দেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে হোলি উৎসব। রঙের উৎসবে মাতোয়ারা দেশ। আম আদমি থেকে নেতা-মন্ত্রী তারকা সকলেই চুটিয়ে হোলির মেজাজ চুটিয়ে উপভোগ করছেন। ভারতের আকাশ বাতাস মুখরিত 'হোলি হ্যায়'-এর মিলিত কণ্ঠস্বরে। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারি, গুজরাট থেকে অরুণাচল প্রদেশ – সর্বত্রই একই আবহ। তবে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বারাণসী, বৃন্দাবন, উজ্জয়িনী, আহমেদাবাদ এবং মুম্বই-এ তো কথাই নেই৷। রং, রং আর রং। আবির, গুলালে মাখামাখি। আর এমনই দিনে 'পুরনো সেই দিনের কথা' মনে করে স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়ছেন আরজেডি-র নেতা-কর্মীরা।বিহারে হোলি এক বড় উৎসব। এক সময় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু যাদবের হোলি খেলার কথা মুখে মুখে ঘুরত। হোলির দিন রং খেলতে খেলতে ছিঁড়ত লালুর পঞ্জাবিও। সেই ছবি আজও ঘোরাফেরা করে। তবে সেসব এখন অতীত। এখন আর হোলির দিন সেই মেজাজ নেই লালুর বাড়িতে। সেভাবেই হোলি উদযাপনে মেতে ওঠেন না বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। বেশ কয়েক বছর ধরেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে হোলির দিনে সেই চূড়ান্ত উদ্দীপনা চোখে পড়ে না আর। এবার হোলি উদযাপন করছেন না বিহারের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও। ২৭ মার্চ নাতনি কাত্য়ায়নীর জন্মদিন। সেই কারণেই রয়েছে ব্যস্ততা। এছাড়াও রয়েছে লোকসভা নির্বাচন। নির্বাচন আচরণবিধিও রয়েছে।
তবে এমন একটা সময় ছিল যেদিন হোলির দিন কেমন ভাবে উদযাপন করছেন লালু তা কভার করতে রীতিমতো ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করতে সাংবাদিকদের। সে সময় জমিয়ে রং খেলতেন লালু। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রং খেলায় মেতে উঠতেন। যোগ দিতেন দলের কর্মী-সদস্য়রাও। তবে সেসব এখন অতীত। আজ আর হোলির দিন সেই জৌলুস চোখে পড়েন লালু-ভবনে। ছেলে তেজপ্রতাপ অবশ্য হোলির উদযাপনের আয়োজন করেছেন তবে লালুর আমলের হোলি উদযাপনের সঙ্গে তুলনা করলে তা কিছুটা ফিকেই মনে হবে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। এদিকে নীতীশের বাড়িতেও হোলি খেলা হচ্ছে না। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। নির্বাচনী আচরণবিধি জারি হয়ে গিয়েছে। ফলতই পা ফেলতে হচ্ছে বুঝেশুনে। JDU-এর এক নেতা জানিয়েছেন, 'লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। আচরণবিধিও কার্যকর হয়ে গিয়েছে। এই আবহে এবার মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে হোলির আয়োজন করা হয়নি।'
কুর্তা ছিঁড়ে হোলির আলোচনা
এক সময় দেখার মতো হোলি খেলা হত রাবড়ি দেবীর বাড়িতে। হোলির দিন রং খেলতে খেলতে লালুর কুর্তা ছিঁড়বে এযেন ছিল প্রতি বছরের রুটিন। সেদিন লালু যেন পুরো অন্য় মানুষ। দলের সুপ্রিমো হিসেবে নন, সকলের সঙ্গে মিশতেন একেবারে পরিবারের সদস্য হয়ে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে হোলি খেলায় মেতে উঠতেন। কুর্তা ছিঁড়ে, ঢোল বাজিয়ে একবারে ভরপুর উদ্দীপনায় হোলি খেলতেন। গোটা পরিবারই জাঁকজমুকপূর্ণ ভাবে হোলি পালন করত। তবে সেসব দিন অবশ্য পেরিয়েছে। এখন আর সেভাবে হোলি খেলেন না লালু।
Holi 2024 : দোলের আগেই রংখেলা! রংভরী একাদশী কী?
তেজপ্রতাপের হোলি উদযাপন
এবার লালুর বড় ছেলে প্রত্যাপ অবশ্য হোলি উদযাপন করবেন। কিছুটা বাবার স্টাইলেই হোলি উদযাপনের চেষ্টা করেছেন তিনি। তবে তা সত্যি সত্যি বাবার মতো হবে কি না তা অবশ্য নিশ্চিত নন। সকাল থেকেই তেজ প্রতাপের বাড়িতে কর্মীদের আনাগোনা। পুরনো সেই দিনের কথা মনে করে সকলেই স্মৃতিমেদুর। 'আমাদের গেছে যে দিন, একেবারেই কি গেছে, কিছুই কি নেই বাকি'... হয়তো মন বলছে একথাই।