এই সময়: নাথুরাম গডসের নিন্দা না-করে কেন তিনি মহাত্মা গান্ধীকে খুন করেছিলেন, তা বোঝার চেষ্টা করতে চান বলে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় একটি সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেছিলেন। এর জেরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন। এমনকী, অভিজিতের প্রার্থিপদ বিজেপির প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত বলেও বিবৃতি দিয়েছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ।কংগ্রেসের তোপের মুখে পড়ে এই নিয়ে বিতর্ক চেয়েছে বিজেপি। কিন্তু সরাসরি নাথুরাম গডসের পক্ষে দাঁড়াননি গেরুয়া শিবিরের নেতারাও। বাংলায় বিজেপির দ্বিতীয় দফার প্রার্থী তালিকায় তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে অভিজিতকে টিকিট দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতির পদে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগদান করার কিছু দিন পরে অভিজিৎ একটি সাক্ষাৎকারে নাথুরাম গডসে প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছিলেন, ‘আইনের জগতের মানুষ হিসেবে গল্পের অন্যদিকও বোঝার চেষ্টা করা উচিত। আমাকে ওঁর (গডসে) রচনা পড়ে বুঝতে হবে কেন তিনি মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করেছিলেন। যতক্ষণ না আমি তা করতে পারছি ততক্ষণ মহাত্মা গান্ধী এবং গডসের মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’
গান্ধীজিকে হত্যার জন্য গডসের মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল। আরএসএস-কে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। অভিজিৎ যে তমলুকের প্রার্থী, সারা দেশের মতো সেই তৎকালীন অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার মানুষও এই হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদী হয়েছিলেন। কারণ, গান্ধীর ডাকে ১৯৪২ সালের ভারত-ছাড়ো আন্দোলনে মেদিনীপুর দেশের প্রথম সারিতে ছিল। ব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়াই করে তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার তৈরি হয়েছিল।
১৯৫২ সালে দেশের প্রথম লোকসভা নির্বাচনে তমলুক আসনে জয়ী হয়েছিলেন তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের নায়ক সতীশচন্দ্র সামন্ত। ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত সাংসদ ছিলেন তিনি। পরে তমলুকের সাংসদ হন তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের অপর নায়ক সুশীল ধাড়া। সেই তমলুকের প্রার্থী হয়ে অভিজিৎ গান্ধী ও গডসের মধ্যে কাকে বেছে নেবেন, তা স্পষ্ট না করায় জয়রাম রমেশ এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদ পাওয়া প্রাক্তন বিচারপতি গান্ধী ও গডসের মধ্যে একজনকে বেছে নিতে পারছেন না, এটা কোনও অবস্থায় মেনে নেওয়া যায় না। যাঁরা মহাত্মার লিগ্যাসিকে আত্মসাৎ করতে চান তাঁদের অবিলম্বে ওঁর (অভিজিৎ) প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করা উচিত।’
কংগ্রেসের তোপের মুখে পড়ে বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘দুটি কমিশন গঠন করেও প্রমাণ করা যায়নি যে গান্ধীজির হত্যার সঙ্গে হিন্দু মহাসভা অথবা আরএসএস-র কোনও সম্পর্ক রয়েছে। জয়রাম রমেশকে আহ্বান জানাচ্ছি প্রকাশ্যে আমাদের সঙ্গে বিতর্কে বসুন।’