Holi 2024 : দোলের বাজারে কলকাতা দখল মোদী মাস্ক আর চার্জিং পিস্তলের
এই সময় | ২৩ মার্চ ২০২৪
‘ওইটাই চাই। সাদা দাড়ির ওই বুড়ো মানুষটাকে রোজ টিভিতে দেখি’— অবস্থানে অনড় চার বছরের সায়ন। বাবার সঙ্গে জানবাজার দিয়ে যাওয়ার সময়েই তার নজর আটকেছে রবারের পাতলা মুখোশটার দিকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখের আদলে ওই মুখোশ তৈরি। দোলের মুখে শহরে বিপুল জনপ্রিয়তা ওই মুখোশের।বিক্রেতা বীরেন্দ্র কুমার সারা দুপুর ধরেই ‘মোদী মাস্ক দেড়শোয়’ বলে অবিরাম হেঁকে গিয়েছেন। বিক্রিও হয়েছে যথেষ্ট। তবে শুধুই মুখোশ নয়, রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছাপা লম্বা পিচকিরিও। হার্ড প্লাস্টিকের বাক্সটা খুলতেই ভেতরে শোয়ানো ৯ এমএম পিস্তলটায় নজর পড়ে। পাশেই শোয়ানো ওর ‘ম্যাগাজ়িনটা’।
বিক্রেতা রবি পাসোয়ান সগর্ব ঘোষণা, ‘নিশ্চিন্তে নিয়ে যান। ৪৫ ফুট দূর পর্যন্ত নিখুঁৎ ‘হিট’ করে দেবে। দাম মাত্র ৯০০ টাকা।’ বলে কি! কলকাতার ফুটপাথে এমন খুল্লামখুল্লা ৯ এমএম পিস্তল বিক্রি হচ্ছে! তা-ও মোটে ৯০০ টাকা! কিন্তু পিস্তলের পাশে একটা ইউএসবি চার্জিং কর্ড কী করছে? দোকানদার রবি বুঝিয়ে দিলেন, আধ ঘণ্টা চার্জ দিয়ে নেবেন। পরের তিন ঘণ্টা ‘অ্যাকশন’ চলবে।’
এই ‘অ্যাকশন’ অবশ্য রং ভরা গুলি চালাচালির অ্যাকশন। অবিকল সত্যিকারের ৯ এমএম পিস্তলের মতো ম্যাগাজ়িনে রংয়ের গুলি ভরে শুধু ট্রিগারে চাপ দেওয়ার অপেক্ষা। অবশ্য তার আগে পিস্তলে চার্জ দিয়ে নিতে হবে। দোলের বাজারে এবার শুধু ছোটদের কাছেই নয়, সব মহলেরই নজর কেড়েছে ইলেকট্রনিক গান।
ইউএসবি কর্ডে রং ছোড়ার ওই পিচকিরি বন্দুক আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত চার্জ দিতে হবে। তাহলেই পরের কয়েক ঘণ্টা ওই বন্দুক দিয়ে নন-স্টপ রং ছোড়া যাবে। যদি পিচকিরি লেজ়ার গানের মতো আকৃতির হয়, তাহলে সেটি বাড়ি নিয়ে যেতে হলে দু’হাজার টাকা দিতে হবে। চার্জ দেওয়া এই ইলেকট্রনিক পিচকিরিই এবারের দোলে সাড়া ফেলে দিয়েছে শহরে।
বিপুল জনপ্রিয়তা ‘কালার থান্ডারেরও’। আগুন নেভানোর রাসায়নিক ভরা সিলিন্ডারের মতো দেখতে এই সিলিন্ডারের দাম নির্ধারিত হচ্ছে তার ওজনের ওপর। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, ৪ কেজির সিলিন্ডার ১৮০০ টাকা এবং ৬ কেজির সিলিন্ডার ২২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রয়েছে ‘ডবল ডিসচার্জ’ সিলিন্ডারও। ৩ হাজার টাকা মূল্যের এই সিলিন্ডারে দু’টি নজ়ল রয়েছে।
প্রেশার বাটনে চাপ দিলে ডবল ডিসচার্জ সিলিন্ডার থেকে তীব্র গতিতে দু’টি আলাদা রংয়ের ধোঁয়া বার হবে। অন্য সিলিন্ডার থেকে একরঙা ধোঁয়া পাওয়া যাবে। এছাড়াও জনপ্রিয়তার তুঙ্গে রয়েছে ‘গুলাল পপার’। প্রায় এক হাত লম্বা এই ‘রংবাজির’ গোড়ার দিকের একটা প্যাঁচ ঘুরিয়ে তাকে দূরে ছুড়ে দিলে একই সঙ্গে ঘন রংয়ের ধোঁয়ার পাশাপাশি এক হাজারের কাছাকাছি রঙিন কাগজের কুঁচি অনেকটা এলাকাকে রঙিন করে দেবে বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।