• Gaza Israel War : যুদ্ধবিরতি! ইউএন প্রথমবার সায় দিলেও বেঞ্জামিন অনড়ই
    এই সময় | ২৭ মার্চ ২০২৪
  • এই সময়: অবশেষে বেনজির ডেভেলপমেন্ট রাষ্ট্রপুঞ্জে। গাজ়ায় যুদ্ধবিরতি চেয়ে গত পাঁচ মাসে একাধিক বার খসড়া প্রস্তাব জমা পড়েছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে। কিন্তু মূলত আমেরিকা ভেটো দেওয়ার কারণেই তার একটিও বাস্তবায়িত হয়নি। এবার অবশ্য সেই আমেরিকার কৌশলী পদক্ষেপেই সোমবার নিরাপত্তা পরিষদে পাশ হয়ে গেল গাজ়ায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব। ভোটই দিল না জো বাইডেনের দেশ।আবার যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের সরাসরি বিরোধিতায় ভেটোও দিল না আমেরিকা। গত বছরের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর বেশ কয়েকটি ব্যর্থ প্রয়াসের পরে নিরাপত্তা পরিষদ এই প্রথম যুদ্ধবিরতির ডাক দিল। কিন্তু তাতেই বা কী! প্রথমে অপ্রত্যাশিত আমেরিকান টুইস্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলেই যুদ্ধের ঝাঁজ বাড়াল ইজ়রায়েল। প্যালেস্তাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পাশ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজ়ায় ভয়াবহ হামলা চালিয়ে অন্তত ৮১ জনকে মেরেছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। আহত অন্তত ৯৩!

    যথারীতি এ বারও হামাসের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মানতে নারাজ বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশ। হামাস চাইছে, গাজ়া থেকে পুরোপুরি সরে যাক ইজ়রায়েলি বাহিনী। ইজ়রায়েলের পাল্টা দাবি, আগে সকল পণবন্দিকে মুক্তি দিক প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। যুদ্ধবিরতির কথা পরে ভাবা যাবে। একই ভাবে আমেরিকা কেন এ বারে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ভেটো দিল না, তা নিয়েও ঘরে-বাইরে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে তেল আভিভ।

    তাদের কথায়, 'রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে আমেরিকা কোনও এক অজ্ঞাত কারণে আচমকাই নিজেদের নীতি পরিত্যাগ করেছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।' খোদ নেতানিয়াহুও উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, 'কয়েকদিন আগে রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি প্রস্তাবকে সমর্থন করেছিল আমেরিকা। সেখানে যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি হামাসের হাতে বন্দি পণবন্দিদের মুক্তির প্রস্তাব ছিল। সেই প্রস্তাবে রাশিয়া-চিন ভেটো দিয়েছিল। সেই প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের লেটেস্ট প্রস্তাবে আমেরিকার ভেটো না দেওয়াটা কোনও ভাবেই ইজ়রায়েলিদের মুক্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এই প্রস্তাবে তো পণবন্দি নিয়ে কোনও কথাই নেই!'

    হামাস যদিও এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, তারা অবিলম্বে বন্দি-বিনিময় প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য তৈরি। আমেরিকার যুক্তি, তারা যুদ্ধবিরতিকে সমর্থন করেছে কিন্তু প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়নি। কারণ এতে হামাসের নিন্দা করা হয়নি। নিরাপত্তা পরিষদের মোট ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়।

    তবু চিঁড়ে ফিজছে কই? নেতানিয়াহুর অফিস থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে-'এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিশ্চিত ভাবেই পণবন্দিদের মুক্তির চেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এই প্রস্তাবে এক দিক দিয়ে হামাসকেও অ্যাডভান্টেজ দেওয়া হয়েছে। ওদের যেন বুঝিয়ে দেওয়া হলো, বন্দিদের মুক্তি না দিয়েও ওরা দিব্যি যুদ্ধবিরতি আদায়ের জন্য ইজ়রায়েলের উপর আন্তর্জাতিক চাপ ব্যবহার করতে পারে।'

    ঠিক ছিল, কয়েক দিনের মধ্যেই ওয়াশিংটনে মার্কিন কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে ইজ়রায়েলি প্রতিনিধি দল। আপাতত সেই বৈঠক বাতিল বলে জানিয়েছে তেল আভিভ। সাফ কথা ইজ়রায়েলের, 'গাজ়ায় হামাস যে হেতু এখনও বহু পণবন্দিকে আটকে রেখেছে। তাই এখনই যুদ্ধ বন্ধ করার কোনও প্রশ্নই উঠছে না।' রাষ্ট্রপুঞ্জে প্যালেস্তাইনি প্রতিনিধি রিয়াধ মনসুর যথারীতি এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে, তাঁর কথায়, 'এটা আরও অনেক আগেই করা দরকার ছিল।'
  • Link to this news (এই সময়)