ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিঃশর্তে নাগরিকত্ব দিতে হবে। এই দাবিতে নেতাজি নগরের (Netaji Nagar)মৃত যুবকের বাড়ির সামনে দিনভর অনশনে নামল অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা। শনিবার দিনভর নেতাজি নগরের এই অনশনের নেতৃত্বে রয়েছেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী। রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে তিনি জানাচ্ছেন, ?সেই আইনে আগুন, যা আমাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়।? এদিনের অনশনে হাজির সংগঠনের সম্পাদক শ্রাবণী মুখোপাধ্যায়, ডক্টর কিংশুক গোস্বামী, শম্পা ঘোষ, জিতেন গোস্বামী, রক্তিম চক্রবর্তী-সহ আরও অনেকে।
দিন দুই আগে, বৃহস্পতিবার নেতাজি নগরের বাসিন্দা যুবক দেবাশিস সেনগুপ্তের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তাঁর মামারবাড়ি সুভাষগ্রাম থেকে। পরিবারের সদস্যদের দাবি, CAA আতঙ্কে ভুগছিলেন বছর তেত্রিশের দেবাশিস। নথিপত্র নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। আর সেই হতাশা থেকেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে রাজনীতি শুরু হয়েছে। তবে এই ঘটনাকে ইস্যু করে সিএএ, এনআরসি-র বিরোধিতায় নেমেছে হিন্দু মহাসভা (Hindu Mahasabha)।
এনিয়ে অনশন মঞ্চ থেকে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর দাবি, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) নিয়ে সব রাজনৈতিক দল রাজনীতি করলেও অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার অবস্থান সবচেয়ে নৈতিক ও বিজ্ঞানসম্মত। তিনি বলেন, সমস্ত মুসলমান ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ যুগের পর যুগ ধরে এই ভারতের মাটিতে বসবাস করেন এবং ?বসুধৈব কুটুম্বকম? অর্থাৎ সর্বধর্ম সমন্বয়ের সনাতনী আদর্শকে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, তাঁদের স্থান হিন্দু মহাসভার হৃদয়ে। তাঁদের দেশছাড়া হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। কিন্তু যাঁরা এই দেশটাকে ধর্ম প্রচারের ক্ষেত্র বানিয়ে একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে ধর্মীয় জেহাদ বা মৌলবাদকে প্রশ্রয় দেবে, তাদের জন্য ভারতের মাটি নয়। তাঁদের অবশ্যই এনআরসি-র (NRC) লাইনে দাঁড়িয়ে নিজেদের নাগরিকত্বের পরিচয় দিতে হবে। তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন-সহ সমস্ত সনাতনী যাঁরা দেশভাগের বলি হয়েছেন, তাঁদের এনআরসি-র লাইনে দাঁড়ানোর কোনও প্রশ্নই নেই। তাঁদের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাষ্ট্রের আত্মাকে বিনষ্ট করার মত অপরাধ। এ প্রসঙ্গে চন্দ্রচূড় গোস্বামী জানান, এ বছর হিন্দু মহাসভার রুবি হাসপাতাল মোড়ের বিখ্যাত দুর্গাপূজার থিমও ছিল ?মতুয়া-সহ সমস্ত সনাতনীদের নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবি?।