হোলির সকালে মহাকাল মন্দিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। উজ্জয়িনীর এই মন্দিরের গর্ভগৃহে সোমবার সকালে চলছিল ভস্ম আরতি। সে সময় আচমকাই আগুন লেগে যায় সেখানে। ঘটনায় পুরোহিত সহ ১৩ জন গুরুতর জখম হয়েছেন বলে খবর।হোলির সকালে অগ্নিকাণ্ডজানা গিয়েছে, হোলি উপলক্ষে উজ্জয়িনীর মহাকাল মন্দিরে সোমবার সকালে ভস্ম আরতির সময় বিশেষ আয়োজন করা হয়েছিল। একে অপরের গালে আবির লাগিয়ে রঙের উৎসবে মেতে ছিলেন সকলে। তার মাঝেই গর্ভগৃহে শুরু হয় ভস্ম আরতি। সে সময়ই আচমকা গর্ভগৃহে আগুন ধরে যায়। আগুনের লেলিহান শিখা ক্রমশই বাড়তে শুরু করে। গর্ভগৃহে উপস্থিত সকলেই প্রাণ বাঁচাতে এদিক-সেদিক ছুটতে শুরু করেন।
কী বক্তব্য মন্দির কর্তৃপক্ষের?মন্দির কর্তপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত ১৩ জনের শরীরের অনেকটা করে অংশ আগুনে ঝলসে গিয়েছে। তাঁদের দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আপাতত তাঁরা সকলেই চিকিৎসাধীন।
উজ্জয়িনীর মহাকাল মন্দিরের পুরোহিত আশিস শর্মা বলেন, 'মহাকাল মন্দিরে প্রতি বছরের মতো এবারও ঐতিহ্য মেনে হোলি পালন করা হচ্ছিল। ভস্ম আরতির সময় তাতে আবির ফেলা হয়। আর সেই আবিরের জন্যই গর্ভগৃহে আগুন ধরে এবং তা ছড়িয়ে পড়ে। মন্দিরের একাধিক পুরোহিত জখম হয়েছেন এই ঘটনায়। আমরা তাঁদের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছি।' উজ্জয়িনীর জেলাশাসক নীরজ কুমার সিং বলেন, 'গর্ভগৃহতে ভস্ম আরতি চলছিল। সে সময়ই হঠাৎ অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। ১৩ জন গুরুতর আহত অবস্থায় উজ্জয়িনীর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।'
মহাকাল মন্দিরের ভস্ম আরতি কী?একটা সময় চিতা থেকে ছাই তুলে এনে এই মন্দিরে হত 'ভস্ম আরতি'। মধু-চন্দন মাখিয়ে মহাসমারোহে চলে শিবলিঙ্গের দুধ স্নান। সেই রীতিতে বদল আসেনি দীর্ঘ কয়েক যুগেও। তবে মহাকাল মন্দিরের ভস্ম আরতিতে এখন আর ব্যবহার হয় না চিতার ছাই। ভারতীয় ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক হিসেবে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে পালিত হয় উজ্জয়িনীর মহাকালেশ্বরের এই ভস্ম আরতি। মধ্য প্রদেশের শিপ্রা নদীর তীরে অবস্থিত এই জাগ্রত মন্দির। চতুর্থ শতাব্দীতে কালিদাস রচিত 'মেঘদূতম'-এ এই মন্দিরের উল্লেখ রয়েছে। পুরাণ মতে এই দেবস্থান নির্মাণ করেন স্বয়ং প্রজাপিতা ব্রহ্মা। সনাতনীদের বিশ্বাস, শিবের দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে একটি রয়েছে এই মহাকালেশ্বর মন্দিরে।