এই সময়, ব্যারাকপুর: বিধায়কের উদ্যোগে সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে। ব্যারাকপুর স্টেশন লাগোয়া রেলের পাঁচিলে ছবি আঁকার কাজ প্রায় শেষের পথে। তদারকিতে খোদ ব্যারাকপুরের তারকা বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী। এরই মধ্যে রবিবার দুপুরে রেলের পাঁচিলে আঁকা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবিতে কালি লেপে দেওয়া হয়। যা শুনে ক্ষুব্ধ বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী। খবর পাওয়া মাত্রই তিনি চলে আসেন। যে সমস্ত শিল্পীরা ছবি আঁকছিলেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়াকে ফোন করে তাঁর ক্ষোভের কথা জানান রাজ।ব্যারাকপুর স্টেশন থেকে লালকুঠি মোড় পর্যন্ত রাস্তার ধারে রেলের যে পাঁচিল রয়েছে, তা একসময় ভরে থাকত ঘুঁটেতে। তার ফাঁকে দেখা যেত পোস্টার, ব্যানার৷ আবার কিছু অংশে পাঁচিলের ধার ঘেঁষেই পড়ে থাকত ময়লা আবর্জনা। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে নাকে রুমাল চাপা দিয়ে যেতে হতো পথচলতি মানুষকে। ব্যারাকপুরের বিধায়ক হওয়ার পরেই রেলের ওই পাঁচিলে সৌন্দর্যায়নের উদ্যোগ নেন রাজ চক্রবর্তী।
স্থানীয় এবং রেল প্রশাসনের সহযোগিতায় বিধায়ক তহবিলের ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই পাঁচিল সংস্কার করে তাতে ব্যারাকপুরের বিভিন্ন ইতিহাসের চিত্র যেমন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, তেমনই বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের বিভিন্ন উৎসবের ছবি, বিভিন্ন চলচ্চিত্রের সঙ্গে পুরোনো দিনের নামকরা অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে কবি সাহিত্যিক, হযবরল, বিভিন্ন খেলোয়াড়, তালপাতার সেপাইয়ের ছবি আঁকা চলছে। যা ব্যারাকপুরের এখন অন্যতম আকর্ষণ। ইতিহাস বর্ণিত ছবিকে সামনে রেখে চলছে দেদার সেলফি তোলা।
চিত্রায়ণের কাজ যখন প্রায় শেষলগ্নে, তখন ওই দেওয়ালে আঁকা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবিতে আচমকা রবিবার দুপুরে কালি লাগিয়ে দেওয়া হয়। আঁকার কাজে ব্যস্ত শিল্পীরা একটি বাচ্চাকে হাতেনাতে ধরেও ফেলেন। বাচ্চাটি জানায় একজনের নির্দেশে সে কালি লাগিয়েছে। কার নির্দেশে সে এই কাজ করেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এই প্রথম নয়, ওই দেওয়ালে আঁকা সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে কেউ বা কারা বিরিয়ানি লেপে দিয়েছিল। দিনকয়েক আগে একটি ছবির উপর শৌচকর্মও করে দেওয়া হয়। এমনকী শিল্পীদের হুমকি দিয়ে এসব শিল্পকলা ব্যারাকপুরে চলবে না বলে হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এ দিন রাজ চক্রবর্তী পুলিশ কমিশনারকে ফোন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান। রাজ বলেন, ‘উন্নয়ন দেখে হয়তো কারও কষ্ট হচ্ছে। তাই সেটা সহ্য করতে না পেরে এ কাজ করা হচ্ছে।’
বিধায়কের আশঙ্কা, আজ সোমবার দোল এবং পরদিন হোলি। ফলে দেওয়ালে আবারও কালি লাগানো হতে পারে। সেই আশঙ্কার কথা তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন। পুলিশের তরফে আগামী দু’দিন রেলের ওই পাঁচিল পাহারায় নজরদারি বাড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক পুলিশ কর্তার কথায়, কে বা কারা এই জঘন্য কাজ করছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।