• Lok Sabha Election 2024: মোদীর 'টার্গেট' পূরণে 'মেপে পা', দাবার কোন চালে ৩৭০ আসন নিশ্চিতের পথে বিজেপি?
    এই সময় | ২৬ মার্চ ২০২৪
  • বিজেপিকে ৩৭০ আসন জয়ের টার্গেট বেঁধে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্যদিকে, NDA-এর টার্গেট ৪০০ আসন জয়। টার্গেট পূরণে আগে থেকেই নিখুঁত গেমপ্ল্যান সাজিয়ে ময়দানে ঝাঁপিয়েছে গেরুয়া শিবির। একটা 'চান্স' -ও মিস হোক চাইছে না মোদী-শাহের দল। ১৯ এপ্রিল থেকে দেশে শুরু হচ্ছে লোকসভা নির্বাচন।লক্ষ্য পূরণে কী কী কৌশল?

    ১. টার্গেট 'অ্যাচিভে' যে এবার একেবারে কোমর বেঁধে প্রস্তুত বিজেপি তা প্রার্থী তালিকা প্রকাশের কৌশল দেখলেই স্পষ্ট। নির্বাচন শুরুর এক মাস বাকি থাকতেই ৯০ শতাংশ আসনে প্রার্থী ঘোষণা হয়ে গিয়েছে বিজেপির তরফে। এবার নির্বাচনে বিজেপি প্রায় ৪৪০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। ইতিমধ্যেই ৯০ শতাংশ আসন তথা ৪০২ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির।

    ২. উল্লেখ্যযোগ্য ভাবে বিজেপি এবার পুনরায় টিকিট দেয়নি ১০০ সাংসদকে। টিকিট দেওয়ার ব্যাপারেও কৌশলী দল। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, চারশো আসনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণেই নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহেরা বেফাঁস মন্তব্য করা নেতা, সাংসদদের প্রার্থী না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ, নির্বাচনে এই প্রার্থীরা দলের বাকিদের বিড়ম্বনার কারণ হন। প্রত্যেকের 'পারফরম্যান্স'বিচার করেই দেওয়া হয়েছে টিকিট।

    ৩. একমাস আগেই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়ে বিজেপি এবার প্রচার পর্বে নূন্যতম দেরি করতে চায় না। প্রার্থীরা যাতে প্রচার পর্বে পর্যাপ্ত সময় পান সেই পথই সুগম করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। কারণ ভোটের আগে প্রচারই প্রার্থীদের জন্য 'প্রিপারেশন' টাইম। ২০১৯ সালে বিজেপি ৩০৩টি আসন জেতে। এবার ৬৭টি আসন বাড়িয়ে ৩৭০ আসন জয়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ আগেরবারের লোকসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে এবার ৭০ শতাংশ আসন বাড়ানোর টার্গেট দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, ২০১৪ সালে বিজেপির পায় ২৮২ আসন। এবার সেই তুলনায় ৮৩ শতাংশ আসন বৃদ্ধির টার্গেট।

    ৪. এবার বিজেপির প্রার্থী তালিকায় বাদ পড়েছেন একাধিক হেভিওয়েট। এবার বাদ পড়েছে প্রায় ১০০ জন সাংসদ। তাঁদের প্রত্যেকের 'প্রোফাইল' বিতর্কিত। কোনও না কোনও ভাবে বিতর্কে জড়িয়েছেন তাঁরা। কেউ সংসদে সংসদ কক্ষে বিতর্কিত মন্তব্য়ে করেছেন দলকে বিপাকে ফেলেছেন কেউ আবার দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেই অস্বস্তি বাড়িয়েছেন। আর এই ধরনের নেতাদের এবার প্রার্থী তালিকা থেকে ধরে ধরে বাদ দিয়েছে গেরুয়া শিবির। টিকিট পাননি গাজিয়াবাদের জেনারেল ভি কে সিং, বক্সারের অশ্বিনী চৌবে এবং নয়াদিল্লির মীনাক্ষী লেখির মতো হেভিওয়েটরা। বাদ পড়েছেন বিজেপি সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুর, রমেশ বিধুরি এবং প্রবেশ ভার্মার মতো বিতর্কিত নেতারাও।

    ৫. ভোটের আগে কোনও বিতর্ক চায় না কেন্দ্রের শাসক দল। তাই প্রতিটা পদক্ষেপ করা হয়েছে ভেবেচিন্তে। এবার প্রতিটি আসনে পদ্ম ফোটাতে মরিয়া বিজেপি। সব মিলিয়ে নতুন করে শক্তিশালী হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছে এনডিএ জোট। এক দিকে যেমন শরিকদের পাশে নিয়ে চারশো আসন ছুঁতে মরিয়া, তেমনই আঞ্চলিক দলগুলিও বুঝতে পারছে বিজেপি ফের ক্ষমতায় আসছে। তাই এনডিএ জোটের শরিক হতে এগিয়ে আসছে তারাও। আর এই বিষয়টিকেই হাতিয়ার করেছে বিজেপি। লোকসভা ভোটের আগে এনডিএ-তে ফিরতে প্রথম হাত বাড়ায় নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ। বিহার বিজেপির আপত্তি সত্ত্বেও নীতীশকে ফের এনডিএ-তে শামিল করেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। এরপর ধীরে ধীরে শরিকদের কাছে টানার কাজটি গোপনে করে গিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। রাজ্য ধরে ধরে কাদের সঙ্গে জোট হলে দলীয় প্রার্থীদের জেতার সম্ভাবনা বাড়বে, সেই অঙ্ক কষে এগিয়েছেন তাঁরা।

    ৬. পুরনো সম্পর্ক মেরামত করে ফের শক্তি বৃদ্ধির ছক তেলেগু দেশম সুপ্রিমো চন্দ্রবাবু নায়ডু। ছ'বছর পর ফের নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের হাত ধরতে উদ্যোগী হয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নায়ডুর দল তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) এবং তেলুগু অভিনেতা-রাজনীতিক পবন কল্যাণের জনসেনা পার্টির সঙ্গে জোট চূড়ান্ত হয়েছে বিজেপির। তবে ওড়িশায় বড় দল কে হবে, সেই শরিকি জটিলতায় থমকে রয়েছে বিজেডি-বিজেপি জোট। বিহারে এই যাত্রায় নীতীশ কুমারের সঙ্গে আসনের দর কষাকষিতে বেশি আসন ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে বিজেপি। একই সমীকরণ মেনে ওড়িশায় বড় দাদার মর্যাদা চেয়েছিল বিজেপি। যা প্রত্যাখান করে দিয়েছে নবীন পট্টনায়েকের দল বিজেডি। অন্যদিকে, এখনও পর্যন্ত পঞ্জাবের কোনও আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিজেপি। তবে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে ফের সেই অকালি দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে বিজেপি।
  • Link to this news (এই সময়)