• গঙ্গা ভাঙনের স্থায়ী সমাধানের দাবি, মালদায় রাজনৈতিক দলগুলিকে খোলা চিঠি
    এই সময় | ২৬ মার্চ ২০২৪
  • দীর্ঘদিন ধরে গঙ্গা ভাঙনের জেরে সর্বশান্ত হয়েছেন মালদার বহু মানুষ। তলিয়ে গিয়েছে ঘরবাড়ি, জমি জায়গা। রাজ্য সরকার কিংবা কেন্দ্রীয় সরকার একে অপরের দোষারোপ করতেই ব্যস্ত। কিন্তু স্থায়ী ও বিজ্ঞানসম্মতভাবে গঙ্গা ভাঙন রোধের কাজ এখনও হয়নি। মালদা জেলার মূলত পাঁচটি ব্লক, গঙ্গা ভাঙনে প্রভাবিত। বর্ষার মরশুমে কেবলমাত্র অস্থায়ীভাবে গঙ্গার ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতে এমন কিছু কাজের কাজ হয় না বলেই মনে মত স্থানীয়দের একাংশের। গঙ্গা ভাঙনের রুখতে কোনও সরকারই এখনও পর্যন্ত স্থায়ীভাবে পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে এবার গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ অ্যাকশন নাগরিক কমিটি সমস্ত রাজনৈতিক দলকে খোলা চিঠি দিতে চলেছে। সংগঠন চাইছে, নির্বাচনের যে দলের প্রার্থীই জিতুন না কেন, সেই প্রার্থী যেন সংসদে গঙ্গা ভাঙনের বিষয়টি তুলে ধরেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেনগঙ্গা ভাঙ্গন প্রতিরোধ অ্যাকশন নাগরিক কমিটির সদস্য মুসারেফুল আনোয়ার বলেন, '১৯৭১ সালের পর থেকে মালদা জেলায় গঙ্গা ভাঙন হয়েই চলেছে। মালদা জেলায় ইতিমধ্যে ৭৬ খানা মৌজা গঙ্গা নদীতে বিলীন হয়ে গিয়েছে। এই ৭৬ খানা মৌজায় বসবাস করতেন প্রায় সাত লাখ মানুষ। বর্তমানে তাঁরা বাড়িঘর জমি জায়গা হারিয়ে নিঃস্ব। কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবার নতুন করে ভাঙন শুরু হয়। নতুন ভাঙনে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার মানুষ নতুন করে বাড়িঘর বসতভিটা হারিয়ে ফেলেছেন। আমরা চাই কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার যৌথ উদ্যোগে এই গঙ্গা ভাঙন সমস্যাকে সমাধান করুক।'

    মুসারেফুলের বলেন, 'অনেকেই এখনও খোলা আকাশের নিচে ত্রিপল টানিয়ে বসবাস করছেন। তাঁদের পুনর্বাসন এখনও হয়নি। স্থায়ীভাবে ও বিজ্ঞানসম্মতভাবে গঙ্গা ভাঙনের করা সমাধান হোক। নতুন করে ২৬ খানা মৌজায় নতুন চর গড়ে উঠেছে। আমরা চাই সামনে যে লোকসভা নির্বাচন, তাতে যাঁরা দাঁড়িয়েছেন তাঁদেরকে আমাদের দাবি নিয়ে খোলা চিঠি দেব।'

    এ বিষয়ে দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী বলেন,' আমি তাঁদের (ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের) সঙ্গে আছি। আমি তাঁদের সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করব। আমার লোকসভা কেন্দ্রে মানিকচক, সামশেরগঞ্জ , সমস্ত এলাকায় গঙ্গা ভাঙন হচ্ছে। রাজ্য সরকার বা এখানকার জেলা প্রশাসন তাঁদের কিছু সহযোগিতা করে, কিন্তু তাঁদেরকে এখনও অবধি কোনওরকম ভাবে স্থায়ী পুনর্বাসন বা সহযোগিতা করেনি। গঙ্গা ভাঙন এলাকার মানুষদের যাতে স্থায়ী সমাধান হয় সেটাই আমার মূল লক্ষ্য।'

    রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর ও সেছ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, গঙ্গা ভাঙন এলাকায় এখনও পর্যন্ত যা কাজ করেছে তা আমাদের সরকারই করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার কোনওরকমভাবে সহযোগিতা করেনি। একটা টাকাও দেয়নি। রাজ্য সরকারের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পূর্ণ সহযোগিতা না হলে এই গঙ্গা ভাঙ্গনের স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব নয়। গঙ্গা ভাঙন নিয়ে সমস্যার কথা স্বীকার কের নিয়েছেন দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী ইসা খান চৌধুরীও।
  • Link to this news (এই সময়)