'অজ্ঞাত' কারণে মলদ্বারে কাঁচের বোতল, যুবকের প্রাণ বাঁচাল মেদিনীপুর মেডিক্যাল
এই সময় | ২৬ মার্চ ২০২৪
যুবকের মলদ্বারে ঢুকে গিয়েছিল কাঁচের বোতল। চরম পেটে ব্যথা অনুভব করছিলেন ওই যুবক। সঙ্গে মলত্যাগের সমস্যা হচ্ছিল। বাধ্য হয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের শরণাপন্ন হন সেই যুবক। অবশেষে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের সহায়তায় প্রাণে বাঁচলেন সেই যুবক।স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ১৯ মার্চ ৩০ বছর বয়সী এক যুবক হাজির হন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তিনি একটি এক্সরে রিপোর্ট নিয়ে আসেন। সেখানে দেখা যায়, তার মলদ্বারের ভেতরে বোতলের আকৃতির ন্যায় কিছু একটা আটকে রয়েছে। নিশ্চিত হওয়ার জন্য হাসপাতালে ফের এক্স-রে করার ব্যবস্থা করা হয় ওই যুবকের।
এক্সরে করার পর দেখা যায় ওই বোতলাকৃতি বস্তুটি আরও কিছুটা উপরের দিকে উঠে গিয়েছে। হাসপাতালের এক চিকিৎসক এক সংবাদ মাধ্যমে জানান, যখন আমরা তাকে বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসা করেছি ঠিক কী ঘটেছে। তখন রোগী আমাদের বলেছিলেন যে তিনি ঘটনাক্রমে তার ভিতরে একটি কাচের বোতল ঢুকিয়েছিলেন এবং জোর দিয়েছিলেন যে অন্য কেউ তাকে এটি করতে বাধ্য বা কারসাজি করেনি।
এরপর ওই যুবকের শরীরে অপারেশন না করে ওই বস্তুটি বের করার একাধিক প্রচেষ্টা করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু সেগুলি ব্যর্থ হওয়ায় ল্যাপারোটমি করার চেষ্টা করে। চিকিৎসকদের চিন্তা ছিল, যদি সেই বস্তুটি বের করার সময় সেটা শরীরের ভেতরেই ফেটে যায় না ভেঙে যায় তাহলে আরও বড় বিপদ হতে পারে। শেষমেষ মলদ্বার কেটে অনেকটা জরায়ু দিয়ে শিশু প্রসব করানোর মতো সেই বস্তুটিকে বের করে দেওয়া হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এরকম পদ্ধতিতে ওই বস্তুটিকে বের করার ক্ষেত্রে সফল হন চিকিৎসকরা। ওই রোগীর কোনও গুরুতর অভ্যন্তরীণ আঘাত হয়নি। ডঃ সুমিতাভা পাচাল, ডঃ রাফি মোয়াজ্জাম, ডঃ সৌরভ কাঞ্জি এবং ডঃ আফতাব আলমের সমন্বয়ে গঠিত সার্জিক্যাল টিম এই সফল অস্ত্রোপচার করেন। রোগীর মলদ্বার সম্পূর্ণ অক্ষত ও নিরাপদ রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। সরকারি হাসপাতালে এহেন ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসায় সফল হয়ে খুশি চিকিৎসকরাও। দু-একদিনের মধ্যেই ওই রোগীকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হাসপাতালের তরফে। নিজের কার্যত প্রাণ ফিরে পেয়ে খুশি ওই রোগী। ওই যুবক একা থাকতেন বলে খবর। তাঁর প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।