Terrorist Attack In Russia : শোকোস্তব্ধ মস্কো, কিইভে স্ট্রাইক, পাল্টা ইউক্রেনেরও
এই সময় | ২৬ মার্চ ২০২৪
এই সময়: কালাশনিকভ আর ধারালো ছুরি নিয়ে তেড়ে যাচ্ছে জঙ্গিরা। হাতের সামনে যাকে পাচ্ছে, নির্মম ভাবে মারছে। কাউকে কুপিয়ে, তো কাউকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে বুকে-পেটে-মাথায় গুলি করে। প্রাণের ভয়ে যারা পালাচ্ছে, তাদেরও রেয়াত করছে না জঙ্গিরা। মস্কোর কনর্সাট হলে হামলার দু’দিন পরে রবিবার জঙ্গিদেরই বডি-ক্যাম ভিডিয়ো প্রকাশ করল আইএস(কে)। দিনভর সেই ভিডিয়ো দেখে শিউরে শিউরে উঠেছেন নেটিজ়েনরা।‘এই সময়’ যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। বিকেলের পরে সেই ভিডিয়ো এক্স প্ল্যাটফর্ম থেকে মুছেও ফেলা হয়েছে। রাশিয়ার দাবি, ক্রকাস সিটি হলে হামলাকারী চার জঙ্গিকেই গ্রেপ্তার করেছে তারা। এই চার জনকেই কি আইএসের ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে? বোঝার উপায় নেই। কারণ প্রায় সর্বক্ষণই জঙ্গিদের মুখ ব্লার করা ছিল ভিডিয়োতে।
তরজায় রাশিয়া-ইউএস
জঙ্গি হামলায় রক্তাক্ত মস্কো। নিহত প্রায় দেড়শো। ক্রকাস সিটি হলে উদ্ধারকাজ শেষ, তবে বোমা-গ্রেনেডে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া প্রেক্ষাগৃহে তল্লাশি জারি। আমেরিকার ধারাবাহিক অ্যালার্ট সত্ত্বেও রাশিয়া কেন এই হামলা এড়াতে পারল না, তা নিয়ে প্রশ্ন ছিলই। তার সদুত্তর মেলার আগেই অন্য তরজায় জড়িয়ে পড়ল রাশিয়া ও আমেরিকা। রাশিয়া তাদের পয়লা নম্বর শত্রু হওয়া সত্ত্বেও ‘ডিউটি টু ওয়ার্ন’ নীতি মেনে কনসার্টে হামলা নিয়ে আগাম সতর্ক করেছিল আমেরিকা। তাতে কার্যত আমলই দেয়নি ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ।
উল্টে আমেরিকার সতর্কবার্তাকে ‘উস্কানিমূলক’ বলে প্রকাশ্যেই তোপ দেগেছিল রুশ বিদেশ মন্ত্রক। এবার এই জঙ্গি হামলায় ‘ইউক্রেন-লিঙ্ক’ নিয়ে তথ্য গোপন করার অভিযোগ তুলে ওয়াশিংটনকে বিঁধতে শুরু করল মস্কো। হামলার সেই রাতেই হোয়াইট হাউস দাবি করেছিল, এই হামলার সঙ্গে ইউক্রেনের জড়িত থাকার কোনও স্পষ্ট ইঙ্গিত নেই। আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কিরবি সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘তদন্তের একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে ইউক্রেন-লিঙ্ক নিয়ে কথা বলার কোনও মানেই হয় না।’
এর পরই রুশ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মারিয়া জ়াখারোভা পাল্টা তোপ দাগেন— ‘ইউক্রেন জড়িত নয়— আমেরিকা এটা বলছে কী করে? তার মানে নিশ্চিত ওদের কাছে পোক্ত ইনটেল আছে। সেটা তারা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করছে না কেন? আর তা যদি না থাকে, তা হলে কাউকে প্রশ্রয় দেওয়ার অধিকার নেই আমেরিকার।’ সরাসরি এ নিয়ে মুখ না-খুললেও হোয়াইট হাউস এ দিন ফের ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছে যে, অ্যালার্ট থাকা সত্ত্বেও তা জঙ্গি হামলা রুখতে না-পারাটা স্রেফ প্রশাসনিক ব্যর্থতা।
চর্চায় তাজ়িক-যোগও
শুক্রবার রাতেই নাটকীয় ভাবে ধাওয়া করে জঙ্গিদের গাড়ি আটকেছিল রাশিয়ার ফেডারেল সার্ভিস। এ দিন রাশিয়ার একাধিক মিডিয়া জিয়োলোকেশন ধরে দেখিয়েছে, জঙ্গিরা ইউক্রেন বর্ডার দিয়েই পালানোর চেষ্টা করছিল। তাদের গাড়ি আটকানো হয় সেই বর্ডার থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে। কার্যত সেই সূত্রেই ইউক্রেন-যোগ নিয়ে সুর চড়াচ্ছে ক্রেমলিন। গাড়ির মধ্যে আবার একাধিক তাজ়িকিস্তানের পাসপোর্ট পাওয়া গিয়েছিল।
আবার এক জঙ্গি নাকি জেরায় জানিয়েছে, সে তুরস্ক থেকে এসেছে। জঙ্গিরা সত্যিই আইএসের, নাকি আদতে তাজ়িকিস্তান বা তুরস্কের ভাড়াটে দুষ্কৃতী— সে প্রশ্নও উঠে গিয়েছে। তবে সূ তাজ়িকিস্তান আকারে-ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছে যে, মস্কোর হামলার সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। সরাসরি পুতিনেই ফোন করে তাজ়িক প্রেসিডেন্ট এমোমালি রহমান বলেন, ‘ভয়াবহ এই জঙ্গি হামলার জন্য কোনও হামলাই যথেষ্ট নয়। নৃশংস এই জঙ্গিদের আসলে কোনও দেশ হয় না।’