Nandankanan Zoological Park : বিতর্ক ভুলে সিংহশাবকদের সেই নামই রাখল নন্দনকানন
এই সময় | ২৭ মার্চ ২০২৪
শিলাদিত্য সাহাযে নামকরণ বিতর্কের জেরে সাসপেন্ড হয়েছিলেন ত্রিপুরার শীর্ষ বনাধিকারিক, এবার সেই নামই নতুন সিংহশাবকদের জন্য বেছে নিল ওডিশা সরকার। অমর, আকবর, অ্যান্টনি!
মাসখানেক আগেও বিতর্ক ছিল তুঙ্গে। ত্রিপুরার সিপাহিজলা জুলজিক্যাল পার্ক থেকে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারিতে আনা সিংহ আকবর এবং সিংহী সীতাকে একই ঘেরাটোপে রাখায় ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগছে, এমন দাবি তুলে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তখনই জানা গিয়েছিল, সিপাহিজলায় ২০১৬ সালে আরও দুই ভাইয়ের সঙ্গে জন্মেছিল আকবর।
বাকিদের নাম দেওয়া হয়েছিল অমর ও অ্যান্টনি। আর ২০১৮ সালে ওখানেই জন্ম সীতার। কলকাতা হাইকোর্ট মৌখিক ভাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সিংহ দু’টির নাম পাল্টানোর পরামর্শ দিলেও এই নাম-বিতর্কের মধ্যেই ত্রিপুরার মুখ্য বনপাল প্রবীণ আগরওয়ালকে সাসপেনশনের নোটিস ধরিয়েছিল সেখানকার ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার।
সেই ঘটনার একমাস পরেই, সোমবার দোলযাত্রার দিনে নন্দনকানন জুলজিক্যাল পার্কে সদ্য জন্মানো তিনটি সিংহশাবকের নামকরণ করা হলো অমর আকবর অ্যান্টনি। নবীন পট্টনায়কের সরকারের পক্ষ থেকে ওডিশার প্রধান মুখ্য বনপাল সুশান্ত নন্দা নিজেই টুইট করে সেই নাম প্রকাশ করেছেন। যদিও এতেও আপত্তি জানিয়েছে নেটিজেনদের একাংশ। রি-টুইট করে তাঁদের প্রশ্ন, কেন ওদের নাম ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বর রাখা হবে না! নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওডিশার এক শীর্ষ বনাধিকারিক যদিও জানাচ্ছেন, অমর আকবর অ্যান্টনি নামকরণ ভারতীয় সভ্যতা-সংস্কৃতিরই অঙ্গ। তা নিয়ে কোনও আপত্তিকে গ্রাহ্য করতে চান না তাঁরা।
দিন দু’য়েক আগেই তিনটি সিংহশাবকের জন্ম দেয় নন্দনকাননের এশিয়াটিক সিংহী রেওয়া। তবে জন্মের পরে সন্তানদের কাছে টেনে নেয়নি সে। ফলে শাবকদের সুস্থ রাখতে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাদের তিন জনকে সরানো হয় নন্দনকাননের পশু হাসপাতালের নিওনেটাল আইসিইউতে। একটা গোটা দিন ইনকিউবেটরে রাখার পর তাদের বের করে একটি ঘরে ছাড়া হয়েছে। জঙ্গলের সিংহী অনেক সময়েই সন্তানদের গ্রহণ করে না। তার অন্যতম কারণ সন্তানদের অত্যন্ত দুর্বল স্বাস্থ্য। তবে চিড়িয়াখানার সিংহীদের ক্ষেত্রে এমনটা বেশি দেখা যায় না।
কেন সন্তানদের নিল না রেওয়া?
ওডিশার প্রধান মুখ্য বনপাল সুশান্ত নন্দা বলছেন, ‘গত বছর জানুয়ারিতে রেওয়া প্রথমবার মা হয়। তখন চারটি শাবকের মধ্যে দু’টি প্রথমেই মারা গিয়েছিল। বাকি দু’জনকেও কাছে টানেনি রেওয়া। এবার সবাই বেঁচে থাকলেও রেওয়া তাদের প্রতি ‘অ্যাফেকশন’ দেখায়নি। তাই শাবকদের ইনকিউবেটরে একটা দিন রেখে তার পর ছাড়া হয়েছে। কেন মা সিংহী শাবকদের নিল না, নির্দিষ্ট কারণ বলা সম্ভব নয়।’ তবে এই ঘটনায় চিন্তিত নয় নন্দনকানন। সেখানকার কর্মীরা বরং আপাতত উচ্ছ্বসিত নতুন ট্রায়ো-কে নিয়ে। ফিডিং বটলে দুধ খেতে ব্যস্ত অমর, আকবর, অ্যান্টনিও!