শোকজের জবাব সন্তোষজনক নয়, গার্ডেনরিচ কাণ্ডে ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত
প্রতিদিন | ২৪ মার্চ ২০২৪
অভিরূপ দাস: গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় শোকজ করা হয়েছিল তিন ইঞ্জিনিয়ারকে। তাঁদের জবাব এসে পৌঁছেছে ডিজি (বিল্ডিং) এর টেবিলে। পুরসভা সূত্রের খবর, শোকজের জবাবে বিন্দুমাত্র খুশি নয় বিল্ডিং বিভাগ। শুভম ভট্টাচার্য, দেবব্রত ঘোষ, দেবাদিত্য পালের বিরুদ্ধে এবার শুরু হচ্ছে বিভাগীয় তদন্ত।
কী রয়েছে শো কজের জবাবে? পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ সূত্রে খবর, বোরোর দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়াররা লিখেছেন, সংকীর্ণ গলির ভিতর অপ্রত্যাশিতভাবে তৈরি হচ্ছিল ওই বহুতল। ভেতরে যে এতবড় বহুতল তৈরি হতে পারে তার আন্দাজই ছিল না ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে। ফলে গলির মুখ পর্যন্ত গেলেও তার ভিতরের পরিসর খতিয়ে দেখা হয়নি।
এই গাফিলতি কোনওভাবেই মেনে নিচ্ছে না বিল্ডিং বিভাগ। এদিকে এরই মধ্যে মার্চের শেষে গার্ডেনরিচে এক বেআইনি বহুতল ভাঙতে যাচ্ছে পুরসভা। সম্প্রতি গার্ডেনরিচে বহুতল ধুলিসাৎ হওয়ার পরেই খবরে উঠে আসে ওই এলাকার একের পর এক বেআইনী বহুতলের ছবি। দেখা যায় দু’একটা যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়ে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
নতুন করে যে বেআইনি নির্মাণ ভাঙা হচ্ছে তা গুঁড়িয়ে দেওয়ার অর্ডার বেরিয়েছিল আগেই। ২০২৩ এর জুলাইয়ে গার্ডেনরিচের পাহাড়পুর রোডে জে ৪৭৪ /সি/এল ঠিকানার নির্মাণকে বিপজ্জনক ঘোষণা করেছিল মিউনিসিপ্যাল কমিশনার। নোটিস জারি করে পুরসভা জানিয়েছে ওই বাড়ির মালিক এই মুহূর্তে রাজকুমার সিং, বেবি সিং। ঠিক হয়েছে, ২৮ মার্চ পুরসভা ওই বিপজ্জনক বহুতল ভাঙতে যাবে। বহুতল ভাঙার ক্ষেত্রে আর যে কোনওরকম নরমপন্থা অবলম্বন করা হবে না তাও স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে নতুন নোটিসে। স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে পুরসভার আধিকারিকরা দরজার তালা ভেঙে ঢুকবেন। যেন তেন প্রকারে বেআইনি নির্মাণ ভাঙা হবেই।
ইতিমধ্যেই সামনে এসছে পুরসভার তদন্ত কমিটি। ৪ এপ্রিলের মধ্যে ভেঙে পড়া বহুতল নিয়ে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে। সেই রিপোর্ট পেশ করতেই তৈরি হয়েছে তদন্ত কমিটি। সাত সদস্যের তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন কলকাতা পুরসভার যুগ্ম মিউনিসিপ্যাল কমিশনার, ডিজি (সিভিল), সিএমই (কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা), ডিজি (এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হেরিটেজ), কলকাতা পুলিশের একজন সদস্য, বিএলআরও, কলকাতা পুরসভার ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট দফতরের আধিকারিক ডা. মুগ্ধা চক্রবর্তী। কী কী দেখা হবে তদন্তে? পুরসভা সূত্রে খবর, গার্ডেনরিচের ওই জমির চরিত্র বদল করা হয়েছিল কিনা তা দেখা হবে তদন্তে। দেখা হবে কারা কিনছিলেন ওই বেআইনি বহুতলের ফ্ল্যাট? কোন উপায়ে বেআইনি বহুতলে সিএসসি সংযোগ নেওয়ার কথা ভেবেছিলেন অভিযুক্ত প্রোমোটার? সবই দেখা হবে তদন্তে। ২৯ মার্চের মধ্যে মিউনিসিপ্যাল কমিশনার ধবল জৈনের কাছে এই তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবে সাত সদস্যের কমিটি।