জমি রেজিস্ট্রিতে অনিয়ম ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ, নয়া নির্দেশিকা রাজ্যের
এই সময় | ২৪ মার্চ ২০২৪
জমি নিয়ে যাতে যাতে কোনও জটিলতা তৈরি না হয় সেই জন্য এবার উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে রাজ্যের তরফে। সম্প্রতি কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তির জমি তাঁর অজান্তেই অন্যের নামে চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিস্তর। এবার এই ধরনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নড়চড়ে বসল রাজ্য। কোনওভাবেই যেন এই ঘটনাগুলির পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই কারণে করা হল গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
জমি বা বাড়ি রেজিস্ট্রি করার ক্ষেত্রে একটি বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। ১৯০৮ সালের রেজিস্ট্রেশন আইন বলছে, নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্র বিশেষে কোনও ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে রেজিস্ট্রি করানো সম্ভব। এই ধরনের ক্ষেত্রগুলিতে বায়োমেট্রিক ছাপ নেওয়া কোনওভাবেই বাধ্যতামূলক নয়। অভিযোগ, এই নির্দিষ্ট নিয়মকে হাতিয়ার করেই প্রতারণার ফাঁদ পাতছে একটি অসাধু চক্র। এক্ষেত্রে জমি মালিককে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে সেই জমি অন্যের নামে করে নেওয়ার ঘটনা সামনে আসছে বলে অভিযোগ উঠছে কিছু ক্ষেত্রে।এবার এই ধরনের ঘটনা এড়াতে তৎপর প্রশাসন। রাজ্যের ডাইরেক্টর অব রেজিস্ট্রেশন এবং স্ট্যাম্প ডিউটি বিভাগের তরফে সম্প্রতি একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সেই জায়গায় একাধিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, এবার থেকে বাড়িতে রেজিস্ট্রির আবেদন যাচাই করার দিকে বিশেষ জোর দিতে হবে। অর্থাৎ আবেদনকারী আদৌ রেজিস্ট্রি অফিসে আসতে পারবেন কিনা, তা যাচাই করা হবে। সেক্ষেত্রে আবেদনের সত্যতা প্রমাণিক হলে তবেই তা গ্রাহ্য করা হবে। কোনও আধিকারিক যদি অনিয়ম করে বাড়িতে গিয়ে রেজিস্ট্রি করেন সেক্ষেত্রে কঠোর শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হবে।
এই মর্মে কলকাতা এবং জেলার রেজিস্ট্রারদের নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, এর ফলে বায়োমেট্রিক ছাড়া রেজিস্ট্রির সংখ্যা বেশ কিছুটা কমতে পারে। যাঁরা অসুস্থ তাঁদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম অত্যন্ত কার্যকর হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বাড়িতে গিয়ে জমি রেজিস্ট্রির কাজ করার জন্য় সরকারকে একটি নির্দিষ্ট ফি দিতে হয়। আর সেই ফির পরিমাণ ৪০০ টাকা। এই বিষয়ে যাতে কোনওভাবেই অনিয়ম না হয় সেই কারণেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সরকারি আধিকারিকদের। তবে তা মৌখিকভাবে। ফলে স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে যাবতীয় নজরদারি প্রশাসনের পক্ষ থেকে চালানো হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এই নতুন নির্দেশের ফলে জমি সংক্রান্ত জটিলতা, অনিয়ম, নকল দলিল অনেকাংশে কমবে বলেই মনে করা হচ্ছে।