• ১৩ বছর আগের 'মারকুটে' ছাত্রী আজ বড় স্কুলের দিদিমণি, গর্বিত শিক্ষিকার আবেগঘন পোস্ট ভাইরাল
    এই সময় | ২৭ মার্চ ২০২৪
  • ছাত্র জীবনে উন্নতি করলে, সমাজের উচ্চ আসনে বসলে বাবা-মায়ের পরেই যিনি সবচেয়ে আনন্দিত হন তিনি আর কেউ নন, শিক্ষক। নিজের হাতে গড়া ছাত্র সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে একথা জানলে শিক্ষকের মন গর্বে বুক ফুলে ওঠে। মনের মধ্যে তখন ভিড় করে আসে হাজারও স্মৃতির ভিড়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষও পাল্টায়। ছোট্ট বেলায় যে ছেলেটা কিংবা মেয়েটা ছিল চরম দুরন্ত বড় হয়ে সেই হয়তো এক্কেবারে শান্ত-ধীরস্থির। ছোট্টো বেলায় যে পডুয়াটা ছিল ক্লাসের মধ্যে সবচেয়ে অমনোযোগী, সেই হয়তো আজ বড় কোনও চাকরি করে। কর্মক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত। স্কুল জীবন মানেই হাজারও স্মৃতির ভিড়। চেনা ক্লাসরুম-চক ডাস্টার, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বকুনি আরও কত কী! স্কুল পেরিয়ে চাকরি জীবনের প্রবেশ করার পরই যেন স্মৃতির দরজায় বারবার কড়া নাড়ে সে দিনগুলো।স্কুল পাশের পর শিক্ষক-ছাত্রের এক দেখায় মনে পড়ে যায় বাল্যকালের কত কথা-দুষ্টুমি। যে ছেলে বা মেয়েটাই ছিল ক্লাসের সবচেয়ে দষ্টু ছাত্র বা ছাত্রী হয়তো বা আজ তারাই জীবনে প্রতিষ্ঠিত। দু'মিনিটের ছাত্র-গুরুর সাক্ষাতে কত না স্মৃতি আলোর মতো ছুটে ছুটে চলে যায়। সেদিনের ক্লাসের সবচেয়ে দুরন্ত-অবাধ্য বাচ্চাটাই যদি জীবনের পথে সুপ্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে তো শিক্ষকের আনন্দে অন্ত নেই। পড়ুয়ার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার খবরেরে চেয়ে সুখের আর কিছু নেই শিক্ষক-শিক্ষিকার কাছে। তাঁর জীবনের পড়ুয়াদের উন্নতি পরম প্রাপ্তি। হাজারও সুখের সমান। সোশ্যাল মিডিয়ায় সৌজন্যে কত শত পোস্ট রোজ ভাইরাল হয়। এক শিক্ষিকার তেমনই এক পোস্ট চোখ ভিজিয়েছে নেটিজেনদের।

    সে বছর ১৩ আগেকার কথা। ক্লাসের সবেচেয়ে দুরন্ত এক মেয়েকে নিয়ে রীতিমতো নাকানিচোবানি খেতে হত প্রতিদিন। হাজার বকুনিতেও লাভ হত কিচ্ছুটি। গার্জেন কল, কানমোলা, শাস্তি-এই ছিল নিত্য রুটিন। তাতে অবশ্য লাভ খুব একটা কিছু হত না। গোটা স্কুলে 'মারকুটে' ছাত্রী হিসেবেই পরিচিত ছিল সে। কোনও মেরে সহপাঠীদের দাঁত ভেঙে দিয়েছে, কোনও দিন আবার ক্লাসের মধ্যে চালিয়ে গিয়েছে বদমায়েশি। ক্লাস চলাকালীন দুষ্টুমি-কথা বলা তো বটেই, অভিযোগের পাহাড় জমা পড়ত তার নামে। তাঁকে নিয়ে চিন্তার অন্ত ছিল না শিক্ষিকাদের। তারপর পেরিয়ে গিয়েছে অনেকগুলো বছর। আজ সেই ছাত্রী জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত। না, আজ আর সে সেদিনের দুষ্টু বাচ্চা মেয়ে নয়, আজ বরং এক ক্লাস দুষ্টু পড়ুয়াদের এক হাতেই সামলায় আলিশা। সেদিনের ছোট্ট আলিশা আজ পরিপক্ক। মুম্বইয়ের এক নামী স্কুলে দিদিমণি তিনি। বিশেষ ভাবে সক্ষম পড়ুয়াদের ক্লাস নেন তিনি। আলিশার জীবনের এমন উন্নতি দেখে আবেগে আপ্লুত তাঁর ছোটবেলার স্কুল শিক্ষিকা। আবেগের কথা ভাগ করে নিয়েছেন সামাজিক মাধ্যমের বন্ধুদের সঙ্গে।

    দেখুন শিক্ষিকার সেই পোস্ট

    সোশ্যাল মিডিয়ায় পাশাপাশি দু'টি ছবি শেয়ার করে আবেগঘন পোস্ট লিখেছেন আলিশার ছোটবেলার শিক্ষিকা। লিখেছেন, ১৩ বছর আগে তাঁর ছাত্রী আলিশা আজ জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত। যে মেয়ে স্কুলের সবচেয়ে দুষ্টু বাচ্চা বলেই পরিচিত ছিল, যে মেয়ে একবার কয়েকজন সহপাঠীর দাঁত ভেঙেও দিয়েছিল, যাকে নিয়ে চিন্তার অন্ত থাকত না শিক্ষিকাদের আজ সেই আলিশাই এক হাতে পড়ুয়াদের শিক্ষাদান দান করেন। ক্লাস সামলান। করোনা কালে পড়াশোনা শেষ করে মুম্বইয়ের একটি নামী স্কুলের শিক্ষিকার চাকরি পেয়েছেন আলিশা। বর্তমানে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের পাঠদানে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন আলিশা। আলিশার শিক্ষিকার পোস্টে নিজেদের ছোটবেলার স্কুল জীবনের স্মৃতিতে ডুব দিয়েছেন আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন নেটিজেনরা।
  • Link to this news (এই সময়)