হোলির আগে ত্রিপলে ঢাকা হল পর পর মসজিদ! ব্যাপারটা কী?
এই সময় | ২৪ মার্চ ২০২৪
বরেলির রাম বরাত রুট এবং শাহজানপুরের রাস্তায় সমস্ত মসজিদগুলি ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। হোলির আগে এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে নানারকম চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। ব্যাপারটা কী?জানা গিয়েছে, রঙের উৎসবের দিন মসজিদগুলির দেওয়ালে যাতে কোনওভাবেই রং না লাগে, তার জন্যই এই বন্দোবস্ত। উত্তর প্রদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ যাতে কোনওভাবেই নষ্ট না হয়, সেটি নিশ্চিত করতেই এমনটা করা হয়েছে বলে খবর।
বরেলির SP ঘুলে সুশীল চন্দ্রবাহনের নেতৃত্বে পুলিশের দল মার্চ করে বরেলিতে। রবিবার নরসিং মন্দিরের সামনে থেকে রাম বরাত শোভাযাত্রা রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে হোলির সময় এই রুটে শোভাযাত্রার আয়োজন করে ব্রহ্মপুরী রামলীলা কমিটি। তার জন্য মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। কড়া নিরাপত্তা রাখা হয়েছে এলাকায়। কারণ এই রাম বরাত শোভাযাত্রার রুটেই রয়েছে একাধিক মসজিদ। তাই সেগুলিকে আগেভাগে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে ফেলা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার মসজিদের ইমামদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য কোনওভাবেই যেন মসজিদগুলির দিকে লক্ষ্য করে কিছু ছোঁড়া হয়, তা নিশ্চিত করতে তারপলিন শিট দিয়ে আগেভাগে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে মসজিদগুলি। এ ছাড়াও রাম বরাত যাত্রার সময় মিছিলের দু'পাশে পর্যাপ্ত পুলিশ থাকবে।
পাশাপাশি, শাহজাহানপুরে লাট সাহেব কি বারাত শোভাযাত্রা হবে হোলির দিন। ফুলমতি থেকে দেবী মন্দির পর্যন্ত যাবে সেই যাত্রা। এটিও দীর্ঘদিন ধরে চলে আসে সেখানকার একটি ঐতিহ্যবাহী যাত্রা। ১৮ শতাব্দী থেকে শাহজাহানপুরে এই শোভাযাত্রা হয় হোলির দিন। আগে এই যাত্রাটিকে বলা হত নবাব সাহেব কি বারাত। গাড়িতে থাকা ব্যক্তিকে নবাবের মর্যাদা দেওয়া হত। তবে স্বাধীনতার পর থেকে এটিকে বলা হয় লাট সাহেব কি বারাত। এখানে গোরুর গাড়িতে বসা ব্যক্তিকে ব্রিটিশ হিসেবে ধরা হয়।
এই শোভাযাত্রার সময়ও আশপাশের সমস্ত মসজিদগুলিকে প্ল্যাস্টিকের শিট দিয়ে ঢেকে দেওয়া হবে। শাহজাহানপুরের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার উপর বিশেষভাবে জোর দিয়েছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। হাই অ্যালার্ট করা হয়েছে পুলিশ এবং স্থানীয়দের।
শাহজাহানপুরের সিদ্ধিবিনায়ক কলোনির বাসিন্দা গোপাল শর্মা বলেন, 'এই বারাত একটি ঐতিহ্যবাহী শোভাযাত্রা। ছেলেবেলা থেকে এর সাক্ষী হয়ে আসছি আমরা। যে ওই গোরুর গাড়িতে বসবেন, তাঁকে একমাস আগে থেকে বেছে নেওয়া হয়। হোলির সময় তাঁকে একটি আলাদা স্থানে থাকতে হয়। তাঁকে ভালো-মন্দ খেতে দেওয়া হয়। যারা বাড়ি থেকে এই শোভাযাত্রা দেখেন তাঁরা ওই গোরুর গাড়িতে বসা ব্যক্তির দিকে জুতো ছোড়েন। বারাত শেষ হতে ওই ব্যক্তিকে নতুন পোশাক দেওয়া হয়। আয়োজকরা তাঁকে টাকাও দেন।'