• দখলি জমিতেও লোন! তদন্ত চাইছে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি
    এই সময় | ২৩ মার্চ ২০২৪
  • এই সময়: দখল করা চাষের জমি। পরে জমির চরিত্র বদলে তাকে মেছো ভেড়িতে পরিণত করা হয়েছে। সেই জমিতে মাছ চাষে মিলেছে ব্যাঙ্ক ঋণও! সন্দেশখালিতে কয়েকটি সংস্থার করা সরেজমিন তদন্তে উঠে এসেছে এমনই তথ্য। আরও জানা গিয়েছে, বিঘের পর বিঘে চাষের জমিতে নোনা জল ভরে দেওয়ার জন্য এলাকার বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হয়েছে।জোর করে জমি কেড়ে নেওয়া এবং ইজারা টাকা না দেওয়ায় অনেকে পরিযায়ী শ্রমিক হতে বাধ্য হয়েছেন। শুক্রবার এপিডিআর, শ্রমজীবী মহিলা সমিতি, আমরা এক সচেতন প্রয়াস এবং পশ্চিমবঙ্গ খেত মজুর সমিতি—এই সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট’ প্রকাশ করা হয়।

    তাদের দাবি, হাইকোর্টের কোনও বিচারপতিকে দিয়ে ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত হোক। যদিও সন্দেশখালিতে একাধিকবার ঘুরে আসা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের বক্তব্য, ‘রাজ্যের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই জমি ফেরানোর কাজ শুরু হয়েছে। সরকার সবরকম ভাবে চেষ্টা করছে। সন্দেশখালি নিয়ে শুধু রাজনীতি করে অশান্তি ছড়ানোর কোনও অর্থ নেই।’

    সংস্থাগুলির তরফে সমাজকর্মী অনুরাধা তলোয়ার-সহ বাকিদের বক্তব্য, গত তিন বছরে জমি দখলের পরিমাণ সর্বোচ্চ। এই এলাকায় মাছের ভেড়ি আগেও ছিল। কিন্তু গত তিন বছরে জমি দখল করে মুরগি খামার, ভেড়ি করার প্রবণতা বেড়েছে কয়েক গুণ। প্রথম বছর টাকা দেওয়া হলেও পরের দুই বছর জমি লিজ়ের টাকা পাননি জমির মালিকেরা। টাকা চাইতে গিয়ে মারধরও জুটেছে।

    অভিযুক্তেরা সকলেই শাসক দলের নেতা-কর্মী। অর্থাভাবে বা অন্য কোন কারণে নিজের নামে পাট্টা পাওয়া জমির দলিল নিজের নামে রেকর্ড করতে পারেননি অনেকে। সেই জমির রেকর্ড বদলে গিয়েছে অন্য নামে। এক্ষেত্রে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের ভূমিকা সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। এই সব জমিতে তৈরি ভেড়ি বা পোলট্রি ফার্মে ঋণ দিয়েছে ব্যাঙ্ক।

    ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির দাবি, এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, সন্দেশখালি থানা বা গ্রাম পঞ্চায়েত—যেখানেই অভিযোগ করা হতো, তাদের শেখ শাহজাহানের ডান হাত শিবু হাজরার অফিসেই যেতে বলা হতো। সেখানে গিয়েও কোনও সুরাহা হতো না। রাজনৈতিক দল থেকে সংবাদমাধ্যম, মহিলাদের উপরে যৌন নির্যাতনের ঘটনার দিকেই সকলের নজর ঘোরানোর চেষ্টা হয়েছে।

    তাতে আসল অভিযোগ চাপা পড়ে গিয়েছে। সকলেই যেভাবে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করেছেন, ‘প্রত্যক্ষ’ যৌন নির্যাতন হয়েছে কিনা, হলে তার শিকার কত জন, তাতে সেখানকার ভুক্তভোগী মহিলারা অপমানিত বোধ করেছেন। সমীক্ষকদের দাবি, যৌন নির্যাতনের ক্ষেত্রে কোনও কোনও রাজনৈতিক দল যেভাবে ধর্মীয় বিভাজন করেছে, তাতেও তাঁরা ক্ষুব্ধ।

    এই অবস্থায় ওই সংস্থাগুলির দাবি, গ্রামবাসীদের কেড়ে নেওয়া জমি অবিলম্বে ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যে চাষ-জমির প্রকৃতি এবং বৈশিষ্ট্য বদল করা হয়েছে, সেগুলিকে চাষযোগ্য করার খরচ সরকারকে দিতে হবে।
  • Link to this news (এই সময়)