কেন্দ্রীয় মন্ত্রী-পুত্রের সেমিনারে হাজিরা মাস্ট? কলেজ পড়ুয়াদের আই-কার্ড আটকে রাখার অভিযোগ
এই সময় | ২৪ মার্চ ২০২৪
মুম্বই: ভোটের আগে নয়া বিতর্ক মুম্বইয়ের কান্দিভালির ঠাকুর কলেজের একটি অনুষ্ঠানকে ঘিরে। নতুন ভোটারদের মধ্যে ভোট সচেতনতা ছড়াতে আয়োজিত ওই সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা মুম্বই নর্থ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী পীযূষ গোয়েলের ছেলে ধ্রুব। পরদিন পড়ুয়াদের পরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও তাঁদের আইডি কার্ড আটকে রেখে এই সেমিনারে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পড়ুয়াদের তোলা ভিডিয়োয় বিষয়টি সামনে আসার পর উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা থেকে শরদ পাওয়ারের এনসিপি- সরব বিরোধী শিবির।পড়ুয়াদের তোলা একটি ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, অনুষ্ঠানের মধ্যেই এক ছাত্র উঠে দাঁড়িয়ে ধ্রুবকে প্রশ্ন করছেন, 'পড়ুয়াদের আইডি কার্ড আটকে রেখে সেমিনারে আসতে বাধ্য করার পর ঠাকুর কলেজের অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে কি গণতান্ত্রিক বলা যায়?' ছাত্রের প্রশ্নের জবাবে ধ্রুব কী উত্তর দিয়েছেন, তা ভিডিয়োয় স্পষ্ট নয়, তবে বাকি পড়ুয়ারা সম্মিলিত হাততালিতে ওই ছাত্রকে সমর্থন করেছেন। এমনকী ইভেন্টের একটি ভিডিয়োয় কলেজের প্রিন্সিপাল চৈতালি চক্রবর্তীকে স্টেজে দাঁড়িয়ে বলতে শোনা যায়, সামনেই পরীক্ষা, তবু প্রত্যেকের ভোট দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা জানা উচিত। এর পরই ধ্রুবকে বলতে শোনা যায়, 'তোমাদের ভোট শুধু তোমাদেরই। বাবা-মা, দাদা-দিদি, কেউ যেন তোমাদের প্রভাবিত করতে না পারে। মন থেকে ভোট দাও। আমি এখানে তোমাদের বলতে আসেনি অমুক পার্টিকে ভোট দাও বা তমুক পার্টিকে ভোট দাও। আমার রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব থাকবেই, তার পরও বলব মনের কথা শুনে ভোট দাও...'
কিন্তু একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে কেন ভোট সচেতনতার প্রচারে আনা হলো, কেনই বা পড়ুয়াদের জোর করে সেমিনারে আসতে বাধ্য করা হলো, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এ ব্যাপারে প্রিন্সিপালের তরফে কোনও জবাব মেলেনি। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে সেমিনারের ভিডিয়ো পোস্ট করে লেখেন, 'ওরা দেশে গণতন্ত্র রাখতে চায় না। পরীক্ষার আগে পড়ুয়াদের আইডি কার্ড আটকে রেখে বিজেপি নেতার ছেলের কথা শুনতে বাধ্য করা হচ্ছে....আসলে পরীক্ষায় পাশ করেই বা কী হবে? এই সরকারের আমলে চাকরি কোথায়? তার চেয়ে প্রার্থীর ছেলের লেকচার শোনা ভালো।'
পরে অবশ্য কলেজ কর্তৃপক্ষ ধ্রুবের একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন। সেখানে পীযূষ-পুত্রকে ক্ষমা চেয়ে বলতে শোনা যায়, পরীক্ষার বিষয়ে বা পড়ুয়াদের জোর করে আনার বিষয়টি তিনি জানতেন না। এমনকী বিষয়টি প্রকাশ্যে আনার জন্য প্রশ্নকর্তা পড়ুয়ার প্রশংসাও করেন তিনি। তবে উদ্ধব শিবিরের নেত্রী প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী কলেজের পদক্ষেপের নিন্দা করে চিঠি দিয়েছেন। ঠাকুর কলেজের দাবি, প্রিয়াঙ্কা অকারণে বিতর্ক বাঁধানোর চেষ্টা করছেন। অনুষ্ঠান শান্তিতেই মিটেছে। প্রিয়াঙ্কার পাল্টা দাবি, 'আপনাদের পড়ুয়াদের সামনে ক্ষমা চাওয়া উচিত। নীতিবোধ থাকলে প্রিন্সিপাল অবিলম্বে পদত্যাগ করুন।'