে এ কী সংকট...
২৪ ঘন্টা | ২৩ মার্চ ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: না এটা রাজস্থান বা অন্য কোন শুখা রাজ্যের ছবি নয়। এ ছবি দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের মালঞ্চা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার। গ্রীষ্মের শুরুতেই জলের হাহাকার পড়েছে এলাকা জুড়ে। পানীয় জল আনতে সাইকেল চালিয়ে গ্রামের মানুষরা যাচ্ছেন ২ কিলোমিটার দূরে। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়েছিল। কিন্তু কোনটা ৬ মাস কোনটা এক বছর চলেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তারপর আর সেই সমস্ত প্রকল্পকে চালু করার কোন উদ্যোগ নেই নি স্থানীয় পঞ্চায়েত বা প্রশাসন। এমনটাই অভিযোগ গ্রামবাসীদের। এখনও সেভাবে গ্রীষ্ম শুরু হয়নি, আগামী দু মাস পর এলাকার পানীয় জলের হাল কি হবে তা ভেবেই শঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা। তপন ব্লকের মালঞ্চা, গোফানগর, লস্করহাট, ডাইং সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতি বছরই তীব্র জলকষ্ট দেখা দেয়। ভৌগোলিক কারণে এই সমস্ত অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর এতটাই নিচে যে সাধারণভাবে জল ওঠে না। কোথাও সাবমারসিবল, কোথাও মার্ক টু টিউবল বসিয়ে জলের ব্যবস্থা চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাও বারবার বিফল হয়। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের পক্ষ থেকে পানীয় জলের পাইপলাইন বসালেও সেখান থেকেও নিয়মিত জল পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। যার ফলে ছুটতে হচ্ছে দু কিলোমিটার দূরে। গ্রামের মহিলা থেকে পুরুষ সকলেই সাইকেল নিয়ে ছুটছেন পানীয় জলের সন্ধানে।
ডাইং গ্রামে অন্তত আড়াইশো মানুষের বসবাস। ২১ সালে এই গ্রামে সোলার পাম্প সেট লাগিয়ে একটি সাবমারসিবল বসানো হয়েছিল এবং সেখানে ১ হাজার লিটারের ওভারহেড ওয়াটার ট্যাঙ্ক বসানো হয়। লক্ষ্য ছিল গ্রামবাসীকে পানীয় জলের টোয়েন্টিফোর ইন টু সেভেন 24×7 সুযোগ দেওয়া। ফিফটিন ফিন্যান্স ২০২০-২১ খাতে ২ লাখ ৯৯ হাজার ৭০০ টাকা খরচ করে এই পানীয় জলের প্রকল্প বসানো হয়। কিন্তু মাত্র বছরখানেকের মধ্যেই সেই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়। প্রথম থেকেই এই প্রকল্পের মেশিনপত্র বারবার খারাপ হতে থাকে বলে অভিযোগ।সংশ্লিষ্ট দফতরকে খবর দিয়েও তারা বার কয়েক মেরামত করে গেলেও পরে আর হাজার ডাকাডাকিতেও তাদের দেখা পাওয়া যায়নি। যার ফলে গ্রামবাসীদের এখন দু কিলোমিটার দূরে জল আনতে যেতে হয় এ এছাড়া নিত্য নৈমিতিক কাজের জন্য পুকুরের পচা জল ভরসা। বাসন ধোয়া, কাপড় কাচা বা স্নান করার জন্য পুকুরেই জলই ব্যবহার করেন এই এলাকার মানুষ। কিন্তু সেই জল কতদিন থাকবে তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। কারণ গ্রীষ্মের মাঝামাঝিতে গিয়ে এই সমস্ত পুকুর শুকিয়ে যাবে তখন পানীয় জলের ব্যবস্থা কি হবে তা নিয়ে এখন থেকেই চিন্তায় রয়েছেন গ্রামবাসীরা।বছর দশেক আগে গঙ্গারামপুর সাবডিভিশনের পুনর্ভবা নদীর থেকে জল তুলে তপন ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প শুরু হয়েছিল। সেই প্রকল্প আজও সম্পূর্ণ হয়নি। যার ফলে পানীয় জলের সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। তপন ব্লকের শুখা অঞ্চল গুলিতে।