• হেভিওয়েট মহুয়ার বিরুদ্ধে রাজনীতিতে নবাগতা, BJP প্রার্থী রাজবধূ অমৃতা রায়কে চেনেন?
    এই সময় | ২৫ মার্চ ২০২৪
  • গুঞ্জন ছিলই। নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের হেভিওয়েট প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে বিজেপি কাকে দাঁড় করাবে? চর্চায় উঠে আসে একাধিক নাম। শেষমেষ কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির বধূ অমৃতা রায়ের নামেই সিলমোহর দিল বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।১৯৬১ সালের ডিসেম্বর মাসে জন্ম অমৃতা রায়ের। স্বামীর নাম সৌমিশ চন্দ্র রায়। অমৃতা রায় কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির ৩৯ তম কুলবধূ। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের সময় কাল থেকে ধরলে অমৃতা রায় নবম কুলবধূ। নদিয়া রাজ কৃষ্ণচন্দ্রর নবম পুরুষ চন্দ্র রায় তাঁর স্ত্রী অমৃতা। অমৃতা রায়ের একমাত্র পুত্র মনীশ চন্দ্র রায়। পেশায় একজন আইনজীবী। অমৃতা দেবীর স্বামী সৌমিশ চন্দ্র রায় এয়ার ইন্ডিয়াতে চাকরি করতেন কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির ঐতিহ্যের বিষয় সম্পত্তিগুলো দেখভাল করার জন্য লন্ডনে থাকাকালীন স্বেচ্ছাঅবসর নিয়ে কৃষ্ণনগরে চলে আসেন।

    বর্তমানে কৃষ্ণনগরের পাশাপাশি কলকাতা বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে বসবাস করেন অমৃতা দেবী। রানি বিড়লা উইমেন্স কলেজ থেকে আইএসসি পাশ করেন। তার আগে লা মার্টিন স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন অমৃতা রায়। কলেজ পাশ করার পর মন্তেশ্বরী দেবী শিশু শিক্ষা কেন্দ্র এবং ধন্তেশ্বরী টিচার্স ট্রেনিং স্কুল তৈরি করেছিলেন। শিল্পকলার অত্যন্ত ভক্ত অমৃতা রায়। ডেকরেশনের বিষয়ে তিনি বিভিন্নভাবে অনেক পরামর্শ দিতেন বলেও জানা যায়।

    ইন্টিরিয়র ডেকোরেশনে তিনি বিশেষ পারদর্শী, সেই কারণে অনেকেই তার পরামর্শ নিতেন। ক্রিয়েটিভ ডিজাইন নিউ এক সময় কনসালটেন্ট করতেন। অমৃতা রায়ের বাবা প্রয়াত কিশোর প্রসাদ মুখোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ছিলেন। রাজবাড়ীর কুলো বধূ অমৃতা রায় তাকে রানি মা সম্বোধন করা হলেও কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির শেষ রানি ছিলেন জ্যোতির্ময় দেবী। তারপরেই দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রাজতন্ত্র উঠে যায়। তবুও আজও গোটা রাজবাড়ি ঘিরে বর্তমান ঐতিহ্যের প্রাণপুরুষ হিসেবে সৌমিশ চন্দ্র রায় এবং তার স্ত্রী অমৃতা রায়কেই ‘রানি মা’ বলে ডাকে সকলে। তবুও বর্তমানে রাজবাড়ীর রাজরাজেশ্বরী পুজো থেকে শুরু করে জগদ্ধাত্রী পুজোতে যাবতীয় উন্মাদনা এবং সিঁদুর খেলা যেন রাজবাড়ির কুলবধূ অমৃতা রায়কে নিয়েই।

    এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেস চর্চিত সাংসদ মহুয়া মৈত্রের উপরেই ভরসা রেখেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদে অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন কাণ্ডে তাঁকে বহিষ্কৃত করা হয়। তবে শুরু থেকেই তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। মহুয়া মৈত্রকেই প্রার্থী করা হবে, সেটা তালিকা ঘোষণা করার অনেক আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দক্ষ সংগঠক মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে রাজনীতিতে নবাগতা রাজবাড়ির বধূ কি জোর লড়াই দিতে পারবেন? সেই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে কৃষ্ণনগর বাসিন্দাদের মনে।
  • Link to this news (এই সময়)