'শুধু প্রতিশ্রুতিই মিলেছে, সেতু মিলল কই'' আজও খরস্রোতা নদীর উপর বাঁশের সাঁকোই...
২৪ ঘন্টা | ২৬ মার্চ ২০২৪
অরূপ বসাক: চেল নদী কি শুধুই নির্বাচনী ইস্যু হয়ে থেকে যাবে? কোনও দিনও কি তা ক্রান্তি ও মালব্লকের কয়েক লক্ষ মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি পূরণের সাক্ষী হবে না? প্রশ্ন তুলেছে দুই ব্লকের বাসিন্দারা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভোট যায় ভোট আসে, সব রাজনৈতিক দল মাল ব্লকের চেল নদীর উপর সেতু তৈরি নিয়ে রাজনীতিই করে গেল! কিন্তু আজ চেল নদীর উপর সেতু তৈরি হল না!
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, বাম জমানাতেও বামেরা এই সেতু নিয়ে রাজনীতি করে তার ফায়দা নিয়েছে। বর্তমান শাসকদলও গত পঞ্চায়েত ও বিধানসভা নির্বাচনে চেল নদীকেই ইস্যু করেছিল। শুধুমাত্র চেল নদীর উপর মাপজোক করে দায় সেরেছে প্রশাসন। কিন্তু আজও হল না চেল নদীর উপর সেই বহু প্রত্যাশিত সেতু। এই চেল সেতুকে সমস্ত রাজনৈতিক দলই তাদের নির্বাচনি ইস্যু করেই দায় সেরেছে। বছরের পর বছর এমনটাই ঘটেছে। স্বাভাবিক ভাবেই লক্ষাধিক মানুষের দাবি পূরণ না হওয়ায় এলাকায় এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সকলের প্রশ্ন, আদৌও কি আমরা চেল নদীর উপর সেতু কোনও দিন পাব?রাজাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা মনোজ দাস বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় এটাই ইস্যু হয় সব রাজনৈতিক দলের। চেল নদীকে ইস্যু করে নির্বাচন পেরিয়ে গেলে সকলেই এই ইস্যু ধামা চাপা দিয়ে দেয়। রাজাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা তথা ভারত সরকারের পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত করিমুল হক বলেন, সত্যিই! চেল নদী এখনও শুধুমাত্র নির্বাচনী ইস্যু হয়ে থেকে গিয়েছে। আমরা জানি না আদৌও চেল সেতু কোনও দিন হবে কিনা? ক্রান্তি পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি তথা প্রার্থী পঞ্চানন রায় বলেন, ওই নদীর উপর সেতু করতে গেলে বিরাট অঙ্কের টাকা প্রয়োজন। রাজ্য সরকার বিষয়টি আন্তরিক ভাবে দেখছে। আমাদের সরকারই এই সেতু তৈরি করবে।প্রসঙ্গত, মাল ও ক্রান্তি ব্লকের বুক চিরে গিয়েছে এই চেল নদী। চেল নদীর ওপারে রয়েছে ক্রান্তি ব্লকের ছটি গ্রাম, সেখানে কয়েক লক্ষ মানুষের বাস। সেই এলাকায় রয়েছে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, এসডিও-সহ নানা প্রশাসনিক দফতর। সেখানে নিত্যপ্রয়োজনে সকলকে মালবাজারে যেতে হয়। শীতের মরশুমে কোনও সমস্যা হয় না, কারণ, তখন নদীতে জল থাকে না। বর্ষাকালে পাহাড়ি খরস্রোতা এই নদী ভয়াল রূপ ধারণ করে। ফলে তখন যাতায়াতের একমাত্র ভরসা চেল নদীর উপর বাঁশের সাঁকো। তবে এই সাঁকোর উপর শুধুমাত্র বাইকই পার হয়। যদি কোনও জরুরি পরিষেবার গাড়ি নিয়ে যেতে হয়, তাহলে হয় তা কাঠামবাড়ি জঙ্গলের মধ্য দিয়ে ওদলাবাড়ি হয়ে নিয়ে যেতে হয়, নয়তো লাটাগুড়ি জঙ্গলের মধ্য দিয়ে চালসা হয়ে তাদের যাতায়াত করতে হয়।